মহারাজ তখন রয়েছেন হায়দ্রাবাদ মঠে। বিকেল বেলা। চিঠিপত্র পড়ছেন। একটি চিঠি পড়ে পূজারী ব্রহ্মচারীকে ডেকে পাঠালেন। সে কাছে এলে মহারাজ ধীর শান্ত স্বরে বললেন, " বেলুড় মঠের প্রেসিডেন্ট মহারাজ চিঠি লিখেছেন। কিছুদিন আগে একদল ভক্ত এখানে মন্দির দর্শনে আসেন। এখানকার পূজারী নাকি তাঁদের খুব বকাবকি করেছে এবং রূঢ় কথা শুনিয়েছে। সেই পূজারী কি তুমি??"
ব্রহ্মচারী সেদিনের কথা ভুলেই গিয়েছিল। সভয়ে মহারাজকে সেদিন কি ঘটেছিল তা সংক্ষেপে বর্ণনা করল। বলল," হ্যাঁ মহারাজ, সেদিন এ দোষ আমিই করেছিলাম। বিকেলে মন্দির খুলতেই তাঁরা এসেছিলেন। আর কোন ভক্ত ছিল না। খুব জোরে জোরে কথাবার্তা বলছিলেন। নাটমন্দির গম গম করছিল। আমি তাদের ওভাবে কথা বলতে বারণ করি। মন্দিরের গাম্ভীর্য ও শান্তভাব বজায় রাখতে অনুরোধ করি। তাঁরা আমার সঙ্গে তর্ক করতে শুরু করলেন। তখন আমি একটু জোরের সঙ্গেই কিছু বকা বকি করি। হয়ত রূঢ় কথাও বলে থাকব। আমার ভুল হয়েছিল মহারাজ।"
ব্রহ্মচারী কথা শেষ করলে পূজনীয় মহারাজ অনেক ফাইলের মধ্যে থেকে একটি ফাইল খুলে নিজের হাতে লেখা একটি কাগজ তার হাতে দিলেন। তাতে রয়েছে একটি কবিতা। মহারাজ কবিতাটি তাকে পড়তে বললেন। কবিতাটি হল:
Speak Gently
David Bates
Speak gently; it is better far
To rule by love than fear
Speak gently; let no harsh
Words mar
The good we might do here.
Speak gently to the little
child
It's love be sure to gain,
Teach it in accents soft
and mild
It may not long remain.
Speak gently to the aged
one,
Grieve not the careworn
hear;
The sands of life are
nearly run,
Let such in peace depart.
Speak gently, kindly
to the poor;
Let no harsh tone
be heard.
They have enough
they must endure,
Without an unkind
word.
Speak gently to the
erring; know
They must have
toiled in vain;
Perchance unkindness
made them so,
Oh, win them back
again.
কবিতাটি পড়া শেষ হলে মহারাজ তাকে শোনালেন ছেলেবেলায় তাঁর মা বন্ধুকে একটি কটু কথা বলায় তাঁকে কিরকম ভর্ৎসনা করেছিলেন এবং স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলেন যে, মা সরস্বতী আমাদের জিহ্বায় বাস করেন। তাই কখনোই কর্কশ কথা বলতে নেই। তাহলে তাকেই অবমাননা করা হয়। আর সেদিন থেকেই তিনি মায়ের কথাটি মন প্রাণ দিয়ে পালন করার চেষ্টা করে চলেছেন। সে ( ব্রহ্মচারী ) - ও যেন সেই চেষ্টাই করে।
সূত্র: স্বামী রঙ্গনাথা নন্দ স্মৃতি সংখ্যা
৭ ই মে,২০০৫
রঙ্গে রসে রসিকতায় পূর্ণ শ্রীরামকৃষ্ণ চাইতেন, আমরা যেন জীবনকে শুধু 'দিনযাপনের গ্লানি' ভেবে এক যান্রিকতায় আচ্ছন্ন না হই ৷ জীবনের প্রতিটি মুহুর্ত আমরা যেন উপভোগ করি ৷ ভগিনী দেবমাতা তাঁর এক বিখ্যাত গ্রন্থে লিখেছেন,"গম্ভীর বা রঙ্গরত — যে অবস্থাতেই থাকুন না কেন, আনন্দের একটি বাতাবরণ সতত শ্রীরামকৃষ্ণকে ঘিরে রাখত, সতত আনন্দ বিচ্চুরিত হতো তাঁর সত্তা থেকে ৷ তিনি প্রায়ই বলতেন, যে-ধর্মে মুখ গোমড়া করে রাখতে হয় সেই ধর্মে তাঁর কাজ নেই ৷"
বস্তুতঃ, তাঁর রসবোধ ছিল তাঁর জীবনবোধেরই অঙ্গ ৷ জীবনে দুঃখ, হতাশা, বিশ্বাসভঙ্গ, বিপর্যয় থাকবেই ৷ কিন্তু সেইজন্য জীবনের মাধুর্যকে ভুলে হতাশায় ডুবে যাব কেন ? জীবনের ইতিবাচক দিকের প্রতি মুখ ফিরিয়ে থাকব কেন ? এই 'অনবসাদ'-এর দর্শন শ্রীরামকৃষ্ণ আমাদের দিয়েছেন ৷এই দর্শনের মধ্যে নিহিত রয়েছে জীবনকে সুষ্ঠুভাবে এবং সুচারুভাবে উপভোগের কৌশল ৷
তাঁর জীবনের বেলাভূমিতে আছড়ে পড়েছে কত তরঙ্গ ৷ কোন তরঙ্গ তাঁকে অসম্মান করেছে ৷ কোন তরঙ্গ তাঁকে আঘাত করেছে ৷কোন কোন তরঙ্গ তাঁকে বিদ্রুপ করেছে ৷ তাঁকে মর্মান্তিক ব্যাধির আঘাতে রক্তাক্ত করেছে ৷ কিন্তু কখনো কোন তরঙ্গই তাঁর অন্তরের রসিক মানুষটিকে বিন্দুমাত্র বিচলিত করতে পারেনি ৷ সবসময় নিত্য আনন্দের শীর্ষে অবস্থান করে তিনি মানুষকে খবর দিয়েছিলেন পরমানন্দস্বরূপের ৷ তাঁর আশেপাশে যাঁরা এসেছেন সবাইকে তিনি হাসতে হাসতে ও হাসাতে হাসাতে বলেছেন — যদি বাঁচার মতো বাঁচতে চাও, উপেক্ষা কর জগতের দেওয়া অসম্মান, বিদ্রুপ, দুঃখ ও আঘাতকে ৷ আনন্দের সন্তান তোমরা ৷ আনন্দই তোমাদের জীবনের মূল সুর ও সঙ্গীত ৷ ডুবে যাও সেই আনন্দের রসে ৷ সেই রসের তরঙ্গ তোমাদের জীবনে খেলতে থাকুক নিরন্তর ৷
শ্রীরামকৃষ্ণ বলছেন : কুড়িয়ে নাও ! কুড়িয়ে নাও ! জীবনের সবচেয়ে বড় মণিরত্নকণা — হাসি ৷ দুহাতে মুঠো মুঠো কুড়িয়ে নাও — যদি বাঁচতে চাও ৷ কাশীপুরে ক্যান্সারের যন্রণায় তখন তিনি জর্জরিত ৷ গলা দিয়ে রক্ত ঝরছে ৷ কিন্তু তখনো তিনি হাসছেন ৷ ঐ অবস্থায় আশেপাশের মানুষজনদের দিকে তাকিয়ে দেখছেন — অধিকাংশই ধুঁকছে ৷ ধুঁকছে জীবন-যন্রণায় ৷ ভাবছেন, এরা কি বাঁচতে চায় ? নাকি বাঁচার নাম করে প্রতি মুহুর্তে মরণের দিকে ছুটে চলাই এদের নিয়তি ? সব-হারানো এই মানুষগুলির দিকে তাকিয়ে ইতিহাসের নীলকন্ঠ পুরুষটি সর্বাঙ্গে হাসির ফোয়ারা ছুটিয়ে বললেন : দুঃখ ? আঘাত ? ব্যাধি ? মৃত্যু ?— তা হলেই বা !
আমাদের জীবনকেও 'মধুময়' করবার জন্য আশ্রয় নিতে হবে ঐ রসিকোত্তমের কাছে ৷ তিনি বলতেন জীবনে দুঃখ, বিষাদ ও নৈরাশ্যের উপকরণের অভাব নেই ৷ তোমার নিজস্ব দুঃখ, বিষাদ ও নৈরাশ্যকে তার সঙ্গে যুক্ত করে সংসারকে আরও ভারাক্রান্ত করো না ৷ সে-অধিকারও তোমার নেই ৷ বরং সংসারের দুঃখ, বিষাদ ও নৈরাশ্যের আবহাওয়াকে তোমার রসবোধ ও সরসতার ঐশ্বর্যের দ্বারা যথাসাধ্য লাঘব করার চেষ্টা কর ৷ এতে তুমি যেমন আনন্দ পাবে, সংসারের পরিবেশও ভারহীন হবে ৷ শ্রীরামকৃষ্ণের নিজের জীবনের দৃষ্টান্ত আমাদের হাসিহীন, রসহীন, দুর্বহ জীবনের বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিবাদ এবং সেখানেই নিহিত আমাদের ব্যাধির অব্যর্থ প্রতিষেধক ৷ তাতেই ভারহীন হবে দূষণভরা এই বসুন্ধরা ৷
(স্বামী পূর্ণাত্মানন্দজী )
🌹 পরম পূজনীয় শ্রীমৎ স্বামী গহনানন্দজী মহারাজ-এর পূতসান্নিধ্যে
প্র: জপ কিভাবে করব মহারাজ?
মহারাজ: "মেলার ভিড়ে শিশুসন্তান হারিয়ে গেলে মা যেভাবে তাকে খোঁজেন, সেভাবে। মাঠে নাগরদোলা সার্কাস বেলুনওয়ালা.....মা'র কোনদিকে নজর নেই। তার মনে শুধু শিশুর মুখ। আকুল হয়ে ডাকছেন... ডেকে চলেছেন...খুঁজছেন অধীর হয়ে। এইভাবে ঈশ্বরকে ডাকো জপের মাধ্যমে।"
প্র: বাড়িতে মন্দির তো দূর, ঠাকুরঘরও নেই,জপধ্যানে খুব অসুবিধা হয়।
মহারাজ: "কেন, হৃদয় -মন্দির তো রয়েছে। ওখানে ঠাকুরকে প্রতিষ্ঠা করো আগে। তখন আর কোন অসুবিধা হবে না।"
প্র: সংসারে থেকে সাধনা করা খুব কঠিন নয় কি?
মহারাজ: "নিজের সংসার ভাবলে কঠি inন। কিন্তু ঠাকুরের সংসার মনে করলে ওটাই আশ্রম হয়ে উঠবে। তখন অনেকটা সহজ। গাড়িতে তুমি পিছনের সিটে বসে সামনের ড্রাইভারের উপর ভরসা রাখো। ঠাকুর আছেন, মা আছেন, বিশ্বাস করো। "
প্র: ঠাকুরকে ভোগ দিতে ইচ্ছা করে কিন্তু আমি তো অতো শুদ্ধভাবে নিবেদন করতে পারব না। তাহলে কি করবো?
মহারাজ: "রাম-অবতারে যিনি শবরীর দেওয়া এঁটো ফল খেয়েছেন তিনি তোমার নৈবেদ্যও গ্রহণ করবেন। নাই বা জানলে মন্ত্র-তন্ত্র, নাই বা দিলে ছাপ্পান্ন ভোগ, তোমার মনে ভালবাসা আছে তো? ব্যাস তাহলেই হলো। কোটিপতি পিতার শিশু যদি বাবাকে একটা 50 পয়সার লজেন্স দেয় বাবার কাছে সেটাই অমূল্য। ভালবেসে ঠাকুরকে যা দেবে সব তিনি গ্রহণ করবেন।"
প্র: বেশিক্ষণ সাধনা করতে অসুবিধা হলে কি করবো?
মহারাজ: "যখনই পারো জপ করবে। বাসে-ট্রামে-অফিসে-দোকানে-অনুষ্ঠানে..... যেখানেই পারবে, করো। তোমার হৃদয়ে ঠাকুর আছেন একথা সবসময় মনে রেখে যখন যেখানে সম্ভব, যখনই মনে পড়বে, জপ করতে থাকো। যতটুকু পারো সেইটুকুই করো।"
প্র: ধ্যানের সময় কখনো জ্যোতিমূর্তি দেখি! এর তাৎপর্য কি?
মহারাজ: "এর চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তোমার আচরণ। ধ্যানে দর্শন ভালো, কিন্তু এটা কল্পনা অথবা প্রকৃত অনুভব এটা কি করে বুঝবে? সাধকের চরিত্র দেখো। তিনি কি উন্নত হয়েছেন চরিত্রে,আচরণে,প্রেমে ত্যাগে ?এটাই মানদন্ড।"
প্র: "আপনাকে চিঠি লিখলে উত্তর দেবেন?
মহারাজ: "নিশ্চয়ই দেব। কিন্তু তুমি ঠাকুরকে মাকে চিঠি লেখনা কেন? নিজের মনের কথা, সমস্যা, সবকিছু জানাও তাঁদের। শুধু প্রার্থনা নয় চিঠি লিখেও বলো
উত্তর পাবে। পথ খুঁজে পাবে। এমনকি আমাকেও যখন লিখবে, চিঠিটা আগে তাঁদের দেখিয়ে পরে আমায় পোষ্ট করো।"
জয় শ্রীগুরুমহারাজ জী কি জয়।।🙏🙏
#রসিক #মেথর
রসিক ঘোষপাড়ার শিষ্য, কালীবাড়িতে ঝাড়ুদারের কার্য করিত। তাহার গলায় ছিল তুলসীর মালা এবং বাড়িতে ছিল একটি ক্ষুদ্র তুলসী-কানন। এইখানে প্রতি সন্ধ্যায় সে হরিনাম সঙ্কীর্তন করিত।
একদিন শ্রীরামকৃষ্ণ ঝাউতলার দিকে যাইতেছিলেন, সঙ্গে রামলাল। ঠাকুরকে দেখিয়া রসিক সসম্ভ্রমে একপাশে দাঁড়াইল। পরে ঠাকুর ফিরিবার সময় সে গলবস্ত্র হইয়া ভক্তিভরে প্রণাম করিল। ঠাকুর প্রশ্ন করিলেন, -'কিরে রসিক, সব ঝাড়ু-টাড়ু ঠিকমত দিচ্ছিস তো?' রসিক বলিল, -'হ্যাঁ, বাবা।'
মথুরমোহন ও রসিক ব্যতীত 'বাবা' সম্বোধন করিবার অধিকার শ্রীরামকৃষ্ণ আর কাহাকেও দেন নাই। রসিক তাঁহার সন্মুখে দাঁড়াইয়া রহিল। ঠাকুর জিজ্ঞাসা করিলেন, -'কি চাস্?' রসিক বলিল, -'বাবা, কত পাপে এই হীনজন্ম পেয়েছি, আমাদের কি গতি-মুক্তি হবে?' 'হ্যাঁ, হ্যাঁ, নিশ্চয়ই হবে। এখন হবে না, শেষ সময়ে হবে' -ঠাকুর বলিলেন।
রসিক জিজ্ঞাসা করিল, -'আমায় কি করতে হবে?' ঠাকুর বলিলেন, -'যা করছিস, তাই করবি। তুই হীন কাজ কি বলছিস? এই মায়ের দরবারে, রাধাকান্তের দরবারে, দ্বাদশ শিবের দরবারে সেবা করছিস। কত সাধু-ভক্তের পায়ের ধূল ঝাঁট দিচ্ছিস। যা করছিস, তাই করবি।' রসিক বলিল, -'বাবা তুমি আশ্বাস দিচ্ছ, তাই ভরসা হচ্ছে। তুমি বলছ, তাই হবে।' ঠাকুর বলিলেন, -'নিশ্চয়ই হবে। তবে শেষ সময়ে।'
শ্রীরামকৃষ্ণের দেহত্যাগের প্রায় দুই বছর পর রামলাল একদিন দেখিলেন, মন্দির প্রাঙ্গণে রসিকের স্ত্রী ঝাঁট দিতেছে। প্রশ্ন করিয়া জানিলেন, রসিকের অসুখ। ডাক্তার দেখেছে, কিন্তু কোন ওষুধ খাবে না। সে বলে, ওষুধ আবার কি খাব? গঙ্গাজল, তুলসী দে, সেই মহৌষধ।
পাচ-সাতদিন পরে রসিক কিংবা রসিকের স্ত্রী কেহই ঝাঁট দিতে আসিল না। আরও কয়েকদিন পরে রসিকের স্ত্রী আসিয়া কাঁদিতে লাগিল। রামলাল প্রশ্ন করিয়া জানিলেন, রসিক দেহ ছাড়িয়া দিয়াছে।
শ্রীরামকৃষ্ণের আশ্বাসবাণী স্মরণ করিয়া রামলাল জিজ্ঞাসা করিলেন, -'কেমন করে মারা গেল?'
রসিকের স্ত্রী জানাইল, -'ঐদিন আন্দাজ দশটার সময় কাজ করে যখন ফিরলাম, তখন সে বললে, তোরা খেয়ে নে, আর তারাতারি তুলসীতলায় আমার বিছানা করে দে। আমরা বললাম, কী বকছ? কিন্তু সে চেঁচামেচি করে জিদ করতে লাগল। তুলসীতলায় বিছানা পেতে ধরাধরি করে তাকে শুইয়ে দিলাম। তারপর বললে, গঙ্গাজল আর জপের মালা নিয়ে আয়। এনে দিতে নিজের হাতে বিছানায় আর তুলসীতলায় গঙ্গাজল ছিটিয়ে দিয়ে জপ করতে লাগল। কিছুক্ষণ জপ করবার পর হঠাৎ কেঁদে উঠলো, তার পরেই হাসি। শেষে একেবারে স্থির হয়ে বললে, এই যে বাবা এসেছ। তাই তো বলি, তুমি আশা দিয়েছ, সেই আশা ধরে এতদিন কাটিয়েছি! বাঃ বাঃ, কি সুন্দর, কি চমৎকার! বলতে বলতে ধীরে ধীরে চোখ বুজে যেন ঘুমিয়ে পড়ল। কোন খিচ বা টান হয়নি। আশ্চর্য!'
রামলাল বলিলেন, ঠাকুর রসিকের সম্বন্ধে বলেছিলেন যে, সে শাপে মেথরের ঘরে জন্মেছে।
স্বামী চেতনানন্দ


No comments:
Post a Comment