সুখী হওয়ার জন্য এই চারটি সরল সত্য মেনে নিন ...
(১) আপনি যদি সুখী হতে চান তাহলে প্রথমেই অন্যকে দুঃখ দেয়া থেকে বিরত থাকুন। কেননা, এজগতের প্রতিটা ক্রিয়ার সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে। তাই আজ যদি আপনি কাউকে দুঃখ দেন, তাহলে কাল সেই দুঃখ আপনার জীবনে আসবেই।
(২) অন্য জনের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভালোবাসা পাওয়ার আকাঙ্খা ত্যাগ করুন। কেননা, অনিত্য এই জগতে প্রকৃত কোন ভালোবাসা নেই। এটা স্বার্থের দুনিয়া, তাই একটু স্বার্থের কমতি পড়লে যে কেউ যেকোন সময় আপনাকে দুঃখ দেবে।
(৩) এটা অনিত্য জগৎ। প্রকৃত অর্থে, এখানে কেউ আপনার নিত্য সঙ্গী নয়। এ জগতের কেউ একই পূর্বে সবসময় আপনার সাথে ছিল না, ভবিষ্যতেও থাকবে না। পৃথিবী নামক এই রঙ্গমঞ্চে আমরা অভিনয় করার জন্য সাময়িক সময়ের জন্য একত্রিত হয়েছি। তাই এই সরল সত্যটি মেনে নিয়ে এ জগতের কাউকে নিয়ে নিত্যকাল বাঁচার ইচ্ছা করবেন না, যে কেউই যেকোন সময় আপনাকে একা ফেলে রেখে চলে যেতে পারে।
(৪) আপনি মেনে নিন এটা দুঃখের জগৎ। আর এটা মেনে নিয়ে দুঃখ থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করুন। এজন্য অবশ্যই পাপশুন্য হয়ে সাধু-গুরু-বৈষ্ণবের নির্দেশ মতো আপনার জীবন পরিচালিত করুন এবং মনগড়া ধর্ম পরিহার করুন।
যদি এই চারটি সত্য মেনে নেন তাহলে দেখবেন যে কোন দুঃখই আপনার মনকে স্পর্শও করতে পারবে না। আপনার ইহকাল ও পরকাল দুটোই আনন্দময় হবে।
------- রাধানাথস্বামী মহারাজ ।
ভগবান কি
কি করতে পারেন না ।
কামারপুকুরে একজন বৃদ্ধ সাধু আছেন। তাঁর কথা বলার জন্য এই লেখা। পায়ে বাত, লাঠি ধরে চলেন। তাঁর নাম স্বামী ভবেশ্বরানন্দ মহারাজ। চেয়ারে বসেই তিনি নানা আধ্যাত্মিক প্রসঙ্গ করতেন, এখন আর পারেন না। একটু তোতলা, মাঝে মাঝে কথা আটকে যায়। প্রথমে মাত্র দুতিনজন উপবিষ্ট ভক্ত নিয়েই প্রসঙ্গ আরম্ভ করে দিতেন। তারপর যাঁরাই ঠাকুর দর্শন করতে আসতেন, তাঁরাই তাঁর মিষ্ট স্বর এবং বলার ভঙ্গিতে আকর্ষিত হয়ে বসে পড়ত। ধীরে ধীরে অনেক লোক হয়ে যেত। ঘণ্টাখানেক বলে শেষ করে আবার লাঠি ধরে ধীরে ধীরে চলে যেতেন। মনে হতো তিনি যেন পুজো করছেন অথবা এই ভাবেই মানুষের সেবা করছেন।একদিন এসে বসেই উপবিষ্ট ভক্তদের বললেন, "বল তো, ভগবান কি কি করতে পারেন না?" আমরা ভাবছি, সে আবার কী! ভগবান তো সর্ব শক্তিমান! তিনি পারেন না এমন কিছু আছে নাকি! আমরা নিরুত্তর রইলাম। উনি নিজেই আরম্ভ করলেন।
ভগবান তিনটি জিনিস পারেন না—
১. প্রথমত, তিনি কাউকে ঘৃণা করতে পারেন না। কেন? কাকে ঘৃণা করবেন? সব যে নিজের। মানুষ, পশু, পাখি, পোকামাকড় সব যে তাঁর নিজের, সব যে তিনিই। কাকে ঘৃণা করবেন? তাই ভগবান ঘৃণা করতে পারেন না।
২. দ্বিতীয়ত, তিনি শরণাগতকে অস্বীকার করতে পারেন না। আন্তরিক শরণাগতকে ফিরিয়ে দেওয়া ভগবানের সাধ্যের বাইরে। শরণাগত বিভীষণকে বাঁচাবার জন্য রামচন্দ্র রাবণের ব্রহ্মাস্ত্রের সামনে বুক পেতে দিয়েছিলেন। মা বলেছেন—শরণাগত শরণাগত শরণাগত। আমাদের প্রভুর চরণে শরণ নিতে বলেছেন। শরণাগত হলে প্রভুর আমাদের রক্ষা না করে উপায় নেই। শ্রীকৃষ্ণ বলছেন—"ন মে ভক্ত প্রণশ্যতি।"
৩. তৃতীয়ত, তিনি একবার কৃপা করে ফেললে তা প্রত্যাহার করে নিতে পারেন না। সংসারে ভগবান আমাদের অনেক কিছু দিয়ে থাকেন। ধনসম্পত্তি, জমিজমা, স্বামী-স্ত্রী-পুত্র-কন্যা, মান-যশ ইত্যাদি। এগুলো তিনি ফেরত নিয়ে নিতে পারেন, এগুলো সব নিমেষে কেড়ে নিতে পারেন। কিন্ত তিনি যদি একবার কৃপা করে ফেলেন, তবে সেই কৃপাটি আর ফেরত নিতে পারেন না। পরশমণির স্পর্শে লোহা একবার সোনা হয়ে গেলে কেল্লা ফতে ! ভগবানের কৃপাস্পর্শে ভক্ত একবার সোনা হয়ে গেলে আর কোনদিন কৃপাহীন হয় না। ভগবান তা করতে পারেন নাl হাতের তীর একবার ছেড়ে গেলে যেমন ফেরানো যায় না, তেমনি ভগবানের করুণা একবার পেয়ে গেলে তা ভগবান কোনদিন ফেরত নিয়ে নিতে পারেন না।
এই তিনটি জিনিস ভগবান পারেন না।
----------
সংগৃহীত
বয়স বাড়ার সাথে সাথে আপনি কি কি করবেন এবং করবেন না ::
*বয়স বাড়ার সাথে সাথে দুটো জিনিস নিয়মিত চেক করুন।*
১) ব্লাড প্রেসার।
২) ব্লাড সুগার।
চারটি জিনিস একেবারেই ভুলে
যান৷
১) বয়স বাড়ছে এটা নিয়ে দুশ্চিন্তা করা,
২) অতীত নিয়ে সর্বদা অনুশোচনা করা,
৩) সবসময় দুঃখে কাতর হয়ে থাকা,
৪) মানসিক উৎকণ্ঠা বা উদ্বেগ।
*পাঁচটি জিনিস খাবার থেকে যত পারুন এরিয়ে চলুন।*
১) লবন,
২) চিনি,
৩) অতিরিক্ত চর্বি জাতীয় খাবার ।
৪) অতিরিক্ত ভাজা ভূজি খাবার
৫) বাইরের কেনা খাবার বা প্রসেসেড ফুড।
*পাঁচটি জিনিস খাবারে যত পারুন বাড়িয়ে নিন।*
১) সব রকমের সবুজ শাক
২)সব রকম সবুজ সব্জি, সীম বা মটরশুটি ইত্যাদি
৩) ফলমূল,
৪) বাদাম,
৫) প্রোটিন জাতীয় খাবার।
*মানসিক শান্তি বা সুখী হতে সাতটি জিনিস সবসময় সাথে রাখার চেষ্টা করুন।*
১) একজন প্রকৃত ভালো বন্ধু,
২) নিজের সমগ্ৰ পরিবার,
৩) সবসময় সুচিন্তা,
৪) একটি নিরাপদ ঘর কিংবা আশ্রয়,
৫) অল্পেতে খুশি হওয়ার চেষ্টা,
৬) অতিরিক্ত অর্থ চিন্তা থেকে নিজেকে দূরে রাখা,
৭) কিছু সময় আধ্যাত্মিক চর্চায় বা সৎসঙ্গ দেওয়া।
*ছয়টি জিনিসের চর্চা রাখুন।*
১) অহংকার, Ego বর্জন করার কৌশল,
২) সবার সাথে হাসিমুখে কথা বলা,
৩) মানুষের সাথে ভালো আচরণ করা,
৪) নিয়মিত শরীর চর্চা করা,যোগ অন্ততঃ 24 মিনিট ।কিছুক্ষণ হাঁটা নিয়মিত ।
৫) ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা।
*৬) সরল ও সৎ জীবন যাপন*
*সাতটি জিনিস এড়িয়ে চলুন।*
১) কর্য,
২) লোভ,
৩) আলস্য,
৪) ঘৃণা,
৫) সময়ের অপচয়,
৬) পরচর্চা,পরনিন্দা
৭) কোনো রূপ নেশা বা আসক্তি
*পাঁচটি জিনিস কখনোই করবেন না।*
১) অতিরিক্ত ক্ষুধা নিয়ে খেতে যাওয়া,
২) অতিরিক্ত পিপাসায় কাতর হয়ে জল পান করা,
৩) অতিরিক্ত দূর্বল হয়ে ঘুমোতে যাওয়া,
৪) অতিরিক্ত দূর্বল হয়ে বিশ্রাম নেয়া,
৫) একেবারে অসুস্থ হয়ে ডাক্তারের কাছে যাওয়া,
🙏🙏সুস্থ থাকুন আনন্দে থাকুন🙏🙏Guru Tarun Kumar
#গুরুপূর্ণিমা#
গুরুর্ব্রহ্মা গুরুর্বিষ্ণু গুরুর্দেবো মহেশ্বরঃ।
গুরুরেব পরম ব্রহ্ম তস্মৈ শ্রীগুরবে নমঃ।।
সংস্কৃত শব্দ 'গুরু': 'গু' মানে অন্ধকার/অজ্ঞতা এবং 'রু' মানে যা অন্ধকার দূরীভূত করে ; অর্থাৎ গুরু শব্দটির অর্থ যিনি অন্ধকার দূরীভূত করেন।
অাজ গুরু পূর্ণিমার এই শুভদিনে জগতের গুরু #ঠাকুর_শ্রীরামকৃষ্ণপরমহংস দেবের শ্রীপাদপদ্মে অামার শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করি এবং অামার গুরুভাই ও গুরুবোনদের জানাই গুরু পূর্ণিমার বিনম্র শুভেচ্ছা।
স্বামীজীর দৃষ্টিতে গুরু ও শিষ্যের লক্ষণঃ
সূর্য্যকে প্রকাশ করতে যেমন মশালের প্রয়োজন নেই, তেমনই লোকগুরুর অাবির্ভাবে অাত্মা স্বভাবতঃই জানতে পারেন তাঁর উপর সত্যর সূর্যালোক-সম্পাত অারম্ভ হইয়াছে। যে-সকল অাচার্যের হৃদয়ে জ্ঞান ও সত্য সূর্যালোকের ন্যায় প্রতিভাত, তাঁহারা জগতের সর্বোচ্চ মহাপুরুষ, অার জগতের অধিকাংশ লোকই তাঁহাদিগকে 'ঈশ্বর' বলিয়া পূজা করে। কিন্তু অামরা অপেক্ষাকৃত অল্প-জ্ঞানীর নিকটও অাধ্যাত্বিক সাহায্য লাভ করিতে পারি। তবে অামাদের এরুপ অন্তর্দৃষ্টি নাই যে, অামরা গুরু বা অাচার্যের সম্বন্ধে যথার্থ বিচার করতে পারি। তাই গুরু-শিষ্য উভয়ের সম্বন্ধেই কতকগুলি পরীক্ষা অাবশ্যক।
শিষ্যের এই গুণগুলি অাবশ্যক- পবিত্রতা, প্রকৃত জ্ঞানপিপাসা ও অধ্যাবসায়। অশুদ্ধাত্মা পুরুষ কখনও প্রকৃত ধার্মিক হতে পারে না। ধর্মের জন্য প্রকৃত ব্যাকুলতা ছাড়া হৃদয়ের ধর্মপিপাসা নিবৃত্তি হয় না। যতদিন না প্রাণে এই ব্যাকুলতা জাগ্রত না হয়, ততদিন শিষ্যের নিরন্তর অধ্যাবসায় প্রবৃত্তি প্রয়োজন হয়, অতঃপর সিদ্ধি অবশ্যম্ভাবী।
তেমনি গুরু যিনি, তিনি যেন শাস্ত্রের মর্মজ্ঞ হন। শাস্ত্রের মর্ম যিনি জানেন, তিনিই যথার্থ ধর্মাচার্য। জগতের প্রধান ধর্মাচার্যগণ কেহই শাস্ত্রের ব্যাখ্যা করিতে অগ্রসর হন নাই। তাঁহারা শুধু জগৎকে শাস্ত্রের মহান ভাব-শিক্ষাই দিয়াছেন।
ভগবান, শ্রীরামকৃষ্ণ একটি গল্প বলিতেনঃ এক অাম-বাগানে কয়েকজন লোক বেড়াইতে গিয়াছিল; বাগানে ঢুকিয়া তাহারা গণিতে অারম্ভ করিল, কটা অাম গাছ, কোন্ গাছে কটা অাম, এক-একটা ডালে কত পাতা, অামের বর্ণ, অাকার, প্রকার ইত্যাদি নানাবিধ পান্ডিত্যপূর্ণ বিচার করিত লাগিল। অার একজন ছিল বিচক্ষণ, সে এসব গ্রাহ্য না করিয়া অাম পাড়িতে লাগিল ও খাইতে লাগিল। বলো দেখি, কে বেশী বুদ্ধিমান্? অাম খাও, পেট ভরিবে, কেবল পাতা গণিয়া-হিসাব করিয়া লাভ কি? এই পাতা-ডালপালা গোনা ও অপরকে উহার সংখ্যা জানাইবার চেষ্টা একেবারে ছাড়িয়া দাও। অবশ্য এরুপ কার্যের উপযোগিতা অাছে, কিন্তু ধর্মরাজ্যে নয়। যাহারা এইরুপ পাতা গণিয়া বেড়ায়, তাহাদের ভিতর হইতে কখনও একটিও ধর্মবীর বাহির করিতে পারিবে না। ধর্ম- যাহা মানব জীবনরর সর্বোচ্চ লক্ষ্য, মানুষের শ্রেষ্ঠ গৌরবের জিনিস, তাহাতে পাতা-গোণারুপ অত পরিশ্রমের প্রয়োজন নাই। তাহাদের পন্ডিতি তর্কবিচারে 'শান্তিঃ শান্তিঃ' বলিয়া এস অামরা অাম খাইতে থাকি।
দ্বিতীয়তঃ গুরুর নিষ্পাপ হওয়া অাবশ্যক।
তৃতীয়তঃ গুরুর উদ্দেশ্য -সমগ্র মানব জাতির প্রতি শুদ্ধ প্রেমই যেন তাঁহার কার্যের নিয়ামক হয়।
অর্থাৎ 'যিনি বিদ্বান্ নিষ্পাপ ও কামগন্ধহীন, যিনি শ্রেষ্ঠ ব্রহ্মবিৎ', তিনিই প্রকৃত সদ্গুরু। এই সদ্গুরুই ধর্মশিক্ষার্থীর চোখ খুলিয়া দেন। সুতরাং কোন ব্যক্তির সহিত তাহার বংশধরের যে সম্বন্ধ, গুরুর সহিত শিষ্যেরও ঠিক সেই সম্বন্ধ। গুরুর প্রতি বিশ্বাস, বিনয়নম্র অাচরণ, তাঁহার নিকট শরণগ্রহণ ও তাঁহার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ব্যতিরেকে অামাদের হৃদয়ে ধর্মের বিকাশ হইতেই পারে না।
ধর্ম- সর্বোচ্চ জ্ঞানস্বরুপ যে ধর্ম, তাহা ধন-বিনিময়ে কিনিবার জিনিস নয়, গ্রন্থ হইতেও পাওয়া যায় না। যতদিন না তোমার হৃদয় ধর্ম গ্রহন করিবার উপযুক্ত হইতেছে এবং যতদিন না তুমি গুরু লাভ করিতেছ, কোথাও ধর্ম খুজিয়া পাইবে না। বিধাতৃনির্দিষ্ট এই গুরু যখনই লাভ করিবে, অমনি বালকবৎ বিশ্বাস ও সরলতা লইয়া তাঁহার সেবা কর, তাঁহার নিকট প্রাণ খুলিয়া দাও, তাঁহাকে সাক্ষাৎ ঈশ্বররুপে দেখ। যাহারা এইরুপ প্রেম ও শ্রদ্ধাসম্পন্ন হইয়া সত্যানুসন্ধান করে, তাহাদের নিকট সত্যের ভগবান্ সত্য শিব ও সুন্দরের অতি অাশ্চর্য তত্ত্বসমূহ প্রকাশ করেন।
অমৃত কথা :
(১) "ঈশ্বরই একমাত্র গুরু, পিতা ও কর্তা । মানুষের কি সাধ্য অপরকে সংসার-বন্ধন থেকে মুক্ত করে । যাঁর এই ভুবনমোহিনী মায়া, তিনিই সেই মায়া থেকে মুক্ত করতে পারেন । সচ্চিদানন্দই গুরু । সচ্চিদানন্দ গুরু বই আর গতি নাই । যদি মানুষ গুরুরূপে চৈতন্য করে, তো জানবে যে সচ্চিদানন্দই ঐ রূপ ধারণ করেছেন । গুরু যেন সেথো, হাত ধরে নিয়ে যান । ভগবান্ দর্শন হলে আর গুরু-শিষ্য-বোধ থাকে না । তাই জনক শুকদেবকে বললেন, 'যদি ব্রহ্মজ্ঞান চাও, আগে গুরুদক্ষিণা দাও । কেন-না ব্রহ্মজ্ঞান হ'লে আর গুরু-শিষ্য ভেদ-বুদ্ধি থাকবে না ।' যতক্ষণ ঈশ্বর দর্শন না হয়, ততক্ষণই গুরু-শিষ্য সম্বন্ধ ।"
-- ঠাকুর শ্রীশ্রী রামকৃষ্ণ ।
(২) "মন্ত্রের মধ্য দিয়ে শক্তি যায় । গুরুর শক্তি শিষ্যে যায়, শিষ্যের গুরুতে আসে । শিষ্য পাপ করলে গুরুরও লাগে । ভাল শিষ্য হ'লে গুরুরও উপকার হয় ।"
-- শ্রীশ্রীমা সারদা ।
(৩) যে ব্যক্তির আত্মা হইতে অপর আত্মার শক্তি সঞ্চারিত হয়, তাঁহাকে 'গুরু' বলে ; এবং যে ব্যক্তির আত্নার শক্তি সঞ্চারিত হয়, তাঁহাকে 'শিষ্য' বলে ।"
-- স্বামী বিবেকানন্দ ।
সুপ্রভাত, আজ ২০শে আষাঢ় ১৪২৭ বঙ্গাব্দ (১৮৫ রামকৃষ্ণাব্দ) রবিবার (ইং : ৫ই জুলাই ২০২০)।
তিথি : আষাঢ়ী পূর্ণিমা দিবা ১০।৬ পর্যন্ত ।
আজ শ্রীশ্রীগুরু পূর্ণিমা ও শ্রীশ্রী ব্যাস পূজা ।
অমৃত কথা :
(১) "ঈশ্বরই একমাত্র গুরু, পিতা ও কর্তা । মানুষের কি সাধ্য অপরকে সংসার-বন্ধন থেকে মুক্ত করে । যাঁর এই ভুবনমোহিনী মায়া, তিনিই সেই মায়া থেকে মুক্ত করতে পারেন । সচ্চিদানন্দই গুরু । সচ্চিদানন্দ গুরু বই আর গতি নাই । যদি মানুষ গুরুরূপে চৈতন্য করে, তো জানবে যে সচ্চিদানন্দই ঐ রূপ ধারণ করেছেন । গুরু যেন সেথো, হাত ধরে নিয়ে যান । ভগবান্ দর্শন হলে আর গুরু-শিষ্য-বোধ থাকে না । তাই জনক শুকদেবকে বললেন, 'যদি ব্রহ্মজ্ঞান চাও, আগে গুরুদক্ষিণা দাও । কেন-না ব্রহ্মজ্ঞান হ'লে আর গুরু-শিষ্য ভেদ-বুদ্ধি থাকবে না ।' যতক্ষণ ঈশ্বর দর্শন না হয়, ততক্ষণই গুরু-শিষ্য সম্বন্ধ ।"
-- ঠাকুর শ্রীশ্রী রামকৃষ্ণ ।
(২) "মন্ত্রের মধ্য দিয়ে শক্তি যায় । গুরুর শক্তি শিষ্যে যায়, শিষ্যের গুরুতে আসে । শিষ্য পাপ করলে গুরুরও লাগে । ভাল শিষ্য হ'লে গুরুরও উপকার হয় ।"
-- শ্রীশ্রীমা সারদা ।
(৩) যে ব্যক্তির আত্মা হইতে অপর আত্মার শক্তি সঞ্চারিত হয়, তাঁহাকে 'গুরু' বলে ; এবং যে ব্যক্তির আত্নার শক্তি সঞ্চারিত হয়, তাঁহাকে 'শিষ্য' বলে ।"
-- স্বামী বিবেকানন্দ ।
জওহরলাল নেহরু ও তাঁর স্ত্রী ::
ভদ্র মহিলা জওহরলাল নেহরুর স্ত্রী #কমলা নেহেরু।,টিবি রোগে আক্রান্ত হবার কারনে উত্তরখন্ড আলমোরা ও পাহাড়ি এলাকা হাসপাতালে ছেড়ে এসেছিলেন। #টিবি হবার পর ও কমলা নেহেরু #10বছর বেঁচে ছিলেন কিন্তু জওহরলাল বিদেশ #ভ্রমণ করলেও এক দিনের জন্য ও স্ত্রী কে দেখতে যান নি!!#নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু জানার পর কমলা নেহেরু কে দেখতে যান এবং উন্নত মানের #চিকিৎসার জন্য সেই সময় #70হাজার টাকা জোগাড় করে ভালো হাসপাতালে ভর্তি করান ।কিন্তু কমলা নেহেরু মনের দিক থেকে ভেঙে পরেছিলেন কমলা নেহেরুর #মৃত্যুর 10দিন আগে নেতাজী জওহরলাল কে খবর দিয়েছিলেন তবুও তিনি #যাননি অবশেষে #মৃত্যু হলেও তার শেষ কৃত সম্পূর্ণ করার জন্য ও যান নি অবশেষে নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু কমলা নেহেরুর #অন্তিম কাজ করেছিলেন।।
ইতিহাস এর পাতা থেকে আজ এগুলো উধাও হয়ে গেছে।
অখ্যয় তৃতীয়া সম্বন্ধে দু-চার কথা :-
অক্ষয় তৃতীয়ার নানা গল্প। সেই পুরাণ থেকে আজ পর্যন্ত
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে বছরের প্রথম শুভ দিন হল ‘অক্ষয় তৃতীয়া।’। বছরের প্রথম মাস বৈশাখের শুক্লপক্ষের তৃতীয়া তিথিই হিন্দুশাস্ত্রে ‘অক্ষয় তৃতীয়া’ হিসেবে চিহ্নিত। শাস্ত্রগ্রন্থ অনুসারে, এই দিনটির গুরুত্ব অনেক। পুরাণে যে চারটি যুগকল্পের কথা বলা হয়েছে, সেই সত্য, ত্রেতা, দ্বাপর ও কলির মধ্যে প্রথম দুটি যুগের সূচনা হয়েছিল অক্ষয় তৃতীয়ার দিনে। এই তিথিতেই জন্ম নিয়েছিলেন বিষ্ণুর ষষ্ঠ অবতার পরশুরাম। ভগীরথ এই পুণ্য তিথিতে স্বর্গ থেকে গঙ্গাকে পৃথিবীর মাটিতে নিয়ে আসেন বলে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা গঙ্গার জলকে অক্ষয় পবিত্রজ্ঞানে পুজো করে। বেদব্যাসের বলা শ্লোক শুনে গণেশ ‘মহাভারত’ লিপিবদ্ধ করার কাজও শুরু করেন এই অক্ষয় তৃতীয়ার দিন থেকে।
অক্ষয় তৃতীয়ার সর্বাধিক গুরুত্ব বোধ হয়, দানের পুণ্যফল লাভের কারণে। এ সম্পর্কে মহাভারতের সূত্র ধরে ভবিষ্যপুরাণে একটি আখ্যান আছে। সম্রাট যুধিষ্ঠির ব্যাসদেবের শিষ্য শতানীক মুনীর কাছে জলদানের মাহাত্ম জানতে চাইলে, মুনী একটা গল্প বললেন। বৈশাখের এক তীব্র গরমের দিনে এক তৃষ্ণার্ত ব্রাহ্মণ পথিক পথিমধ্যে আরেক ব্রাহ্মণের গৃহে এসে জল চাইলেন। গৃহস্থ ব্রাহ্মণ ছিলেন অধার্মিক এবং দুর্মুখ। তিনি জল তো দিলেনই না, উপরন্তু অপমান করে ব্রাহ্মণকে তাড়িয়ে দিতে উদ্যত হলেন। এমন সময়ে বাড়ির অন্দর থেকে ব্রাহ্মণের পত্নী বেরিয়ে এসে এই অমানবিক আচরণের জন্য স্বামীকে তিরস্কার করলেন এবং তৃষ্ণার্তকে অন্নজলে তৃপ্ত করলেন। সে দিনটি ছিল অক্ষয় তৃতীয়া। তার পর বহু কাল কেটে গেছে। গৃহস্থ ব্রাহ্মণের আয়ু শেষ হয়ে এলে যমদূতেরা তাঁকে যমলোকে নিয়ে এল কিন্তু যমরাজ সব বিচার করে ওই দুর্মুখ ব্রাহ্মণকে স্বর্গে পাঠাবার বিধান দিলেন! বিস্মিত যমদূতেরা এমন অধার্মিক ব্যক্তির নরকের বদলে স্বর্গপ্রাপ্তির কারণ জানতে চাইলে যমরাজ জানালেন যে এক অক্ষয় তৃতীয়ার দিন ব্রাহ্মণের পত্নী তৃষ্ণার্ত পথিককে অন্নজলদানে তুষ্ট করেছিলেন। সতীর সেই পুণ্যের ভাগ পতিও পেয়েছেন এবং তাই তাঁর স্বর্গলাভ হয়েছে।
শিবকে তপস্যায় তুষ্ট করে কুবের এই দিন অতুল ঐশ্বর্য লাভ করেন তাই লক্ষ্মীলাভের উদ্দেশ্যে এই দিন কোথাও কোথাও বৈভবলক্ষ্মীর পুজোও হয়। লক্ষ্মীর কৃপা পাওয়ার আশায় অনেক ব্যবসায়ীও পয়লা বৈশাখের পরিবর্তে অক্ষয় তৃতীয়ার দিন থেকে নতুন ব্যবসা আরম্ভ করেন বা হালখাতা করেন। শ্রীক্ষেত্র পুরীর জগন্নাথদেবের রথ নির্মাণ শুরু হয় এই তিথি থেকেই।
পানসি বেলঘরিয়ার কথা :
“চালাও পানসি বেলঘরিয়া” বাংলার এই প্রবাদটি র মধ্যে লুকিয়ে আছে বেলঘরিয়ার গৌরবময় ইতিহাস। উনিশ শতকের প্রথমার্ধে আরিয়াদহ, বরানগর, বেলঘরিয়ায় গড়ে উঠেছিল অনেক বাগান বাড়ি। কলকাতার জমিদার ও বাবু-কালচারে পুষ্ট একশ্রেণীর ‘হঠাৎ-বড়লোক’ নিজের বাড়ি থেকে নিরাপদ দূরত্বে বিভিন্ন বাগানবাড়ি নির্মাণ করে। কলকাতা থেকে পানসি (একধরনের নৌকা) চেপে ফুরতির উল্লাস গলায় ঢেলে হাক পারত চালাও পানসি বেলঘরিয়া।
তাদের বাগান বাড়ির অস্তিত্ব এখন একদমই নেই বললেই চলে। এই বাড়ি গুলি কাদের ছিল কারা থাকত তার প্রমাণ সেরকম ভাবে কিছু জানা যায়নি। কারণ বেশিরভাগই এখন ভেঙে বসতি গড়ে উঠেছে। মুছে গেছে সে-সময়ের দলিল।
তবু, যেটুকু ইতিহাস জানা যায় প্রাচীনদের মুখ থেকে, প্রধান বাগানবাড়িগুলি ছিল নীলগঞ্জ রোডের আশেপাশেই, দেঁতে খালকে কেন্দ্র করে। এখন যেখানে জেনিথ হসপিটাল, সেখানে ছিল বিশাল একটি বাগানবাড়ি। সেখানে নাচঘরে একটি কাঠের পাটাতনের নিচে জলের ওপর তার লাগানো থাকত, বাইজিরা নাচার সময় বেজে উঠত জলতরঙ্গ। বাকিগুলির কথা তেমনভাবে জানা যায় না এখন আর। এছাড়াও এখন যেখানে স্টেট ট্রান্সপোর্ট অফিস, সেখানেও বাগানবাড়ি ছিল। বর্তমান দু’নম্বর রেলগেটের পাশে ওল্ড নিমতা রোডের ওপরেই ছিল রেমিশনের বাগানবাড়ি, এক ঔষধ প্রস্তুতকারক কম্পানির ছিল। বর্তমানে বাসুদেবপুরের যে অঞ্চলটি ‘মনোভিলা’ নামে পরিচিত, সেখানে ছিল মনোরমা বাইজির বাগানবাড়ি। বৃদ্ধ বয়েসে তাঁর মস্তিষ্কবিকৃতি হয়েছিল বলে জানিয়েছেন অনেকে। তার পাশেই ছিল সুরেন দাসের বাগান।
বরাহনগর ডানলপের কাছে বি.টি. রোডের পশ্চিমদিকে ছিল গুপ্তনিবাস, অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর এখানে অনেকদিন ছিলেন এবং এখানেই মারা যান ১৯৫১ সালে। এমনকি, তিরিশের দশকের প্রথমার্ধে, অসুস্থ অবস্থায় রবীন্দ্রনাথও কিছুকাল বাস করেন এখানে। সদ্যনির্মিত সিসিআর ব্রিজের ওপর দিয়ে মালগাড়ির অবিরাম যাতায়াতের শব্দে বিরক্ত হয়ে, কিছুটা রসপ্রয়োগেই বেলঘরিয়া’কে ‘ঘড়ঘড়িয়া’ বলে ডাকতেন তিনি।
বেলঘরিয়ায় বিটি রোডের ওপর এখনও অবস্থিত মতি শীলের ঠাকুরবাড়ি ও অতিথিশালা। একে ঠিক বাগানবাড়ি বলা যায় না। মতিলাল শীল ছিলেন উনবিংশ শতকের কলকাতার একজন প্রধান ব্যবসায়ী ও দানশীল ব্যক্তি। ১৮৪১সালে তিনি আড়িয়াদহে স্নানার্থীদের জন্য একটি ঘাট এবং বেলঘরে পথচারীদের জন্য একটি অতিথিশালা নির্মাণ করে দেন।১৮-৬-১৮৮৩ তারিখে ঠাকুর রামকৃষ্ণ সদলবলে পানিহাটীর মহোৎসবে হইতে ফিরিবার পথে সন্ধ্যার সময় এই ঠাকুরবাড়ি ও ঝিল দর্শন করেন।
এছাড়াও ঠাকুর রামকৃষ্ণ হ্রদয় কে সঙ্গে নিয়ে বেলঘরিয়ার জয়গোপাল সেনের বাগান বাড়িতে (আট নং বি টি রোড) এসে কেশব চন্দ্র সেন’ মহাশয়ের সাথে দেখা করেন এবং 14-5-1875 তারিখে ঠাকুর বেলঘরিয়ায় এসে তার সাথে ধর্মালোচনা করেন।
বেলঘরিয়া বা ‘বেলঘর’ নিয়ে প্রচলিত ছিল একটি ছড়া -
‘বাগান পুকুর বাবাঠাকুরের বর
এই তিন নিয়ে বেলঘর।’
আজ থেকে এক-দেড়শো বছর আগে জলাজমি আর পুকুরের অভাব ছিলোনা এখানে। আর, ‘বাবাঠাকুর’ হলেন পঞ্চাননতলার শিব, বাবা পঞ্চানন। ‘বড়ঠাকুর’ নামেও পরিচিত তিনি। বেলঘরিয়ার সবচেয়ে পুরনো মন্দির এই পঞ্চাননতলাতেই। এর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছিল দূর-দূরান্তে। বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষ আসতেন এখানে পুজো দিতে, মানত করতে। এমনকি, আগেকার দিনে উড়িষ্যার কেওনঝড়ের রাজা, নাটোরের রাজাও এখানে মানত করেছিলেন। এখনও, অশ্বত্থগাছের ডালে দেখতে পাওয়া যায় অনেক মাটির ঘোড়া, ঢিল বাঁধা। এভাবেই, লোকবিশ্বাস ও লোকসংস্কৃতির এক ঐতিহ্য প্রাচীনকাল থেকেই নিজের বুকে পুষে রেখেছে বেলঘরিয়া।
এবার আসি বেলঘরিয়া এই নাম করনের ইতিহাস।
“সপ্তদশ শতাব্দীতে ঐ অঞ্চল ছিল পাট, মাছ ও তরি-তরকারির প্রধান পাইকারি বাজার। প্রবাদ আছে, আড়িয়াদহে নৌকা থেকে পাট ও অন্যান্য সামগ্রী লোডিং ও আনলোডিং করার কাজে মালবাহকদের ডাকার জন্য ওখানে একটা বড়ো ঘণ্টা লাগানো থাকত, যা থেকে অঞ্চলটার নাম হয়েছে ‘বেলঘর’, ‘বেলঘর’ থেকে ‘বেলঘরিয়া’।”
এই তত্ত্ব কিছু ইতিহাসবিদ মনে করে।
আবার আরেক দল , ‘ঘন্টাঘর’এর তত্ত্ব এর কথা বলেছেন। তাঁদের বক্তব্য, সিরাজদৌল্লা যখন ১৭৫৬ সালে কলকাতা আক্রমণ করতে আসেন, ইংরেজ’রা এই অঞ্চলে একটি ‘বেল’ বা ‘ঘন্টা’ লাগিয়েছিল, তৎকালীন সাইরেন হিসেবে ব্যবহারের জন্য। তা থেকে নাম হয় ‘বেলঘর’ ।
আবার অনেকে বলে থাকেন এখানে অনেক বেল গাছ ছিল। সেখানে বড়ো বড়ো সাইজের বেল হতো। যা থেকে নাম হয় বেলঘরিয়া। তবে এখানে poঅনেক পুরনো বাড়ির ফলকে BELGHURRIAH নামটা পাওয়া যায়।
তবে অনেক কবিরও পায়ের ধূলা পরেছে এই বেলঘরিয়ায় । যেমন কাজি নজরুল ইসলাম।
১৯২৬-২৭ সালে, কৃষ্ণনগর থেকে কলকাতায় ফেরার পথে নজরুল প্রায়ই হাজির হতেন বেলঘরিয়ায়। স্থানীয় বন্ধু ও কবিদের সঙ্গে আড্ডায় মজলিশে মেতে উঠতেন তিনি। আজ যেখানে কবি চন্ডিচরন মিএ স্ট্রিট, সেখানেই কবি চণ্ডীচরণের বাড়িতে জমে উঠত আড্ডা। এছাড়াও, কামারহাটি পৌরসভার কমিশনার বৈদ্যনাথ ঘোষালের বাড়িতে একটি সাহিত্যসভা আয়োজিত হত, নাম ‘রসচক্র’। নজরুল সহ কল্লোল গোষ্ঠীর লেখকরা প্রায়ই আসতেন সেখানে। প্রবেশ করেই সোল্লাসে চেঁচিয়ে উঠতেন নজরুল – ‘দে গরুর গা ধুইয়ে’। এবং গানে কবিতায় অফুরন্ত প্রাণশক্তিতে সভার মধ্যমণি হয়ে উঠতেন অচিরেই।
তাঁর জনপ্রিয়তা বেলঘরিয়া সহ আশেপাশের প্রতিটি জনপদেই ছিল তুঙ্গে। চণ্ডীচরণ মিত্রের উদ্যোগে বেলঘরিয়া মিডল ইংলিশ স্কুলে(বর্তমান বেলঘরিয়া হাই স্কুল) আয়োজিত বাৎসরিক ভোজ ও কবিসম্মেলনে নজরুল ছাড়াও গোলাম মোস্তাফা, নরেন্দ্র দেব, জলধর সেন, বুদ্ধদেব বসু, শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায়, দীনেশ দাশ, অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত প্রমুখের উপস্থিতি ছিল অনিবার্য।
’৪১এ মারা গেলেন চণ্ডীচরণ মিত্র। ’৪২এ তো চিরতরেই অসুস্থ হয়ে গেলেন কবি। বেলঘরিয়া ও পারিপার্শ্বিক আড়িয়াদহ, পানিহাটি, বরানগর প্রভৃতি জনপদের সঙ্গে সাক্ষাৎ সম্পর্কেও ছেদ পড়ে তারপর।
এছাড়াও ছন্দের জাদুকর কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত র বাড়িও ছিল বেলঘরিয়ার নিমতা’য়। তার নামানুসারে বেলঘরিয়া ব্রিজ এর নাম হয় কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত সেতু।
বেলঘরিয়ার কিছু ফটো আমার বন্ধুদের জন্য share করলাম।
♦️♦️♦️♦️♦️♦️ দিব্যবাণী ♦️♦️♦️♦️♦️♦️
" প্রথমে অন্নদান, তারপর বিদ্যাদান, সর্বোপরি জ্ঞানদান । এই তিন ভাবের সমন্বয় এই মঠ থেকে করতে হবে । অন্নদান করবার চেষ্টা করতে করতে ব্রহ্মচারীদের মনে পরার্থকর্মতৎপরতা ও শিবজ্ঞানে জীবসেবার ভাব দৃঢ় হবে । ও থেকে তাদের চিত্ত ক্রমে নির্মল হয়ে তাতে সত্ত্বভাবের স্ফূরণ হবে । তা হলেই ব্রহ্মচারিগণ কালে ব্রহ্মবিদ্যালাভের যোগ্যতা ও সন্ন্যাসাশ্রমে প্রবেশাধিকার লাভ করবে ।........
" এই অন্নহাহাকারের দিনে তুই যদি পরার্থে সেবাকল্পে ভিক্ষা-শিক্ষা করে যেরূপে হোক দুমুঠো অন্ন দীনদুঃখীকে দিতে পারিস, তা হলে জীব-জগতের ও তোর মঙ্গল তো হবেই -------- সঙ্গে সঙ্গে তুই এই সৎকাজের জন্য সকলের sympathy ( সহানুভূতি ) পাবি । ঐ সৎকাজের জন্য তোকে বিশ্বাস করে কামকাঞ্চনবদ্ধ সংসারীরা তোর সাহায্য করতে অগ্রসর হবে । তুই বিদ্যাদানে বা জ্ঞানদানে যত লোক আকর্ষণ করতে পারবি, তার সহস্রগুণ লোক তোর এই অযাচিত অন্নদানে আকৃষ্ট হবে । এই কাজে তুই public sympathy ( সাধারণের সহানুভূতি ) যত পাবি, তত আর কোন কাজে পাবিনি । যথার্থ সৎকাজে মানুষ কেন, ভগবানও সহায় হন । এরূপে লোক আকৃষ্ট হলে তখন তাদের মধ্য দিয়ে বিদ্যা ও জ্ঞানার্জনের স্পৃহা উদ্দীপিত করতে পারবি । তাই আগে অন্নদান ।.........
" কর্মের ফলে যদি তোর দৃষ্টি না থাকে এবং সকল প্রকার কামনা-বাসনার পারে যাবার যদি তোর একান্ত অনুরাগ থাকে, তা হলে ঐ সব সৎকাজ তোর কর্মবন্ধন মোচনেই সহায়তা করবে ।..... এরূপ পরার্থ কর্মই কর্মবন্ধনের মূলোৎপাটনের একমাত্র উপায় । "
------------ স্বামী বিবেকানন্দ ।
( বাণী ও রচনা : ৯ম খণ্ড, পৃঃ ১২৬ - ১২৮ )
♦️♦️♦️♦️♦️♦️ জয় স্বামীজী ♦️♦️♦️♦️♦️♦️
শ্রীশ্রীরামকৃষ্ঞ কথামৃত থেকে ------
ভক্ত--ঠাকুর ,মরলে কি হয় ? শ্রীরামকৃষ্ঞ --- গীতার মতে , মরবার সময় যা ভাববে ,তাই হবে |ভরত রাজা হরিণ ভেবে হরিণ হয়েছিল |তাই ঈশ্বরকে লাভ করবার জন্য সাধনা করা চাই |রাতদিন ঈশ্বরের চিন্তা করলে মরবার সময়ও সেই চিন্তা আসবে | ভক্ত ---আচ্ছা ঠাকুর , বিষয়ে বৈরাগ্য হয় না কেন ? শ্রীরামকৃষ্ঞ ----- এরই নাম মায়া | মায়াতে সৎকে অসৎ ,অসৎকে সৎ বোধ হয় | সৎ অর্থাৎ যিনি নিত্য,----পরব্রহ্ম |অসৎ অর্থাৎ সংসার অনিত্য | অভ্যাস কর , দেখবে মনকে যে দিকে নিয়ে যাবে ,সেই দিকেই যাবে |একে অভ্যাস যোগ বলে | "" মন ধোপাঘরের কাপড় | তাকে যে রঙে ছোপাবে সেই রঙ হয়ে যাবে |"" 🙏🙏🙏🙏🙏 জয় ঠাকুর 🙏🙏🙏🙏🙏🙏 🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹
🪔💥পবিত্র আরতি দর্শনের অমৃতমহাত্ম্য এবং ফললাভ💥🪔
🌷শাস্ত্র মতে, যে কোনো পূজায় বা সন্ধ্যাকালীন পূজা আরতি বা সন্ধ্যা আরতি হয় কেন? তা দর্শন করলে কি লাভ? এইসব বিধি নিয়মের অর্থই বা কি?..
🪔এই আরতির আর এক নাম নীরাজন। গানে আছে না? নিরাজনে প্রভু নিরাজনে...
পূজা আরতি বা সন্ধ্যা আরতির উপচার বা অঙ্গ কি কি?
💥প্রদীপ (এক,তিন, পাঁচ,সাত,বা বহু শিখা, 108ও হতে পারে) জল- শঙ্খ, বস্ত্র, পুষ্প,এবং চামর।
(বস্ত্রে রন্ধ্র থাকায় ইহা আকাশের প্রতিক।ও মাটির বিশেষ গুণ গন্ধ বলে ফুল উহার সার্থক প্রতীক।)
বলা হয় ,এই উপচারগুলি যথাক্রমে অগ্নি, জল, আকাশ, মাটি, ও বায়ু এই পাঁচটি ভূতের প্রতীক।
এই বিশ্বে যত প্রকার বস্তু রয়েছে তার মূল উপাদান পাঁচটি ভূতের মধ্য দিয়ে যেন সাংকেতিকভাবে সমগ্র পৃথিবী কে শ্রীভগবানের উদ্দেশ্যে নিবেদন করিয়া তাঁহার পূজা করা হইতেছে। তাঁর বিরাট রূপের পূজা। এই পূজা সাংকেতিক পূজা।
🤘উদ্দেশ্য? আমাদের অজ্ঞান নাশ করে... এই জ্যোতির জ্যোতি প্রতীক প্রদীপ আমাদের মন কে উদ্দীপিত করে সেই পরমাত্মা কে লাভ করার জন্য তীর বেগে আমাদের মন তাঁর দিকে ধাবিত হয়। এই পরমাত্মাকে লাভ করলে সকল প্রকার দুঃখের ও ভববন্ধনের নিবৃত্তি হয়।চিরকালের মতো ভক্ত সাধক ভব বন্ধন থেকে মুক্তি লাভ করেন।
🌺এইযে পঞ্চভূত বললাম, এই পঞ্চ ভূত জগতরুপী কার্য ব্রহ্মের প্রতীক।
আসল কথা, এই জগত রুপী কার্যব্রহ্মের গন্ডিকে অতিক্রম করা। আর এই অতিক্রম করলেই পরমব্রহ্ম সচ্চিদানন্দকে লাভ করা যায়।
আর এই পঞ্চ ভূতকে পূজ্য দেবতার চরণে নিবেদন করে দেবতার বিশ্বাবগাহী বিরাট সত্তার সঙ্গে মিলিত হন। এখানেই এই আরতির সার্থকতা।
👣🌼এই আরতির উপচারগুলি যেমন পঞ্চভূতের প্রতীক আবার বিষয় প্রপঞ্চের ও প্রতীক। যেমন:-
দ্বীপ রূপের প্রতীক। শঙ্খ স্থিত জল-রসের প্রতীক। পুষ্প গন্ধের প্রতীক। চামর বীজন-স্পর্শের প্রতীক।
আর ঘণ্টা বাজাতে বাজাতে যে আরতি হয়, সেই ঘণ্টাধ্বনি ও শব্দের প্রতীক।
এই আরতির মাধ্যমে সমস্ত উপকরণ ও প্রতীক দেবতা কে উৎসর্গ বা নিবেদন করে, নিজেকে তাঁর চরণে সম্পূর্ণরূপে সমর্পণ করেন।
💐🪔আমরা গৃহস্থবাড়িতে এত উপকরণ না পেয়ে শুধুমাত্র প্রদীপ জ্বালাই। তার অর্থ পরমাত্মা জ্যোতিস্বরূপ।
মনে এইরূপ চিন্তা যে- জ্যোতি রবি, চন্দ্র, বিদ্যুৎ, সুবর্ণ তারকা, এসবই তুমি। আবার এসকল জ্যোতির জ্যোতি ও তুমি। এবং তুমি জ্যোতি রূপে অবস্থিত। তাই তোমাকে এভাবেই ভজনা করি।
এই আরতি একপ্রকার সাংকেতিক পূজা বলা যায়।
🪔🔥প্রথমে ধুপ,ঘৃতের দীপমালা। কর্পূর দীপ ও আরতির অঙ্গ হয়। তারপর জলপূর্ণ শঙ্খ, তারপর বিশুদ্ধ বস্ত্র, পরে সুগন্ধি পুষ্প, সর্বশেষে চামর ও হাতপাখা( সম্ভব হলে)।ইহাই বিধিসম্মত।
আরতি করবার নিয়ম:-
প্রথমে দীপমালা প্রজ্বলিত করে তাকে সম্মুখে একটি ত্রিকোণ মন্ডলের উপর স্থাপন করে অর্চনার দ্বারা দেবতাকে নিবেদন করতে হয়। দীপ বহুশিখাযুক্ত ও অযুগ্ম অর্থাৎ এক,তিন, পাঁচ ইত্যাদি বিষম সংখ্যায় হবে।
🐾🤘🥀দীপমালা অর্চনা ও নিবেদন করার পর, তা ডান হাতে উঠিয়ে বাম হাতে ঘণ্টা বাজাতে বাজাতে মূলমন্ত্র জপ অথবা দেবতা স্তোত্র পাঠ করতে করতে আরতি করতে হয়।
🥀🥀🥀 দীপমালা দেবতার শ্রী চরণে চারবার, নাভিদেশে দুবার, মুখমন্ডলে একবার, এবং সর্বাঙ্গে সাতবার ঘুরাতে হয়। তবে মুখমন্ডলে সাধারণত তিনবার ঘোরানো হয়।
🌿🌿🌺🌺🌸🌸
আরতির আগে আচমন, প্রাণায়াম, বিভিন্ন প্রকার শুদ্ধি, নাস্যাদি, ও একটু জপ করে মনে মনে দেবতাকে আমন্ত্রণ করে আসনে বসানো হয়। পরে ফুল, চন্দন, ধূপ, দীপ ও নানাবিধ সুখাদ্য নিবেদন করে তাঁর সেবা করা হয়।
ঠিক যেমন আপন কোন পূজনীয় ব্যক্তি কে সেবা করা হয়।
🌷💥🪔এই নিরাজন বা আরতি করলে যে কোন পূজা তা মন্ত্র বর্জিত হোক আর ক্রিয়া বর্জিত হোক ফলবতী হবেই। যিনি এই আরতি দ্বারা শ্রী ভগবানের পূজা করেন তিনি ইহলোক এবং পরলোক উভয়লোকে মুক্তি প্রাপ্ত হন। এটাই শাস্ত্রতে রয়েছে। আর যিনি ভক্তিচিত্তে দর্শন করেন তিনিও সমান ফলভোগী হন। সাত জন্ম পর্যন্ত তিনি বর্ণশ্রেষ্ঠ দ্বিজ কুলে উৎপন্ন হয়ে অন্তে তাঁর পরমপদ লাভ করেন।
🤘🔥🪔💥💥
মন্ত্রহীনং ক্রিয়াহীনং যৎকৃতং পূজনং হরেঃ। সর্বং সম্পূর্ণতামেতি কৃতে নীরাজনে শিবে।
🤘🪔🌹
নীরাজনেন যঃ পূজাং করোতি বরবর্ণিনি।
অমৃতং প্রাপ্নুয়াৎ সোহপি ইহলোকে পরত্র চ।
🪔👣🌷
নিরাজনস্য যঃ পশ্যেদ্দেবস্য চক্রিণঃ।
সপ্তজন্মানি বিপ্রঃ স্যাদন্তে চ পরমং পদম্।
🌿🥀🥀🥀🪔
উপরের অর্থগুলি ও শ্লোক শাস্ত্রে বর্ণিত।🌺🙏🪔
জয় মা জয় ঠাকুর জয় স্বামীজি সকলের মঙ্গল কর🪔🙏🙏🙏🌺
শ্মশানে কেন মা কালীর পূজা হয় ?
“শ্মশান” শব্দের অর্থ হল শম স্থান। মৃত স্থান।চলতি কথায় যেখানে শবদাহ করা হয় সেই ক্ষেত্র শ্মশান ভূমি নামে পরিচিত।করালবদনী আদ্যাশক্তি মায়ের বিচরণ ক্ষেত্র এই শ্মশান।মা কালীকে ধ্বংসের দেবী বলা হয়।
এই “ধ্বংস” বলতে সর্বনাশ করা নয়। এর অর্থ হল
“সংহরন”।অর্থাৎ দেবী নিজেই এই সমগ্র বিশ্বব্রহ্মাণ্ড রচনা করেছেন।আবার তিনিই গুটিয়ে নেন।ঠিক যেমন মাকড়শা নিজেই জাল বোনে আবার নিজেই গুটিয়ে নেয়।জীব কর্মফল ভোগান্তে মায়ের কোলে আশ্রয় পেয়ে পায় অসীম শান্তি ও আনন্দ।এই শ্মশান তাই মাকালীর ক্রীড়া ক্ষেত্র।শ্মশানকে বৈরাগ্যভূমি বলা হয়।
শ্মশানকে তপঃ সাধনার ভূমি বলা হয় । ১০ মিনিট
শ্মশানে বসে থাকলে জড় দেহের নশ্বরতার প্রতিচ্ছবি আমাদের চোখের সামনে আসে।জীব তাঁর খাঁচা নিয়ে বড়ই অহংকার করে , কিন্তু খাঁচা থেকে পাখী মুক্ত হলে খাঁচা শ্মশানে একমুঠো ভস্মে পরিণত হয়। জ্ঞানী গণ এই তত্ত্ব উপলব্ধি করে দেহ সুখ বিসর্জন দিয়ে সাধন
ভজনে মন দেয়। শ্মশান কেই তাই তপঃ সাধনার কেন্দ্র বলা হয় ।।শ্মশানে কেন মা কালীর পূজা হয় ?
“শ্মশান” শব্দের অর্থ হল শম স্থান। মৃত স্থান।চলতি কথায় যেখানে শবদাহ করা হয় সেই ক্ষেত্র শ্মশান ভূমি নামে পরিচিত।করালবদনী আদ্যাশক্তি মায়ের বিচরণ ক্ষেত্র এই শ্মশান।মা কালীকে ধ্বংসের দেবী বলা হয়।
এই “ধ্বংস” বলতে সর্বনাশ করা নয়। এর অর্থ হল
“সংহরন”।অর্থাৎ দেবী নিজেই এই সমগ্র বিশ্বব্রহ্মাণ্ড রচনা করেছেন।আবার তিনিই গুটিয়ে নেন।ঠিক যেমন মাকড়শা নিজেই জাল বোনে আবার নিজেই গুটিয়ে নেয়।জীব কর্মফল ভোগান্তে মায়ের কোলে আশ্রয় পেয়ে পায় অসীম শান্তি ও আনন্দ।এই শ্মশান তাই মাকালীর ক্রীড়া ক্ষেত্র।শ্মশানকে বৈরাগ্যভূমি বলা হয়।
শ্মশানকে তপঃ সাধনার ভূমি বলা হয় । ১০ মিনিট
শ্মশানে বসে থাকলে জড় দেহের নশ্বরতার প্রতিচ্ছবি আমাদের চোখের সামনে আসে।জীব তাঁর খাঁচা নিয়ে বড়ই অহংকার করে , কিন্তু খাঁচা থেকে পাখী মুক্ত হলে খাঁচা শ্মশানে একমুঠো ভস্মে পরিণত হয়। জ্ঞানী গণ এই তত্ত্ব উপলব্ধি করে দেহ সুখ বিসর্জন দিয়ে সাধন
ভজনে মন দেয়। শ্মশান কেই তাই তপঃ সাধনার কেন্দ্র বলা হয় ।।
বহুযুগ থেকে অনেক সাধক সাধিকারা সাধন ভজনে নিমগ্ন হয়।মৃত্যু কাউকে ছাড়ে না। এক রূপবতী অপ্সরা তুল্যা কন্যার মৃত্যু হলে শ্মশানে তার দেহ এক মুঠো ভস্ম হয়।
অপরদিকে এক কুৎসিত বিকৃত চেহারার ব্যক্তির মৃত্যু হলে তাঁর দেহের পরিণতিও এক মুঠো ছাই।
মৃত্যুর কাছে কোন ভেদাভেদ নেই। ধনী
গরীব নির্ধন কাঙ্গাল সকলের মৃত্যুর পর দেহ ভস্মেই পরিণত হয়।সাধুগণ এই তত্ত্ব জানেন। কালের করাল গ্রাস থেকে কারোর মুক্তি নেই। তাই কালের কাল
মহাকালকে গ্রাসকারীনি আদ্যাশক্তি মহামায়া কালীর
উপাসনাতেই নিমগ্ন হন।
কাম, ক্রোধ, লোভ, হিংসা, অহংকার, বাসনা গ্রস্ত এই শরীর । আত্মার এই সকল বোধ নেই।দেহান্তে এই রিপুগণের ক্রীড়া ক্ষেত্র শরীরটি জলন্ত চিতাতে ভস্ম হয়। রিপু গনের নাশ হলেই সাধকের মনে বৈরাগ্য জাগ্রত হয়।
তাই এই রিপুর
খেলার মাঠ শরীর টি জলন্ত চিতায় দগ্ধ হয় বলে মা কালী শ্মশানে বিরাজ করেন।মা তারা জলন্ত চিতায় অধিষ্ঠান করেন।ভগবতী ছিন্নমস্তা পদতলে মদন রতি দলিতা করেন।এই হোলো শ্মশানের পরিচয়।
শ্মশান মন্দিরের মতোই পবিত্র। মন্দিরে শাস্ত্র পাঠ করে জড়দেহের পরিণামের কথা বলা হয়। শ্মশানে গেলে সেটার জীবন্ত উদাহরণ সচক্ষে দেখা যায়। তাই শ্মশান
কাম, ক্রোধ, লোভ, হিংসা, অহংকার, বাসনা গ্রস্ত এই শরীর । আত্মার এই সকল বোধ নেই।দেহান্তে এই রিপুগণের ক্রীড়া ক্ষেত্র শরীরটি জলন্ত চিতাতে ভস্ম হয়। রিপু গনের নাশ হলেই সাধকের মনে বৈরাগ্য জাগ্রত হয়।
তাই এই রিপুর
খেলার মাঠ শরীর টি জলন্ত চিতায় দগ্ধ হয় বলে মা কালী শ্মশানে বিরাজ করেন।মা তারা জলন্ত চিতায় অধিষ্ঠান করেন।ভগবতী ছিন্নমস্তা পদতলে মদন রতি দলিতা করেন।এই হোলো শ্মশানের পরিচয়।
শ্মশান মন্দিরের মতোই পবিত্র। মন্দিরে শাস্ত্র পাঠ করে জড়দেহের পরিণামের কথা বলা হয়। শ্মশানে গেলে সেটার জীবন্ত সচক্ষে দেখা যায়। তাই শ্মশান
মা কালীর এত প্রিয় স্থান ।
রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের প্রতীক :
মিশনের প্রতীক চিহ্নের নক্সা করেন স্বামীজি নিজে । প্রতীকের ব্যাখ্যায় স্বামীজি বলেন , ছবির তরঙ্গায়িত জল কর্মের প্রতীক , পদ্মফুল ভক্তি ও উদীয়মান সূর্য জ্ঞানের প্রতীক । ছবিটিকে ঘিরে থাকা সর্প যোগ ও কুণ্ডলীনি শক্তি জাগরণ এবং ছবির রাজহংস পরমাত্মার প্রতীক । অর্থাৎ কর্ম জ্ঞান ও ভক্তি যোগের সমন্বয়ে পরমাত্মার জাগরণই হলো রামকৃষ্ণ মিশনের মূখ্য উদ্দেশ্য ।।
-----::: জ্ঞান ও ভক্তি :::------
"১> শিবাংশে জন্মালে জ্ঞানী হয় , ব্রহ্ম সত্য জগৎ মিথ্যা এই বোধের দিকে মন যায় । বিষ্ণু অংশে প্রেমভক্তি হয় ।
২> জ্ঞানীর জড় সমাধি হয়--- 'আমি' থাকে না । ভক্তিযোগের সমাধিকে চেতনা সমাধি বলে । এতে সেব্য সেবকের, রস রসিকের, আস্বাদ্য আস্বাদকের 'আমি' থাকে । খুব উঁচু ঘর না হলে একাধারে জ্ঞান ও ভক্তি দুই-ই হয় না ।
৩> শুদ্ধ জ্ঞান ও শুদ্ধ ভক্তি এক । শুদ্ধ জ্ঞান যেখানে, শুদ্ধা ভক্তিও সেইখানে নিয়ে যায় । সেখানে (অদ্বৈত অবস্হায়) সব শিয়ালের এক রা ।
৪> জ্ঞানীর ভিতর একটানা গঙ্গা বহিতে থাকে । সে সর্ব্বদা স্ব-স্বরূপে থাকে । ভক্তের একটানা নয় -- জোয়ার ভাঁটা । কখনো সাঁতার দেয় , কখনো ডুবে, কখনো উঠে । যেমন জলের ভিতর বরফ টাপুর টুপুর, টাপুর টুপুর করে হাসে,কাঁদে, নাচে গায় ।
৫> জ্ঞান হলেই মুক্তি, যেখানে থাকে-- ভাগাড়েই মৃত্যু হোক, আর গঙ্গাতীরেই হোক । তবে অজ্ঞানের পক্ষে গঙ্গাতীর ।
৬> জ্ঞান পুরুষ । ভক্তি স্ত্রীলোক, জ্ঞান সদর মহল পর্যন্ত যেতে পারে । ভক্তি অন্দর মহলে যায় ।
৭> ঈশ্বরই কর্তা , আর বাকি সব অকর্ত্তা- এর নাম জ্ঞান ।
৯> 'ভক্তির আমি' তে অহঙ্কার হয় না, অজ্ঞান করে না ।
১০> ভক্তি দ্বারাই মুক্তি হয় , তা ব্রাহ্মণ শরীর না হলে হয় না এমন নয় । শবরী ব্যাধের মেয়ে, রুহিদাস সৎ শুদ্র ছিল, এদের ভক্তির দ্বারাই মুক্তি হয়েছে ।
১১> ভক্তি পথেও ব্রহ্মজ্ঞান হয় , ভক্তের 'আমি' ও যায় । তখন ব্রহ্মজ্ঞানে সমাধিস্থ । কিন্তু বরাবর নয় । সা, রে, গা, মা,পা , ধা, নি ----নি - তে অনেকক্ষন থাকা যায় না ।
১২> তাঁতে মগ্ন হলেই আর অসৎুদ্ধি, পাপবুদ্ধি থাকে না । কথাটা এই--তাঁকে ভালবাসা ।
১৩> কোন কামনা নাই, তাঁকে ভালবাসা , এটি বেশ । এর নাম অহৈতুকি ভক্তি । শুদ্ধা ভক্তি দ্বারা তাঁকে পাওয়া যায় । নিস্কাম ভক্তিই আসল । যে লোক বড় মানুষের কাছে কিছু চেয়ে ফেলে সে আর খাতির পায় না ।
১৪> যাদের রাগভক্তি ঈশ্বর তাদের ভার নেন । বৈধিভক্তি করতে করতে রাগভক্তি হয় । কারু কারু রাগভক্তি ছেলেবেলা থেকেই আছে । ছেলে বেলা থেকেই ঈশ্বরের জন্য কাঁদে । যেমন প্রহ্লাদ । ঈশ্বরের উপর অনুরাগ, প্রেম এলে জপ, তপ, কর্ম্মত্যাগ হয়ে যায় । হরি-প্রেমে মাতোয়ারা হলে বৈধিকর্ম করবে কে ? বৈধিভক্তি হতেও যেমন , যেতেও তেমন । কিন্তু রাগভক্তির পতন নাই ।
১৫> ভক্তি কামনা কামনার মধ্যে নয় । যেমন হিঙ্চে শাক শাকের মধ্যে নয় । মিছরি মিষ্টি মিষ্টির মধ্যে নয় । ওঁকার শব্দের মধ্যে নয় । হিঙ্চে শাকে পিত্ত নাশ হয়, মিছরিতে অম্বল নাশ হয় ।"
…………শ্রীশ্রীঠাকুর রামকৃষ্ণ পরমহংস দেব ।
প্রণাম ঠাকুর জয় ঠাকুর, সবার মঙ্গল করো প্রভু……
🌸🌸 *।।সাগর-দর্শন।।* 🌸🌸
*ঠাকুর, শ্রীম'কে বললেন, "আমাকে একদিন বিদ্যাসাগরের কাছে নিয়ে চলো। সাগর দেখতে আমার বড্ড ইচ্ছে করে।" শ্রীম বিদ্যাসাগরের বিদ্যায়তনের 'মাস্টার'। বিদ্যাসাগর যে সাধু সন্ন্যাসী, ভগবান পছন্দ করেননা তিনি বিলক্ষণ জানেন। তাই ঠাকুরের সামনে একটু কিন্তু কিন্তু করে বললেন, "ওনার সাথে আর দেখা করে কি হবে? উনি তো ভগবান ফগবান কিচ্ছু মানেন না।"*
*ঠাকুর নাছোড়বান্দা। তিনি বিদ্যাসাগরকে দেখবেন। বললেন, "সে না মানুন, তাতে কি! উনি একদিকে বিদ্যেসাগর, এক দিকে দয়ার সাগর এমন মানুষকে চোখে দেখবো না?' শ্রীম বললেন, "উনি খুব কঠিন মানুষ...আপনি হয়ত আঘাত পাবেন।"*
*ঠাকুর তবু গোঁ ধরে রইলেনই। তিনি সাগর দর্শন করবেন। বাধ্য হয়ে শ্রীম বললেন, "আচ্ছা বেশ। ওনাকে বলে দেখি।"*
*পরদিন শ্রীম বিদ্যাসাগরকে জানালেন, "দক্ষিণেশ্বরের কালীবাড়ির ঠাকুর রামকৃষ্ণ আপনার দর্শনপ্রার্থী।" সে সময় রামকৃষ্ণকে চেনেন না এমন মানুষ নেই। বিদ্যাসাগর কিছুটা বিস্মিত হলেন। তারপর ঈষৎ বিব্রত চিত্তে বললেন, "তুমি তো জানো মাস্টার... আমি ওসব...।" শ্রীম বললেন, "বলেছিলাম। তবে উনি ঠিক তেমন সাধু সন্ন্যাসীও নন।"*
*বিদ্যাসাগর জানতে চাইলেন, "গেরুয়া পরেন?" শ্রীম বললেন "না। তিনি লালপেড়ে ধুতি পরেন, জামা পরেন, জুতো পরেন। তক্তার ওপর বিছানায় শোন, আবার মশারিও খাটান"। বিদ্যাসাগর অবাক! "এ কেমন পরমহংস তোমাদের? কোনো ভড়ং টড়ং নেই বলছো?" শ্রীম বললেন, "না। রানী রাসমণির কালীবাড়িতে পুজো করেন, আর সারাক্ষণ ঈশ্বরচিন্তা করেন।"*
*বিদ্যাসাগর হেসে ফেললেন, "আচ্ছা আচ্ছা। তাঁকে নিয়ে আসবে একদিন। এত করে যখন বলছেন।"*
*ঠাকুর সাগর দর্শন করতে চেয়েছিলেন। এক্ষণে সাগরও ঠাকুর দর্শন করতে চান। শ্রীমর সংবাদে খুশি হলেন ঠাকুর। শ্রীম বললেন "কবে যাবেন? আজ, কালের মধ্যেই?" ঠাকুর যেন ধ্যানমগ্ন কন্ঠে বললেন, "যে কোনো দিন কি আর সাগর দর্শন হয় গো? সাগর দর্শন করতে যাব এই শনিবার। ঠিক বিকাল চারটেয়। ওদিন শ্রাবণের কৃষ্ণাষষ্ঠী। বড় ভালো দিন।*
*১৮৮২ সালের একটা দিন। বিদ্যাসাগরের বয়স বাষট্টি ছুঁইছুঁই। রামকৃষ্ণ ছেচল্লিশে দৌড়াচ্ছে। সাগর তখন বাদুড় বাগানে থাকেন। ঠিক চারটে বাজতে মিনিট দুয়েক বাকি, একটি ঘোড়ার গাড়ি এসে দাঁড়ালো বিদ্যাসাগরের বাড়ির নিকটে। গাড়ি থেকে নামলেন ভবনাথ, মহেন্দ্রনাথ (শ্রীম), হাজরা ও ঠাকুর রামকৃষ্ণ স্বয়ং। বাড়ির ভিতর ঢুকতেই ঠাকুরের চোখ জুড়িয়ে গেল। কি সুন্দর বাহারি ফুলের গাছ। যেন নিজের অজান্তেই বলে ফেললেন, 'আহা, বিদ্যাসাগরের ভেতরটা ভারি নরম গো।' সিঁড়ি ভেঙে দোতলায় এলেন তিনি। উত্তরে একটি ঘর, পূবদিকে বিশাল বৈঠকখানা, পাশেই একচিলতে শোবার ঘর। কোনোরকম আভিজাত্যের চিহ্ন নেই। প্রত্যেক ঘরের দেওয়ালে সারি সারি বই! এই এত্তবই লোকটা পড়েছেন? হেসে ফেললেন ঠাকুর। বড্ড বিষন্ন হাসি। "এ তো সবই অবিদ্যা! তিনি কই? তাঁকে জানাই তো আসল। এত পড়েছে লোকটা অথচ সে সেই এক-কে জানেনি।"*
*বিদ্যাসাগর বসার ঘরেই ছিলেন। এগিয়ে এলেন ঠাকুরকে অভ্যর্থনা জানাতে। মুখোমুখি দর্শন হল, ঠাকুর দেখলেন সাগরকে। আর সাগর দেখলেন ঠাকুর। ঠাকুরই প্রথম কথা তুললেন, "এতদিন কত খাল বিল হদ্দ নদী দেখেছি, এখন সাগরে এসে পড়লুম গো।" বিদ্যাসাগর মহাশয় রসিকতা করে বললেন "এসেই যখন পড়েছেন, নোনাজল কিছুটা নিয়ে যান।" ঠাকুর বললেন "নোনা জল কি গো! তুমি যে ক্ষীর সমুদ্র।"*
*কথা শুরু হল। পরমহংস পরম আত্মীয়তায় বিদ্যাসাগরের দানধ্যানের প্রশংসা করলেন। বিদ্যার প্রশংসা করলেন। বাহুল্য বর্জিত অনাড়ম্বর জীবনের প্রশংসা করলেন। সাগর সব শুনলেন৷ মনে মনে আনন্দও পেলেন। তার ইচ্ছা হল প্রায় নিরক্ষর এই মানুষটির দৌড় দেখা যাক। ষড়দর্শনে মহাপণ্ডিত তিনি। ঠাকুরকে জিজ্ঞাসা করলেন, 'ব্রহ্ম কি?' ঠাকুর উত্তর দিলেন, "সমস্ত বিদ্যার ওপরে তিনি। বিদ্যা দিয়ে তার নাগাল পাওয়া যায়না"। বিদ্যাসাগর বললেন, "অর্থাৎ...?"*
*ঠাকুর বললেন, "এ জগতে বিদ্যাও মায়া, অবিদ্যাও মায়া। জ্ঞান ভক্তিও আছে, আবার কামিনীকাঞ্চনও আছে।কিন্তু সার কথা কি জানো? ব্রহ্ম হল নির্লিপ্ত। তিনি যেন প্রদীপের আলো। কেউ সেই আলোর সামনে বসে ভাগবত পড়ে। কেউ আবার আদালতের কাগজ জাল করে। তাতে প্রদীপের কিছু আসে যায়না। তার কাজ আলো হয়ে জ্বলে থাকা৷ ব্রহ্মও কতকটা তেমনই।"*
*বিদ্যাসাগরের চোখে অপার বিস্ময়! শাস্ত্রের কঠিন শ্লোকের এত সহজ ও গভীর ব্যাখ্যা তিনি এর আগে শোনেননি। আবার যার কাছ থেকে শুনলেন তিনি প্রায় নিরক্ষর, এক বামুন ঠাকুর। এও কি সম্ভব? ঠাকুরের থামার বালাই নেই। গড়গড় করে বলে চলেছেন, "শোনো বিদ্যাসাগর, বেদ, পুরাণ তন্ত্র ষড়দর্শন সবই এঁটো। একমাত্র ব্রহ্ম কোনোদিন এঁটো হল না। ব্রহ্ম যে কি আজ পর্যন্ত কেউ বলতে পারেননি।"*
*বিদ্যাসাগর বাধা দিয়ে বললেন, "কিন্তু বেদে যে..." ঠাকুর হাসলেন। "জানি গো জানি, তোমাদের বেদে কি আছে। বেদে আছে বটে ব্রহ্ম আনন্দস্বরূপ, সচ্চিদানন্দ।"*
*বিদ্যাসাগর যেন দোয়ালা শিশুর মত চমকে উঠলেন! এ লোকটা বেদ ব্রহ্ম কি বলেছে তাও জানে! আশ্চর্য। ওদিকে ঠাকুর বলে চলেছেন, "একজন সাগর দেখতে এলো। তাকে জিজ্ঞাসা করা হল কেমন সমুদ্দুর দেখলে গো? সে বললে আহা! কি দেখলাম। কি হিল্লোল! কি কল্লোল! বেদে যারা ব্রহ্মের সংজ্ঞা লিখেছেন তারাও কতকটা এমনই। শুকদেবই বলো আর যাই বলো, সবাই সেই ব্রহ্মসাগরের তটে দাঁড়িয়ে আছে। কেউ ব্রহ্মসাগরে নামেনি।*
*বিদ্যাসাগর আচ্ছন্ন। মোহগ্রস্ত। যেন কোনো জাদুকর সম্মোহিত করেছে তাঁকে। বাহ্যিক কাঠিন্য লুপ্ত। তিনি জানতে চাইলেন "ব্রহ্মজ্ঞান কি পাওয়া সম্ভব?" ঠাকুর বললেন "সম্ভব। তার জন্য সমাধি চাই। কিন্তু সমাধিস্থ হলে বিচার একেবারেই বন্ধ থাকে। কাউকে সেই উপলব্ধির কথা জানানো যায়না। একবার একটা নুনের পুতুল সাগরের গভীরতা মাপতে গেল। যেই সে সাগরের জলে ডুবলো অমনি গলে গেল। তার আর গভীরতা মাপা হল না। ঘি যতক্ষণ কাঁচা ততক্ষণই তার কলকলানি, জমাট ঘিয়ের আর শব্দ কই? শূন্য কলসীতে জল ভরছো ভক-ভক ভক-ভক শব্দ। যেই জল ভর্তি হল আর শব্দ নেই। ব্রহ্ম কতকটা এমনই।*
*বিদ্যাসাগর জানতে চাইলেন, "ব্রহ্ম আর ভগবান কি এক?" ঠাকুর বললেন, "যিনি ব্রহ্ম তিনিই ভগবান। তবে ব্রহ্ম নির্গুণ, নিরাকার। ভগবান ষড়ৈশ্বর্যপূর্ণ। নিরাকার ব্রহ্মের একা থাকতে ভালো লাগেনা। তাই তিনি সাকার হলেন। এক থেকে বহু হলেন। ব্রহ্ম থেকে ভগবান হলেন।"*
*বিদ্যাসাগর নীরব। এ কি কথামৃত শুনছেন তিনি! ঠাকুর প্রশ্ন করলেন, "আচ্ছা বিদ্যাসাগর, তুমি তো মহাপণ্ডিত। বলো তো গীতার এক কথায় অর্থ কি হবে?" বিদ্যাসাগর ভাবলেন। এক কথায় গীতার অর্থ? অসম্ভব৷ উত্তরটা ঠাকুর নিজেই দিলেন "গীতা শব্দটাকে পর পর দশবার উচ্চারণ করো। দেখো তুমি উচ্চারণ করছো ত্যাগী-ত্যাগী। হেসে ফেললেন ঠাকুর। এই হচ্ছে গীতার শিক্ষা। সব ত্যাগ করে ভগবানকে চাও। শোনো বিদ্যাসাগর অনেক পড়লেই পণ্ডিত হওয়া যায়না। ভগবানকে ভালোবাসতে শেখো।যতদিন পর্যন্ত 'আমার আমার' করবে জানবে সেটাই অবিদ্যা। আর যেই তুমি ভাববে আমার বলতে কিছু নেই সবই ভগবানের, সবই ঈশ্বরের, জানবে তুমি অবিদ্যা থেকে বিদ্যায় এলে।"*
*ঠাকুরের বিদায়ের ক্ষণ উপস্থিত। বিদ্যাসাগর আবারও তাকালেন রামকৃষ্ণের দিকে। বিদ্যা-সাগর মিশে গেলেন 'প্রজ্ঞাপারমিতায়'।*
🙏🏻🙏🏻🙏🏻🌹🙏🏻🙏🏻🙏🏻
*তথ্যঋণ: রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়।*
*[সংগৃহীত]*
প্রভু যীশু ও রামকৃষ্ণ মিশন ::
যীশুর সঙ্গে আমাদের রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের একটা নিবিড় সম্পর্ক আছে। আজকের সন্ধ্যা খ্রীষ্টমাস ইভ, বা যীশুর জন্মের প্রাক্ সন্ধ্যা যা রামকৃষ্ণ সঙ্ঘ গড়ে ওঠার এক দিকচিহ্ন। ১৮৮৬ সালে ঠাকুরের দেহত্যাগের পর মানসিক ভাবে আশ্রয়হীন বালক ভক্তেরা ছত্রভঙ্গ। তাদের বাবুরাম মহারাজের মা মাতঙ্গিনী দেবী আঁটপুরে কদিন কাটিয়ে যেতে ডাকলেন। প্রথমে নরেন্দ্রনাথ ও বাবুরামের যাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু যাওয়ার খবর পেতে দলটি সংখ্যায় বড় হয়ে উঠল। নরেন্দ্র,বাবুরাম, শরৎ, শশী, তারক, কালী, নিরঞ্জন, গঙ্গাধর ও সারদা এই ন জনের দল তখনকার তারকেশ্বর লাইনের ট্রেনে চেপে সঙ্গে আনা তানপুরা, তবলা সহযোগে গান গাইতে গাইতে মহানন্দে পৌঁছলেন হরিপাল। তারপর সেখান থেকে ঘোড়ার গাড়িতে চেপে আঁটপুর। চারিদিক সবুজে ঘেরা গাছ-গাছালির ফাঁকে পুকুর, ধানক্ষেতের উদার উন্মুক্ত প্রকৃতি, গরুর গাড়ি চলা রাস্তায় গাড়োয়ানের গলায় মেঠো গানের আবেশ তাঁদের ঠাকুরকে হারানোর দুঃখ খানিক প্রশমিত করল। ভৃত্যের প্রাচুর্য্য থাকলেও মাতঙ্গিনী দেবী ব্যক্তিগত ভাবে ছেলেদের আদর যত্নের দিকে নজর রাখলেন। তাঁরা ঠাকুরের আদর্শ ও ভাবের আলোচনা, সেই সঙ্গে ভগবৎ চিন্তায় নিমগ্ন হয়ে রইলেন। নরেন্দ্রনাথের শাস্ত্রচর্চা, ভজন সংগীত, নামসংকীর্ত্তনে সবাই যেন পুরোন কাশীপুরের দিনগুলো ফিরে পেলেন। মন এক উচ্চসুরে বাঁধা সবসময়। শীতের রাত, বাইরে ধুনি জ্বেলে ধ্যানে বসা এক নিরালম্ব জীবনের ভাব এনে দিচ্ছে মনে। এইরকম এক রাতে রোজকার মত ধুনি জ্বেলে তাঁরা ধ্যানমগ্ন। নক্ষত্রখচিত আকাশের তলে ধুনির আগুনের শিখায় দীপ্ত ধ্যানমগ্ন মুখগুলির মধ্যে হঠাৎ নরেন্দ্রনাথ যীশুখ্রীষ্টের অপরিসীম ত্যাগ, তপস্যাসমন্বিত জীবনকথা ও তাঁর শিষ্যদের যীশুর বাণী প্রচারে আত্মবিসর্জনের কথা প্রাণস্পর্শী ভাষায় বলে চললেন। সে বাক্যস্রোতে সকলের জীবনের লক্ষ্য যেন স্থির হয়ে গেল। নরেন্দ্রনাথের তীব্র প্রেরণামূলক বর্ণনায় সকলে সেই ধুনির সামনে ঠাকুরের ভাবপ্রচারে নিজ নিজ জীবনদানের ও সংসারত্যাগের অঙ্গীকার করলেন। তখন একজনের হঠাৎ মনে পড়ল আজ যীশুর জন্মদিনের প্রাক সন্ধ্যা—খ্রীষ্টমাস ইভ। সকলে বুঝলেন দৈব নির্দ্দেশে আজ নরেন্দ্রনাথের মুখ দিয়ে ঠাকুর এ শুভ সঙ্কল্প করিয়ে নিলেন। বস্তুত কাশীপুরে ঠাকুরের হাতে যদি সঙ্ঘের বীজ পোঁতা হয়ে থাকে তো আঁটপুরে তার অঙ্কুরোদ্গম হল, আর বরানগর মঠে হল তার বেড়ে ওঠার পরিচর্য্যা। আজও ধুনিমণ্ডপে সে কথা স্মরণ করে ধ্যানের আসর বসে।
যীশুর বারজন শিষ্য। ঠাকুরও বুড়োগপাল দাদাকে দিয়ে বারটি গেরুয়া কাপড় আনিয়েছিলেন। পরে অবশ্য তাঁর নামে ষোলজন সন্ন্যাস নেন। সেন্ট পিটারকে যীশু বলেছিলেন ‘তুমি হবে আমার ভিত্তিপ্রস্তর, যার ওপরে ঈশ্বরের সাম্রাজ্য গড়ে উঠবে’। ঠাকুর নরেন্দ্রনাথ সম্পর্কে লিখিত আদেশ দিয়েছিলেন—‘নরেন শিক্ষে দিবে, যখন ঘরে বাইরে হাঁক দিবে’। সেন্ট পিটারকে বিপরীত বিশ্বাসীদের মধ্যে যীশুর ভাব প্রচার করার শাস্তি স্বরূপ তাঁকে উলটো করে ঝুলিয়ে ক্রুশবিদ্ধ করা হয়েছিল। বিপরীতভাবে নিমগ্ন বিশ্ববাসীকে ঠাকুরের উদার ভাব দিতে স্বামিজীকে সেন্ট পিটারের মত প্রতি রক্তবিন্দু মোক্ষণ করে জীবন দিতে হয়েছিল। দিতে হয়েছিল ‘শিক্ষে’ দেবার আদেশে ‘ঘরে বাইরে’ তমসাচ্ছন্ন নিদ্রায় নিদ্রিত মানুষকে জেগে ওঠার ‘হাঁক’। কোন নির্দিষ্ট মত নয়, পথ নয়, যে যেখানে আছ নিজের ভাবের গণ্ডীর পরিধি বাড়িয়ে এগিয়ে চল, যতদিন না মুক্তি নামক চরম লক্ষ্যে পৌঁছচ্ছ। বিশ্বজনীন এক বাণী দিলেন—‘ওঠো, জাগো, লক্ষ্যে না পৌঁছান পর্য্যন্ত থেমো না।
"শুকনো ডালপালা কাঠকুটো জোগাড় কর .আজ সন্ধে বেলায় ধুনি জ্বালবো" . দলপতির নির্দেশে ওরা সব জোগাড় করল .ওরা বলতে --বাবুরাম ,শরৎ, শশী ,তারক ,কালী ,নিরঞ্জন ,গঙ্গা আর সারদা .বন্ধু বাবুরামের মা'র আমন্ত্রণে ওরা এসেছে আঁটপুর .সন্ধেবেলা ধুনি জ্বালা হল .চারদিকে হিমেল কুয়াশার আস্তরণ .দাউ দাউ করে জ্বলছে ধুনির আগুন...নরেন্দ্রনাথ যীশুর ত্যাগ বৈরাগ্যপূর্ণ উপদেশ গুলি ব্যাখ্যা করে সেন্ট পল সহ অপরাপর খৃস্ট সন্ত দের বৈরাগ্যমন্ডিত জীবনকথা আলোচনা করতে লাগলেন .সংসার ত্যাগ করে খৃস্ট সন্তদের মত একটি পবিত্র সন্ন্যাসী সংঘ প্রতিষ্ঠায় কৃতসংকল্প হলেন এই যুবকেরা .দিনটা ছিল ২৪শে ডিসেম্বর ১৮৮৬ . সেইথেকে রামকৃষ্ণ সংঘে খ্রীষ্টমাস ইভ যথাযথ ধর্মীয় মর্যাদায় পালিত হয়ে আসছে .
○○○🔱🌺: #মায়ের_কথা:🌺🔱○○○
🔸: #স্বামী_সোমেশ্বরানন্দ :🔸
➖〰️➖〰️➖〰️➖〰️➖〰️➖〰️➖
১● যেকোনো রামকৃষ্ণ আশ্রমে যান, দেখবেন ঠাকুর-মা-স্বামীজির ফটো পাশপাশি। আপনার বাড়িতেও আপনি এভাবে রাখেন। কিন্তু প্রশ্ন, এভাবে একাসনে দিব্যত্রয়ীর ছবি রাখা কিভাবে শুরু হয়েছিল?
ঠাকুর ও মায়ের ফটো পাশাপাশি রাখার প্রচলন ছিল আগে থেকেই।স্বামীজির দেহত্যাগের পর এক আশ্রমে ঠাকুর-মা'র ফটোর পাশে একাসনে স্বামীজির ফটো রাখা হয়েছিল। এ দেখে পছন্দ হয়নি এক ভক্তের। স্বামীজি যত বড়ই হ'ন, গুরুর সাথে একই আসনে তাঁকে রাখা কি ঠিক? তিনি শ্রীশ্রীমার কাছে এই প্রসঙ্গ তুললে মা হেসে বলেন : বাবা আজ ঠাকুর থাকলে তিনি নরেনকে কোলে করে রাখতেন, পাশে নয়। অর্থাৎ মা এভাবে তিন জনের ফটো একাসনে রাখাকে স্বীকৃতি দিলেন। তারপর থেকেই এই নিয়ম বিভিন্ন আশ্রমে চালু হয়।
২● মঠ-মিশনে দীক্ষার সময় যে মন্ত্র দেওয়া হয় সেই মন্ত্রগুলির উৎস কি? এ কি শাস্ত্র থেকে, অথবা বেলুড় মঠের তৈরি মন্ত্র? দক্ষিণেশ্বরে ঠাকুর নানা রকম সাধনা শিখিয়েছিলেন শ্রীশ্রীমাকে, বিভিন্ন মন্ত্রও। পরবর্তী কালে মা দীক্ষার সময়ে এই মন্ত্রগুলি ব্যবহার করতেন। কয়েকজন সন্তানকে এ তিনি শেখান এবং দীক্ষা দেবার অনুমতি দেন। এক সন্ন্যাসী তাঁকে জিজ্ঞেস করেন এই মন্ত্রগুলির ফল নিয়ে। মা বলেন: এগুলি সিদ্ধমন্ত্র, ঠাকুরের দেওয়া।
মঠ-মিশনে এই মন্ত্রগুলিই গুরুরা দেন দীক্ষার সময়ে। অতএব আপনি যে মন্ত্র পেয়েছেন দীক্ষার সময়ে গুরুদেবের কাছে, তা ঠাকুর থেকে মা হয়ে গুরুর মাধ্যমে এসেছে আপনার কাছে। এ-বিষয়ে বিশদ আলোচনা রয়েছে "উপাসনা ও প্রার্থনার শক্তি" বইয়ে (প্রকাশক : গিরিজা লাইব্রেরী)।
৩● মা মঠে এলে ঘুরে দেখতেন সবকিছু। প্রাচীন সাধুদের কাছে শুনেছি, মঠে শাকসব্জির চাষ, গরু, পুকুর, সাধুদের থাকার ব্যবস্থা ইত্যাদি দেখে মা খুব খুশি হতেন। তিনি চাইতেন না সাধুরা দৈহিক কঠোরতা করুক। এক সাধুকে বলেছিলেন, তুমি কিছু খেয়ে পূজা করবে। আরেক ব্রহ্মচারী যে নিরামিষ খেতো, তাকে মাছ খেতে নির্দেশ দেন।
মা রান্নাঘরেও যেতেন দেখতে। একবার সেখানে সাধুদের তরকারি কাটতে দেখে মন্তব্য করেছিলেন: বাঃ, ছেলেরা তো বেশ তরকারি কুটতে পারে। এক সাধু তখন মা'কে প্রণাম করে বলেছিলেন, ব্রহ্মময়ীর কৃপা পাওয়া নিয়ে কথা, তা সে তপস্যা করেই হোক কি তরকারি কুটে। মা হেসে সেই কথা সমর্থন করেছিলেন।
৪● স্বামীজির কর্মযোগ নিয়ে যখন কেউকেউ প্রশ্ন তুলছেন, মা তখন দৃঢ়ভাবে কর্মযোগকে সমর্থন করেছেন। কাশীতে আশ্রমের হাসপাতাল দেখে তিনি মন্তব্য করেছিলেন, এ ঠাকুরেরই কাজ। এক ভক্ত যখন জিজ্ঞেস করলেন, কিভাবে তিনি মায়ের সেবা করতে পারেন, শ্রীশ্রীমা বলেছিলেন তাকে উদ্বোধন পত্রিকা বিক্রি করতে।
গৌরী মা'র বালিকা বিদ্যালয়ের প্রতি শ্রীশ্রীমার বিশেষ স্নেহদৃষ্টি ছিল। আশ্চর্য, তাঁর নির্দেশেই গৌরী মা ঐ স্কুলে ইংরেজী পড়ানোর ব্যবস্থা করেন। ভগিনী নিবেদিতার স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের তিনি আশীর্বাদ করেছিলেন। ভক্তদের, এমনকি মহিলাদেরও, মা বলতেন কাজ করতে।
৫● প্রায় ১০০ বছর আগে মা দেহত্যাগ করেছেন। কিন্তু আজও অনেকে তাঁর দর্শন পান, গৃহী-সন্ন্যাসী অনেকেই। বহু সাধুর কাছেই শুনেছি তাদের অভিজ্ঞতা, মা'কে দর্শনের কথা। এমনকি মা যে আজও শক্তি দেন নিঃস্বার্থ কর্মীদের, সাহায্য করেন, রাশ ঠেলে দেন, -- এ সত্যি কথা। প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা অনেক সাধুরই । ।
জিজ্ঞাসু :— গৃহস্থের ধর্ম কি?
গুরুমহারাজ :— বৈদিক ঋষিরা বলেছেন — 'মাতৃদেবাে ভব', 'পিতৃদেবাে ভব', 'আচার্যদেবাে ভব', 'অতিথিদেবাে ভব, 'সত্যং বদ', 'ধর্মং চর।' — এগুলি গৃহস্থের ধর্ম। গার্হস্থ-আশ্রম তাকে বলা হয়, যে গৃহে গর্ভধারিণী মায়ের সেবা হয়, যে গৃহে পিতার সেবা হয়, যে গৃহে গুরু বা জ্ঞানীদের সেবা হয়, অতিথিদের সেবা হয়। এসব না হলে গৃহস্থাশ্রম নয়। যেমন ধরুন দেখা যায় যে, কেউ গর্ভধারিণী মায়ের সেবা করছে না বা মাকে অপমান করছে — অমর্যাদা করছে আবার 'বিশ্বজননী', 'মা-মা' বলে কাঁদছে তাঁর কাছে, এই ভণ্ডামি কিন্তু ধর্ম নয়। অনেকে মাকে খেতে দেয় না, নিজের গর্ভধারিণীকে শ্রদ্ধা করে না, সেবা করে না, অথচ 'মা জগদম্বা' — ''মা জগদম্বা' করছে। এগুলাে ভণ্ডামি। অনেকে নিজের পিতাকে অশ্রদ্ধা করে, অথচ 'বিশ্বপিতা', 'পরমপিতা' করে চ্যাঁচাচ্ছে, এগুলােকে ভণ্ডামি বলা হয়েছে। যে গৃহে মা-বাবা সেবিত হন তাকে গৃহস্থাশ্রম বলে। গৃহে পিতা বেঁচে থাকলে, পিতার সেবা করবেন। পিতা বৃদ্ধ হলে তিনি পুত্রের ঘাড়ে হাত দিয়েই হাঁটবেন। শাস্ত্রে বলা হয়েছে যে, বয়সকালে পিতার হাত হবে পুত্রের হাত, পিতার পা হবে পুত্রের পা। গৃহস্থাশ্রমের এগুলিই ধর্ম। আর স্ত্রীর প্রতি ব্যবহার করবেন বিবেকোচিত। শাস্ত্রে বলছে — ‘পরপীড়নং পাপম্’ — অপরকে পীড়ন করাই পাপ। এই হিসাবে স্ত্রীকে কখনও পীড়ন করবেন না। যদি বলেন, সংসারের সকল সদস্যদের মধ্যে আমাকেই সবটা করতে হবে? আমি বলব, ‘হ্যাঁ, আপনাকেই সব করতে হবে। কারণ আপনি গৃহস্বামী'। গৃহস্বামী বা Guardian কেই এই খেয়ালগুলি রাখতে হবে। স্ত্রীকে কখনও দৈহিক বা মানসিক পীড়ন করবেন না, পিতা-মাতার সেবা করবেন। যাই থাক আপনার, শাক-অন্ন খেয়েও দেখবেন আপনার বাড়িতে শান্তি থাকবে।
গৃহস্থজীবনে শান্তির জন্য প্রয়ােজন কি জানেন? — স্নেহ, ভালােবাসা, মমতা, সেবা ও প্রেম-প্রীতির। পরিবারে হালুয়া-পােলাও কিংবা ফ্রিজ, টি.ভি, ওয়াশিং মেশিন বা বড় বড় প্যালেসের থেকেও এগুলাের বেশী দরকার। এই জীবনবােধটা হারিয়ে গেছে আজকের সমাজে। কর্তব্যসচেতন নয় মানুষ। মানুষ অবিবেকী হয়ে উঠছে বা বলা যায় অবিবেকোচিত হয়ে উঠেছে মানুষের আচরণ। এই অবস্থায় মানুষকে প্রথমেই বিবেকাশ্রিত হতে হবে, তাহলেই তার সংসার গৃহস্থাশ্রম হয়ে উঠবে। শাস্ত্রে ব্রহ্মচর্য, গার্হস্থ, বানপ্রস্থ ও সন্ন্যাস এই যে চারটি আশ্রমের কথা বলা হয়েছে, এই অনুযায়ী গৃহ তাে শুধু গৃহ নয় গৃহস্থাশ্রম। আপনার পিতা যদি জীবিত থাকেন, তাঁকে ভগবৎ-জ্ঞানে সেবা করবেন, আপনার মা যদি জীবিত থাকেন, তাঁকে ভগবতী জ্ঞানে সেবা করবেন, আর আপনার স্ত্রী থাকলে কখনই তার সাথে অবিবেকোচিত ব্যবহার করবেন না, ব্যস — তাহলেই দেখবেন আপনার সংসার শান্তির নীড় হয়ে উঠবে। আর আপনার পুত্র কখনই আমানুষ হবে না, যে গৃহস্থাশ্রমে এইরকম আচরণ হবে সেই গৃহে বা পরিবারে কখনই কুলাঙ্গার জন্মাবে না। কিন্তু হয় উল্টো, আর গৃহস্থাশ্রমের ভণ্ডামির জন্যই এরকম হয় বা সংসারে অশান্তি হয়। এগুলাে জীবের দুর্বলতা
এমন লােকও আছে, যে নিজের মাকে মারধর করে আবার কালীমন্দিরে গিয়ে পুজো দেয়, 'মা দেখা দে, দেখা দে’ও করে। আবার এমন লােকও আছে যে, নারীজাতির গায়ে হাত তুলছে — নিজের স্ত্রীকে মারছে, আবার মায়ের সাধনাও করছে — এগুলাে ভণ্ডামি। চালাকির দ্বারা মহৎ কাজ হয় না। ভগবান কখনই প্রসন্ন হন না এতে। আপনার সংসার শান্তির নীড় বা শান্তিনিকেতন হয়ে উঠবে আপনি শুধু যদি এইগুলিই পালন করেন। দেখবেন সব ঠিক হয়ে যাবে।
["পরমানন্দ কথামৃত" গ্রন্থের প্রথম খণ্ড থেকে সংগৃহীত]
আরতি শব্দের অর্থ কি?
“আ” অর্থে ব্যাপ্তি; “রতি” অর্থে প্রেম, ভালাবাসা ও অনুরাগ। যে মাঙ্গলিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শ্রীভগবানের নিজের প্রীতি বর্ধিত হয় অর্থাৎ তিনি ভক্তের প্রতি প্রসন্ন বা সন্তুষ্ট হন এবং ভগবানের প্রতিও ভক্তের প্রেম, প্রীতি, ভালবাসা, ভক্তি ও অনুরাগ বৃদ্ধি পায় তাকে আরতি বলে।
অতএব আরতি ভগবানের প্রতি ভক্তের অন্তরের গভীর ভাবভক্তি পূর্ণ একটি মহা মাঙ্গলিক অনুষ্ঠান। ভগবানের প্রতি ভক্তের অন্তরের ভাব ও ভক্তির মাধ্যমে, আকুলতা-ব্যাকুলতা প্রকাশের মাধ্যমে ও সম্পূর্ণ আত্মনিবেদনের মাধ্যমে, আরতির অনুষ্ঠান হয় সার্থক ও সুন্দর। ভাব ও ভক্তি শূন্য আরতি তাই কেবল নাচানাচি বা অঙ্গবিক্ষেপ ছাড়া অন্য কিছু নয়। আর ওরকম আরতির মাধ্যমে ভগবানের আশীর্বাদ পাওয়া যায় না কিছুই।
ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের প্রতিষ্ঠাতা যুগাচার্য স্বামী প্রণবানন্দজী মহারাজ বলেছেন, আন্তরিক ভাবভক্তি নিয়ে প্রতিদিন পূজারতির মাধ্যমে আমার শক্তি সকলের মধ্যে সঞ্চারিত হয়। গুরু শক্তি লাভের ইহা একটি অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপায়।
শাস্ত্রীয় পূজার বিধান সহজ নয় বরং জটিলও বলা যায়। কিন্তু আরতির অনুষ্ঠান খুবই সহজ সাধ্য। কারণ আরতির অনুষ্ঠান কেবল মাত্র ভাব ও ভক্তির মাধ্যমে সুসম্পন্ন হয়। যারা শাস্ত্রীয় পূজার বিধি ও মন্ত্র জানেন না তারা ভক্তি ভাবের সাথে একমাত্র আরতির মধ্য দিয়ে সকল পূজার ফল লাভ করতে পারেন। তাই ভাব ও ভক্তি পূর্ণ আরতির অনুষ্ঠান হলো সকল পূজার সার।
শাস্ত্রীয় পূজা যদি বিধিহীন ও মন্ত্রহীন হয়, তবে ভক্তি পূর্ণ আরতির মধ্য দিয়ে তা সম্পূর্ণতা লাভ করে। এ প্রসঙ্গে দেবাদিদেব শিব, দেবী পার্বতীকে বলেছেন-
“মন্ত্রহীনং ক্রিয়াহীনং যৎকৃতং পূজনং হরেঃ।
সর্ব্বং সম্পূর্ণতামেতি কৃতে নীরাজনে শিবে ॥”
অর্থঃ হে দেবী পার্বতী, শ্রীভগবানের পূজা যদি মন্ত্রহীন ও ক্রিয়াহীন হয়, তবে নীরাজন বা আরতির মাধ্যমে তা সম্পূর্ণতা লাভ করে।
নানা উপচারে আরতির অর্থ জানা দরকারঃ
- শ্রীভগবানের প্রতি, সদ্গুরুর প্রতি অর্থাৎ আরাধ্য দেবতার প্রতি ভক্তের আন্তরিক শ্রদ্ধা ও ভক্তি নিবেদনের মাধ্যমে আরতির অনুষ্ঠান হয় সার্থক। কিন্তু সাধারণ নরনারীর তীব্র আসক্তি বিষয়ের প্রতি, ভোগবিলাসের প্রতি, কামনা ও বাসনার প্রতি। সেই বিষয়াসক্তি ত্যাগের জন্যই তো করতে হয় পূজা-আরতির বিশেষ অনুষ্ঠান। শাস্ত্রে বলা হয়েছে, এ বিশ্ব সৃষ্টি হয়েছে পাঁচ প্রকার উপাদান থেকে। তা হলো- ক্ষিতি (মাটি), অপ্ (জল), তেজ (অগ্নি), মরুৎ (বায়ু), ও বোম্ (আকাশ)। উল্লিখিত ৫ (পাঁচ) প্রকার উপাদান আরতির মাধ্যমে শ্রীভগবানকে উৎসর্গ করলে, আর কিছু নিবেদন করতে বাকী থাকে না। মানুষের পাঁচ প্রকার ইন্দ্রিয়, পাঁচ প্রকার বিষয় ভোগের প্রতি আকৃষ্ট হয়। যেমনঃ নাসিকা- গন্ধের প্রতি। চোখ- রূপের প্রতি। জিহ্বা- রসের প্রতি। কান- শব্দের প্রতি। ত্বক (গাত্রচর্ম)- স্পর্শের প্রতি আকৃষ্ট হয় অর্থাৎ বিষয় ভোগের প্রতি আকৃষ্ট হয়।
আরতির উপচার ভগবানের উদ্দেশ্যে, সদ্গুরুর উদ্দেশ্যে নিবেদনের মাধ্যমে উল্লিখিত পাঁচ প্রকার ইন্দ্রিয়ের, পাঁচ প্রকার বিষয় ভোগের আসক্তি হতে মুক্ত হওয়ার জন্য আন্তরিকভাবে প্রার্থনা করতে হয়। প্রণব মঠ ও ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ- এর আরতির নিয়মে বলা যায়-
(১) ধূপ বা ধূপতি মাটি বা গন্ধের প্রতীক স্বরূপ।
ধূপ বা ধূপতির মাধ্যমে, আরতি ক’রে সদ্গুরুর নিকট নাসিকা (নাক) ইন্দ্রিয়ের ভোগ বাসনার (বহির্জগতের গন্ধ যেমন- নানা প্রকার সুগন্ধি কস্মেটিক দ্রব্যাদি) প্রতি আকর্ষণ মুক্ত হতে পারি- সেই প্রার্থনা জানাতে হয়। পক্ষান্তরে পবিত্র পূজার ধূপ, ধূনা, কর্পূর প্রভৃতির গন্ধে খুশি থাকতে পারি সেই পার্থনা করতে হবে।
(২) পঞ্চ প্রদীপ তেজ বা অগ্নির প্রতীক, রূপের প্রতীক।
পঞ্চ প্রদীপ দিয়ে আরতির মাধ্যমে, সদ্গুরুর নিকট চক্ষু ইন্দ্রিয়ের ভোগ বাসনার (বহির্জগতের রূপ দর্শন যেমন- অচিত্র, কুচিত্র, খারাপ দৃশ্য ইত্যাদি) প্রতি আকর্ষণ মুক্ত হতে পারি- সেই প্রার্থনা জানাতে হয়। আরও প্রার্থনা জানাতে হয়, “হে ঠাকুর তোমারই রূপ দর্শনে যেন ধন্য হতে পারি।”
(৩) জলশঙ্খ অপ্ বা জলের প্রতীক, রসের প্রতীক।
জল শঙ্খ দিয়ে আরতি ক’রে সদ্গুরুর নিকট জিহ্বা ইন্দ্রিয়ের ভোগ বাসনা (যেমন- মাছ, মাংস প্রভৃতি খাদ্য দ্রব্য; মদ, বিড়ি, সিগারেট বা অন্যান্য মাদক দ্রব্য) থেকে আসক্তি মুক্ত হতে পারি সেই প্রার্থনা জানাতে হয়। সেই সাথে প্রার্থনা করতে হয়, “হে ঠাকুর, তোমার প্রতি নিবেদিত পবিত্র প্রসাদ গ্রহণ ক’রে যেন জীবনকে ধন্য করতে পারি।”
(৪) চামর ও পাখা মরুৎ বা বায়ুর প্রতীক, স্পর্শ সুখের প্রতীক।
চামর ও পাখা দিয়ে আরতির মাধ্যমে সদ্গুরুর নিকট ত্বক ইন্দ্রিয়ের ভোগ বাসনা (নর-নারীর একে অপরের প্রতি কু-বাসনা নিয়ে শরীর স্পর্শ করা- বহির্জগতের স্পর্শের প্রতীক) হতে আসক্তি মুক্ত হতে পারি- সেই প্রার্থনা জানাতে হয়। সেই সাথে আরও প্রার্থনা করতে হয়, “হে ঠাকুর, তোমার শ্রীচরণ অভিষেক ক’রে, স্পর্শ ক’রে, যেন জীবনকে ধন্য করতে পারি।”
(৫) বিভিন্ন প্রকার বাদ্যযন্ত্রের শব্দ বোম্ বা আকাশের প্রতীক।
ঘণ্টা, ঢাক, কাসর প্রভৃতি বাজিয়ে আরতি করার মাধ্যমে সদ্গুরুর নিকট কর্ণ ইন্দ্রিয়ের ভোগ বাসনা (বহির্জগতের খারাপ শব্দ, পরনিন্দা, সমালোচনা, কু-সঙ্গীত প্রভৃতি শোনার আসক্তি) হতে মুক্ত হতে পারি- সে প্রার্থনা জানাতে হয়। সেই সাথে আরও প্রার্থনা করতে হয়- “হে ঠাকুর, তোমার পবিত্র ভজন সঙ্গীত শুনে, তোমার গুণগান শুনে, যেন জীবনকে ধন্য করতে পারি।”
(৬) ত্রিশূল, তরবারি, চক্র প্রভৃতি শক্তির প্রতীক। ভিতর ও বাইরের শত্র“ দমনের প্রতীক।
তাই ত্রিশূল দিয়ে বা অন্যান্য অস্ত্র দিয়ে আরতি করার মাধ্যমে- ভেতরের শত্র“ (কাম, ক্রোধ, লোভ প্রভৃতি রিপু ও ইন্দ্রিয়ের বিষয়াসক্তি বা ভোগ বিলাসের আসক্তি) থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য সদ্গুরু ভগবানের নিকট আন্তরিক প্রার্থনা জানাতে হবে। সেই সাথে বাইরের শত্র- দুষ্ট, দূর্বৃত্ত, অত্যাচারীদের হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করার জন্য অর্থাৎ আত্মরক্ষা করার জন্য অস্ত্র চর্চা করারও অভ্যাস করতে হবে।
(৭) পুষ্প বা ফুল ভক্তি ও আত্মনিবেদনের প্রতীক।
তাই পুষ্প পাত্র দিয়ে আরতি নিবেদনের মাধ্যমে শ্রীগুরু ভগবানের নিকট প্রার্থনা জানাতে হবে “হে আমার প্রাণের ঠাকুর, আমার এই জীবন কুসুমটিও তোমারই শ্রীপাদপদ্মে ভক্তি অর্ঘ্য রূপে উৎসর্গ করলাম। তুমি কৃপা পূর্বক গ্রহণ ক’রে এই দীন সন্তানকে আশীর্বাদ করো। যেন আমার জীবনকে ফুলের মত পবিত্র করতে পারি অর্থাৎ সৎ চরিত্রবান হতে পারি।”
এভাবে উল্লিখিত সমস্ত উপচারের আরতির মাধ্যমে- গন্ধ, রূপ, রস, শব্দ, স্পর্শ প্রভৃতি ইন্দ্রিয়গুলির বিষয় আসক্তি দূর ক’রে- শ্রীগুরু ভগবানের প্রতি সম্পূর্ণ আত্মনিবেদন করার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। ভগবানের প্রতি ভক্তের আত্মনিবেদনের মাধ্যমে- ভক্তের মধ্যে জাগ্রত হয় শুদ্ধ, পবিত্র ভগবদ্ভক্তি। আর শুদ্ধ, পবিত্র ভগবদ্ভক্তির মাধ্যমে ভক্ত জন্মজন্মান্তরীণ কামনা-বাসনা থেকে মুক্ত হয়ে পরম শান্তি লাভে ধন্য ও কৃতার্থ হয়।
কলুষমুক্ত সামাজিক পরিবেশ সৃষ্টির সৎ
প্রচেষ্টা।
একটা অসাধারণ লেখা:
ভগবান শ্রী রামকৃষ্ণ তোমাকে কি দিলেন ?
------------------------------------------------------------
গাড়ি , ঘোড়া ! সোনাদানা ! কিস্যু না ?
তাহলে কিসের এত ভক্তি , এত গুনগান !
কি দিলেন , সেটা বোঝানো যাবে না l ওটা যার যার তার তার l ওটা বোঝা যায় , বোঝানো যায় না l
তবে এইভাবে বলা যায় , একটা বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট দিয়েছেন l অদৃশ্য একটা বন্দুক দিয়েছেন শমন দমনের জন্য l আর একটা ভয়ঙ্কর ক্ষতি করেছেন l
সেটা কি ?
চোখ দুটো নষ্ট করে দিয়েছেন l প্রসঙ্গ মাত্রেই চোখ উজ্জ্বল হয় l
তার মানে শ্রী রামকৃষ্ণ তোমার কাছে শীতল বাতাস ?
অবশ্যই ! আমি যখন আমার দোতলার পশ্চিমের বারান্দায় গভীর রাতে দাঁড়াই তখন উত্তরে দক্ষিনেশ্বর এর দিক থেকে বয়ে আসে মৃদু মৃদু রামকৃষ্ণ বাতাস l এক আকাশ তারার নিচে কথা বলে গঙ্গা l ওপারে বেলুড় মঠের চূড়ায় বিবেকানন্দ - নক্ষত্র l আলুলায়িত অন্ধকার জননী সারদার কেশদাম l ছড়িয়ে থাকা নক্ষত্রেরা তাঁর (ঠাকুরের ) অন্তরঙ্গ পার্ষদদের দল l বিশাল এক শিরিষ গাছের দিকে তাকিয়ে আমি নিশব্দে দাঁড়িয়ে থাকি l
তাতে তোমার কি লাভ হয় ? গতির জগৎ , যন্ত্রের জগৎ , প্রতিযোগিতার জগৎ , অর্থ আর বিত্তের জগৎ খুব জোরে ছুটছে আর তুমি দাঁড়িয়ে কবিতা করছ !
উপায় নেই , আমার সেরিব্রামে রামকৃষ্ণ অ্যাটাক হয়েছে l বিষয়ের নাড়ি অবশ হয়ে গেছে l রামকৃষ্ণ রূপ গোখর সাপের ছোবল খেয়েছি l রামকৃষ্ণ - বিষে, বিষয় বিষ মরে গেছে l
সর্বনাশ হয়ে গেছে তো !
একেবারে সাড়ে সর্বনাশ !
তোমার , কি হবে গো - বলে ডুকরে কাঁদতে ইচ্ছা করে l
তুমি কাঁদতে থাকো , আমি ততক্ষণ প্রাণ খুলে হেসে নিই l একটু পরেই গঙ্গা দিয়ে কেশবের স্টিমার যাবে l দেখতে পাবো , কেবিন ঘরে বসে আছেন শ্রী রামকৃষ্ণ , ভক্তসঙ্গে ঠাসাঠাসি l আমি শুনতে পাচ্ছি তাঁর সেই অমোঘ কথা --- "বুঝলে কেশব ! মন নিয়েই সব , মনেতেই বদ্ধ , মনেতেই মুক্ত ! আমি মুক্ত পুরুষ ,সংসারেই থাকি বা অরণ্যে , আমার বন্ধন কি ? আমি ঈশ্বরের সন্তান ; রাজাধিরাজের ছেলে ; আমায় আবার বাঁধে কে ? যদি সাপে কামড়ায়, বিষ নাই কথাটি জোর করে বললে বিষ ছেড়ে যায় ! তেমনি আমি বদ্ধ নই মুক্ত -- এই কথাটি রোখ করে বলতে বলতে তাই হয়ে যায় , মুক্তই হয়ে যায় l
জয় রামকৃষ্ণ , জয় রামকৃষ্ণ , জয় রামকৃষ্ণ ll
সংগৃহীত...
🙏💐











No comments:
Post a Comment