Tuesday, 14 September 2021

মহানাদ ব্রহ্মময়ী মন্দির

 


卐 মহানাদ  ব্রহ্মময়ী  কালী  মন্দির  卐


মন্দিরটি মহানাদ কালীবাড়ী নামে পরিচিত।  আবার অনেকেই একে ব্রহ্মময়ী কালীবাড়ী নামে ডাকে। মা এখানে ব্রহ্মময়ী নামে পরিচিত।  মন্দিরটিতে ন'টি চূড়া আছে। তাই একে নবরত্ন মন্দিরও বলে। মহানাদ গ্রামটি হল হুগলী জেলার  চুচূড়া সাবডিভিশনের পোলবা-দাদপুর ব্লকে। হাওড়া-বর্ধমান মেন লাইনের পান্ডুয়া স্টেশন থেকে এর দূরত্ব  মাত্র সাত কিলোমিটার।  আর চুচূড়া থেকে প্রায় ১৯ কিমি। 



তেত্রিশ কোটি দেবতার  দেশ এই ভারতবর্ষ।  প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মোরা এক এক অপূর্ব পরিবেশে এই  সব দেবতাদের অবস্থান। আর আমরা সাধারণ মানুষ , ধর্ম শাস্ত্র  অনুসরন করে,  পুন্য    লাভের আশায় ঘুরে বেড়ায় এইসব তীর্থস্থানে। পশ্চিমবঙ্গেও অবস্থান করছে এরকম নানান পীঠস্থান ও আদিমন্দির। হুগলীর  মহানাদ মন্দির এদের মধ্যে একটি। ১৮২২ সালে গভীর জঙ্গল পরিষ্কার করে এই মন্দিরের ভিত খোরা শুরু হয়। ভিত খোরার সময় কুশান সভ্যতার কিছু নিদর্শন পাওয়া যায়। কিছু মুদ্রা পাওয়া যায় যেগুলি কুশান ও গুপ্ত যুগের।  আর টেরাকোটা কাজের যে নিদর্শন পাওয়া যায় সেগুলি বেশিরভাগ গুপ্ত যুগের বলে ঐতিহাসিকরা চিহ্নিত করেন। মন্দির শেষ হতে সময় লাগে ৮ বছর। ১৮৩০ সলে মন্দিরের কাজ শেষ হয়। ৮৫ ফুট উচু তিন তলা এই মন্দির।  



জমিদার কৃষ্ণ চন্দ্র নিয়োগী কাঠ ও চিনির বড় ব্যাবসায়ী ছিলেন।  তিনি বাড়িতেই জাঁকজমক করে দূর্গা, লক্ষ্মী ও জগদ্ধাত্রী করতেন। পূজো শেষ হতেই বিগ্রহের বিসর্জন হয়ে যেত। তাই নিত্য প্রতিমা দর্শনের কোনও উপায় ছিল না। এই সব ভাবনা থেকেই জমিদার দক্ষিণা কালীর প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেন। আবার কেউ কেউ বলেন  তিনি মায়ের স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন বলে মন্দির প্রতিষ্ঠা করতে চান। তখনি মহানাদ দক্ষিণ পাড়ার দু বিঘে জমির  জঙ্গল পরিষ্কার করতে লোকজন লাগান। মন্দিরের কাজ ১৮২২ সালে আরম্ভ হয়ে ১৮৩০ সালে শেষ হলে ৮ই মাঘ কৃষ্ণা চতুর্দশীতে রটন্তী কালী পুজোর দিন  পঞ্চমুন্ডি আসনের উপর তন্ত্র মতে দক্ষিণা কালী প্রতিষ্ঠা করেন।  তারপর থেকে একই ভাবে মায়ের পূজো হয়ে আসছে। কষ্টি পাথরের তৈরী এই মূর্তি। শোনা যায় যে মূর্তিকার এই মূর্তি তৈরী করেন, পরবর্তীকালে তারই হাতে তৈরী হয় দক্ষিণেশ্বরের ভবতারিণীর মূর্তি। এও শোনা যায় পারিবারিক পরিচয়ের সূত্রে মন্দির প্রতিষ্ঠার কয়েক বছর পরে জমিদার বাড়িতে আসেন রানী রাসমণি। মন্দিরের গঠনশৈলী ও দক্ষিণা কালীর মূর্তি দেখে তিনি মুগ্ধ হন। তার কিছুদিন পর তাঁর লোকজনদের এনে মন্দিরের উচ্চতা, প্রতিমার খুটিনাটি লিখে নিয়ে যান।  রানী শেষে মহানাদ কালী বাড়ির আদলেই দক্ষিণেশ্বরের ভবতারিণীর মন্দির তৈরিতে উদ্যোগী হন। মহানাদ কালীবাড়ীর বর্তমান বংশধর শ্রী স্বপন কুমার নিয়োগী। তাঁর কাছে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বললেন " রানী রাসমণি মহানাদ কালী বাড়িতে এসেছিলেন বলে পূর্ব পুরুষদের মুখে শুনেছি। কিন্ত তার কোনও প্রমাণ আমাদের কাছে নেই।"



মায়ের আসনের পাশাপাশি মাকে শয়ন দেওয়ান জন্য  সেগুন কাঠের একটি খাট আছে। নিয়োগী মশাই তাঁর ব্যবসার কাঠ দিয়ে এই  খাট বানিয়েছিলেন। এই খাটের বয়স এখন ১৯০ বছর।মন্দির প্রতিষ্ঠার সময় নিয়ে আসা হয়েছিল  তান্ত্রিকদের। সেই থেকে  এখনো এখানে তান্ত্রিক মতে পূজো হয়। আলাদা আলাদা দিনে আলাদা রকম ভোগ ও হোম করে পূজো করেন। প্রচুর মানুষের ভীর হয় রোজদিন।  এছাড়াও  বিশেষ বিশেষ আমাবস্যায় বিশেষ হোম যঙ্গোর আয়োজন করা হয় নিয়ম মেনে। মায়ের মূর্তির দু দিকে শিবের মূর্তি রয়েছে। আগে শিবের পূজো হয় এবং পরে মায়ের পূজো হয়। মায়ের কাছে পুজো দিতে হলে ধূপ, মোমবাতি, ফলমূল বা মিষ্টি সব কিছুই নিজেকে নিয়ে আসতে হয়। কেননা এখানে কোনো দোকান নেই। কালীপুজোর দিন কয়েক হাজার মানুষের সমাগম হয়। আবার শিবরাত্রীতে প্রতি বছর এখানে বিরাট মেলা বসে। তাতেও  হাওড়া, হুগলি, বর্ধমান  ও দুই ২৪  পরগনা থেকে কাতারে কাতারে মানুষ ভিড় জমান।  মন্দির চালানোর জন্য সেই সময়ই নিয়োগী বংশের লোকদের নিয়ে জমিদার কৃষ্ণ চন্দ্র একটি বোর্ড গঠন করেছিলেন।  তাদের সপ্তম পুরুষ শ্রী স্বপন কুমার নিয়োগী বর্তমানে মন্দির পরিচালনার দায়িত্ব বহন করছেন।  জমিদার মশাই-এর আদেশ মেনে এখনও বংশের মেয়েদের বিয়ে হয়ে গেলে মন্দির পরিচালনা থেকে বঞ্চিত হন। মন্দিরের পূজো পরিচালনার জন্য বর্তমানে সতরো জন সেবাইত আছে।কালী পুজোর আগে এখানে সাজো সাজো রব দেখা যায়। প্রচুর ভক্তের সমাগমে দীপাবলীর অমাবস্যা তিথিতে মা পূজিত হন মহা সমারোহে। 


পর্যটনের তালিকায় এখন এসেছে এই মহানাদ মন্দির।  মন্দিরের ভক্তরা ও সেবাইতরা সরকারের পর্যটন দপ্তরের কাছে এই মন্দির নতুন রূপে সংস্কার করবার আবেদন জানান।  সেই মত  সরকারের পর্যটন দপ্তরের পক্ষ থেকে মহানাদ মন্দির পরিদর্শন করেন এবং মন্দিরটিকে নতুন করে সংস্কার করবার ইচ্ছা প্রকাশ করা হয়। সরকারের পক্ষ থেকে এর সৌন্দর্যায়নের কাজ চলছে। এখন রাতে মন্দিরের সব আলো জ্বলে উঠলে মন্দিরের রূপ অন্য রকম হয়।


কলকাতা থেকে মন্দিরের দূরত্ব প্রায় ৬৪ কিমি মত। গাড়ী নিয়ে যেতে চইলে জি টি রোড বা দিল্লী রোড ধরে সহজেই চলে আসতে পারেন।  এছাড়া রেলে পান্ডুয়া বা চুচূড়া বা ব্যান্ডেল ষ্টেশনে নেমে বাস বা অটো বা টোটোতে করে মন্দিরে পৌচ্ছাতে পারেন।  এটুকু দৃঢ়ভাবে বলছি যে একবার মন্দিরটি দর্শন করতে এলে বার বার ছুটে আসতে হবে এই জায়গায়।একবার এসেই দেখুন যে এখনকার সবুজ ঠান্ডা কোলাহলহীন পরিবেশ  আপনার  মনকে কেমন শান্ত করে দেয় !!!



Friday, 10 September 2021

সিদ্ধিদাতা গণেশায় নম:

 

'ওঁ গাং গণেশায় নমঃ ওঁ শ্রী গণেশায় নমঃ'


গণেশ হলেন হিন্দুদের সর্বাধিক  পরিচিত ও সর্বাধিক পূজিত দেবতাদের অন্যতম।  তিনি গনপতি, পিল্লাইয়ার , বঘ্নিশ্বর, যানইমুগবতন, গজপতি, একদন্ত নামেও পরিচিত।  ভারত, শ্রীলঙ্কা ও নেপালের বিভিন্ন অঞ্চলে গণেশর মন্দির ও মূর্তি দেখা যায়। জৈন ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মধ্যে গনেশ ভক্তিবাদ মিশে গিয়ে গণেশ পূজার প্রথা বিস্তার লাভ করেছে। সাধারণত সকল হিন্দু সম্প্রদায়েই গণেশের পূজা প্রচলিত  রয়েছে।

সিদ্ধেশ্বর

হিন্দু পঞ্জিকা অনুযায়ী ভাদ্র মাসের শুক্লা চতুর্থী তিথিতে গনেশের পূজা বিধেয়। পুরাণ মতে ভাদ্রপদ মাসের এই চতুর্থী তিথিতে জন্মগ্রহণ হয়েছিল সিদ্ধিদাতার। এই উৎসব গনেশ চতুর্থী বা বিনায়ক চতুর্থী বা বিনায়ক চবিথি নামে পরিচিত।  সাধারণত এই দিনটি ২০শে আগস্ট থেকে ১৫ই সেপ্টেম্বরের মধ্যেই কোনোও এক দিন পড়ে। দশ দিন ধরে এই উৎসব চলে। চতুর্থী দুই দিনে পড়লে পূর্বদিনে পূজা অনুষ্ঠিত হয়। এমনকি দ্বিতীয় দিন মধ্যাহ্নের সম্পূর্ণ সময়ে চতুর্থী বিদ্যমান হলেও পূর্বদিন মধ্যাহ্নে এক ঘটিকার (২৪ মিনিট) জন্যও যদি চতুর্থী বিদ্যমান থাকে তবে পূর্বদিনেই গণেশ পূজা হয়।


ব্যাবসায়ে গণেশ পুজো কেন করা হয় ??

আমাদের দেশে শুভ নববর্ষে , অক্ষয় তৃতীয়ায় কিংবা কোনও ব্যবসার শুরুতে ঘটা করে গণেশ পূজা করা হয়। এই গণেশ দেবতার আগমন সুপ্রাচীন। ঋগ্বেদে 'গনপতি'  নামে একজনের উল্লেখ আছে। আবার কোনও কোনও ক্ষেত্রে স্বয়ং ইন্দ্রকেই গনপতিরূপে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে কালক্রমে তন্ত্র ভাবনার বিস্তারের ফলে গণপতি বলে একজন পৃথক দেবতার আবির্ভাব ঘটে।  ইনি শিব পার্বতীর পুত্র গণেশ। ইনি যে কোনও পূজোর আগে পূজো পান এবং যে কোনও শুভকর্ম সুষঠভাবে সম্পন্ন করতে পারদর্শী। এই গণেশ হলেন---- গণ + ঈশ। অর্থাৎ গণদের বা জনগনের ঈশ্বর। ইনি যে কোনও কর্মের বিঘ্ননাশকরূপে পরিচিত এবং সিদ্ধি আনতে অপরিহার্য। এ কারণে ব্যাবসার শুরুতে লাভবান হতে ভারতে সর্বত্র গণেশ পূজার প্রচলন দেখা যায়। শুভ নববর্ষ ছাড়াও ভাদ্র মাসে এবং মাঘ মাসের শুক্লা চতুর্থীতে গণেশের বিশেষ পূজার ব্যবস্থা আছে। এদেশে জন্মাষ্ঠমীর পরে যে শুক্লা চতুর্থী সেই  চতুর্থী গণেশ চতুর্থী নামে পরিচিত। এই দিনে ভারতের নানা জায়গায় গণেশের আনুষ্ঠানিকভাবে পূজো করা হয়।




গণেশের পূজা সর্বাগ্রে হয় কেন   ???

বরাহ পুরাণে লেখা আছে যে একদিন ব্রহ্মার হস্তক্ষেপে মহাদেব তাঁর রুদ্ররূপ সংবরন করে কুমারকে বর দিয়েছিলেন  ------ " সকলের আগে তাঁরাই  পূজা হবে।" এই পুরাণ থেকে আমরা জানতে পারি গণেশের জন্ম হয়েছিল মহাদেবের শ্রীমুখ থেকে। চিন্তামগ্ন মহাদেব দেখলেন পৃথিবী, জল,অগ্ণি ও বায়ুর মূর্তি রয়েছে। কিন্ত আকাশের কোনও মূর্তি নেই।  এরূপ চিন্তা করামাত্রই ফল। মহাদেবের অট্টহাসি থেকে আবির্ভূত হলেন সেদিন এক সর্বাঙ্গসুন্দর তেজোদীপ্ত কুমার।  কিন্ত বিপদ ডেকে আনলেন পার্বতী। কুমারের সুন্দর মিষ্টি কচি মুখখানি দেখে পার্বতী হৃদয়াবেগ রুদ্ধ করতে না পেরে আপ্লুত হয়ে পরলেন।  অপলক নয়নে স্নহসিক্ত দৃষ্টিতে নিরক্ষণ করতে লাগলেন তাঁর প্রিয় কুমারকে। এই আসক্তিলিপ্ত দৃশ্য 


দেখা মাত্র মহাদেব রুদ্ররূপ ধারন করে  শাপ দিয়ে বসলেন  সেই নিরপরাধ কুমারকেই। কুমারের গ্রীবায় বসল হস্তীমুন্ড, লম্বিত উদরে রক্তিম কায়ে যুক্ত হল নাগ-উপবীত। এ দৃশ্য দেখে সকলেই ব্রহ্মার নিকট প্রার্থনা করতে লাগলেন।  অত:পর ব্রহ্মার কৃপায় রুদ্রের ক্রোধ প্রশমিত হলে করুণার্দ্র নয়নে মহাদেব গণেশকে করে দেন আকাশের অধিপতি ও বর দেন " সকল দেবতার সর্বাগ্রে তাঁর পূজা হবে।"


গণেশ মূর্তির ভাসানের দিনকে কী বলা হয়?

মূলত যে দিন থেকে গণেশের পুজো শুরু হয়, সেই দিন থেকে ১০ দিনের পর এগারোতম দিনে ভাসান দেওয়া হয় গণেশের মূর্তির। এই দিনটিতে 'অনন্ত চতুর্দশী' বলা হয়। 'আসছে বছর আবার হবে'র বার্তা দিয়ে এমন শুভ দিনে ভাসন দেওয়া হয় সমৃদ্ধির দেবতাকে।








গণেশ কি ফুল  ভালবাসেন  ??

পরিজাত, মালতী, চাঁপা সহ নানারকম সুগন্ধী ফুল।  এছাড়া চন্দন,  অগরু, কস্তুরী,প্রদীপ ও ধূপ তাঁর খুবই প্রিয় জিনিস। 

তিনি খেতে পছন্দ করেন...........

বড় বড় তিলের নাড়ু, চিনির তৈরি মিষ্টি , মুড়কি, পিঠে, পায়েস এবং অন্যান্য সুস্বাদু ব্যঞ্জন। তাঁর প্রিয় ফলগুলি হল বেল, দাড়িম, খেজুর, আম, জাম, কলা এবং নারকেল। খাবারের সঙ্গে কর্পূর মিশানো ঠান্ডা গঙ্গাজলও তাঁর বিশেষ পানীয়। এসব পেলেই গণেশ ঠাকুর খুবই খুশি হন। 




গণেশের  বাহন  *$*

গণেশ গজমুন্ডধারী এবং স্থূলকায়। হাতে ভারী গদা। রজোগুনের প্রতীক স্বরূপ এই  কর্মবীর ঈষৎ রক্তবর্ন।  কিন্ত  প্রশ্নটা তাঁর বাহন ক্ষুদ্র ইঁদুর হল কি করে। পুরানে লেখা আছে, গণেশ কে দেখতে এসে পৃথিবী তাঁকে ইঁদুরটা দিয়েছিলেন।  আসলে ইঁদুর বা মূষিক হল সমাজের পতিত বা দলিত শ্রেনীর প্রতীক। গণেশ তাঁকে বাহন করে শোষিত,  অবহেলিত ও খেটে খাওয়া মানুষকে সন্মান দিয়েছিলেন।  তিনি যেমন একদিকে গজদন্ত ধারণ করে উচ্চ জাতিদের বরণ করেছেন,  তেমনি মূষিক বাহন করে উপেক্ষিত সম্প্রদায়কে কাছে টেনে নিয়েছেন। আর এটাও তিনি ভাবতেন যে, এই উভয়ের সমন্বয় হলেই প্রকৃত দেশ ও জাতির কল্যাণ হতে পারে। হয়তো তাঁর এই মহান জীবনদর্শনের জন্যই মহারাষ্ট্রে গণপতি উৎসব এত ব্যাপ্তি লাভ করেছে বলে অনেকে মতপ্রকাশ করেছেন।  আবার অনেকে এ কথাও বলেন যে , গণেশের বাহন মূষিক জীবের কর্মফল কর্তন করে সিদ্ধির পথ উন্মুক্ত কর দেন।

গণেশের হাতের চার অস্ত্রের বর্ননা  ৹৹৹ 

গণেশের চার হাতে রয়েছে যথাক্রমে শঙ্খ-চক্র-গদা ও পদ্ম। এই চারটি অস্ত্রই হল ভগবান বিষ্নুর।  তাই গণেশের হাতের শঙ্খের অর্থ হল জীবনের সমস্ত ক্ষেত্রে মঙ্গলের ও উৎসাহ উদ্দীপনা দেবার বস্তুবিশেষ। শঙ্খ ধ্বনিতে শুভ ভাবনা বৃদ্ধি পায় এবং অশুভ শক্তি দূরে পলায়ন করে। কুরুক্ষেত্রে যুদ্ধের শুভ সূচনায় স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণও শঙ্খ ধ্বনি করেছিলেন।  সুদর্শনচক্র শৌর্য-বীর্য ও সাহসের প্রতীক স্বরূপ এক অস্ত্র বিশেষ। কালধর্ম ছেদনকারী এই অস্ত্রধারন করে গণেশ ভক্তদের বিঘ্ননাশ করেন এবং কর্মের বাধাবিপত্তি দূর করে সিদ্ধি এনে দেন। তখন ভক্তরা কর্মসিদ্ধি বা মুক্তির আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে ওঠে। গদা হল শৌর্য ও শক্তিমত্তার প্রতীক।  যাঁদের হাতে গদা থাকে তাঁরা খুবই পরাক্রমী ও শক্তিশালী। গদা হাতে গণেশ ভক্তদের সমস্ত বিপদ থেকে উদ্ধার পাওয়ার আশ্বাস দিয়ে থাকেন। অপরদিকে পদ্ম হল জীবনকে সৌন্দর্যে রূপায়িত করার ও নিরাসক্ততার প্রতীক।  পদ্ম পাঁকে জন্মায় কিন্ত গায়ে কোনও পঙ্ক গন্ধ নেই। পদ্মপাতা জলে থাকে কিন্ত জলবিন্দু ধারন করে না। অর্থাৎ পদ্ম বলতে চাইছে এই সংসারে ভগবানের জন্য কর্তব্যবোধে অনাসক্ত হয়ে কর্ম কর। বিষয়ে মনকে জড়িয়ো না। তাহলে মন পরমেশ্বরীর চিন্তায় মগ্ন হয়ে উন্নত আনন্দ ও প্রেমে পরিপূর্ণ হবে। তখন মানবজীবন সুন্দর হয়ে সকলকে আমোদিত করবে।






গণেশ পূজোয় তুলসী পাতা লাগে না।

গণেশ পুজোয় তুলসী পাতার প্রচলন নেই। এক পৌরণিক কাহিনি মতে , তুলসী দেবীর সঙ্গে গণেশের সম্পর্ক ঘিরে রয়েছে কাহিনি, বলা হয়, তুলসী দেবী কেবলই বিষ্ণুর উপাসনা করতেন। বিষ্ণুদেব বাদে কারোর আরাধনা তিনি করতেন না। তবে তুলসী দেবীর সঙ্গে গণেশের বিবাহের কথা এগোতেই তাঁরা একে অপরকে অভিশাপ দেন বলে শোনা যায়। সেই থেকে গণেশ পুজোয় ব্যবহার করা হয়না তুলসী।

গণেশের  পরিবারে কে কে আছেন 

সিদ্ধিদাতা গণেশের বউ কে? কলা বৌ তার বৌ নন। তাহলে!

 সিদ্ধিদাতা গণেশের বউ হিসাবের আমরা যাকে জানি তিনি হলেন কলাবউ।এই কলাবউ কিন্তু গনেশের বউ নন আসলে কলাবউ হলেন গনেশের মাতা অর্থাত্‍ দেবী দুর্গার রূপ।তাহলে জানেন কি গনেশে বউ কে এবং সন্তান কে? জেনে নিন সিদ্ধিদাতা গনেশের বউ এবং সন্তান সম্পর্কে।

শিবপুরাণ অনুসারে, প্রজাপতি ব্রহ্মার দুই কন্যা ছিলেন সিদ্ধি ও বুদ্ধির।ব্রহ্মাদেবের এই দুই কন্যার সাথে বিয়ে হয়েছিল গণেশের।এরপর গনেশের দুই সন্তানের জন্ম হয়। সিদ্ধির গর্ভে 'ক্ষেম'এবং বুদ্ধির গর্ভে 'লাভ'।এই দুই পুত্র ছাড়াও গনেশের একটি কন্যা ছিল।এই কন্যার নাম হল 'সন্তোষী মা।




অন্য এক  পুরাণের  কাহিনী পড়লে জানতে পারি যে বিবাহের ব্যাপারে গণেশ সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে তিনি দার পরিগ্রহ করবেন না। চিরকুমার থেকে তপস্যাতেই জীবনযাপন করবেন।  আর সেইমত ধ্যানধারনা নিয়েই রত থাকতেন।  কিন্ত ধর্মধ্বজের কন্যা তুলসির গণেশকে দেখে খুব পছন্দ হয়ে যায় এবং মনে মনে তিনি পার্বতী পুত্রকে দারুন ভালবেসে ফেলেন। শুধু তাই নয়, প্রণায়াবেগে তিনি সুন্দর ভাবে সেজেগুজে একদিন গণেশের কাছে গিয়ে তাঁকে বিবাহের প্রস্তাব রাখলেন।  এতে ধৈর্যশীল গণেশের আত্মসংযমের বাঁধ ভেঙে গেল এবং তিনি তাঁকে অভিশাপ দিয়ে বললেন  " ওরে তুলসী, তুমি যেমন কামতুরা, তাতে তুমি দেবভোগ্যা না হয়ে অচিরেই অসুরভোগ্যা হবে।"  প্রণয় প্রতিহত হয়ে তুলসীও ক্রোধে জ্বলে উঠলেন।  তিনিও গণেশের মুখের ওপর বলে দিলেন  " তোমার ব্রহ্মচর্যব্রত ভঙ্গ হবেই। তুমি বিবাহ করতে বাধ্য হবে।"কালের বিধানে পরস্পর প্রদত্ত অভিশাপই সত্য হল। তুলসী শঙ্খচূড় নামে এক অসুরের ভার্যা হলেন  এবং গণেশ পুষ্টি নাম্নী এক দেববালার পাণিগ্রহন করলেন। এই দেববালার অপর নাম মহাষষ্ঠী। অপরদিকে কলাবউ গণেশের স্ত্রী নয়। কলাবউ হল দুর্গারই অন্য এক রূপ যা নবপত্রিকা নামে পরিচিত।  যাহোক,  তুলসী অভিশাপ দিয়েছিল বলে গণেশ পূজায় তুলসীপাতা আর লাগে না।

পুরান  ঘাটলে আমরা জানতে পারি গণেশের  সর্বসিদ্ধপ্রদ বারোটি নাম। এগুলি হল যথাক্রমে___ খর্বাকৃতি, একদন্ত,  রক্তবর্ন কলেবর, গজবদন, লম্বোদর,  স্থূলদেহ, বিঘ্ননাশক, ধূম্রবর্ন, চন্দ্রবদন, বিনায়ক,  গণপতি এবং গজানন। পতীর      কোলে বিষ্নুর বরে ও তারই অংশে গণেশের জন্ম হয় । বিষ্নুর অংশ স্বরূপ বলে গণেশেরও চার হাত এবং বিষ্নুর মতো তিনিও শঙ্খ-চক্র-গদা ও পদ্মধারী। মা পার্বতী স্বয়ং তপ:শক্তি বলে তাঁর  গনেশকে লাভ করেন। সাধারণ ভাবে তাঁর জন্ম হয়নি। কাজেই কোনও নায়ক বা পতি ছাড়াই গণেশের জন্ম হয়েছিল বলে তিনি বিনায়ক নামে পরিচিত।  আর ত্রিভুবনের সমস্ত  দেবতার ঈশ্বর বলে গণেশ । সমস্ত জনগনের পতি বলে গণপতি। তাকেঁ স্মরণ করে কর্ম শুরু করলে তিনি কর্মের বিঘ্ননাশ করেন বলে বিঘ্ননাশক । সর্বকর্মে সত্বর সিদ্ধি প্রদানের জন্য নাম হল তাঁর  সিদ্ধিদাতা। এছাড়া তাকেঁ নানারকম খাদ্যদ্রব্য দেওয়া হয় এফং তা ভক্ষন করলেই ভুঁড়ি প্রসারিত হয় বলে গণেশ হলেন লম্বোদর। শণির অশুভ দৃষ্টিতে তাঁর জন্মের পর মাথা খসে পড়েছিল এবং দেবরাজ ইন্দ্রের হাতির মাথাটি কেটে এনে স্বয়ং বিষ্নু লাগিয়েছিলেন _____ এ কারণে তিনি হস্তীবদন বা গজানন । দীনজনের সদা সেবক বলে গণেশের আরেক নাম হল হেরম্বদেব । অপরদিকে পরশুরামের সঙ্গে যুদ্ধ করে একটি দাঁতকে ভেঙে তিনি একদন্ত নামে পরিচিতি লাভ করেছিলেন।  গণেশের রং রক্তবর্ন । দেহের গঠন অনুপম সৌন্দর্যে ভরপুর।  সমস্ত দেবদেবীর আশীর্বাদে অত্যন্ত মার্জিত,  সংস্কৃতিবান এবং ঞ্জানী দেবতা হিসেবে গণেশ খ্যাতিলাভ করেছেন।  



গণেশের দেহে হাতির মাথা কেন ??


সবচেয়ে জনপ্রিয় গল্পটি সম্ভবত শিব পুরাণ থেকে গৃহীত হয়েছে। এক দিন দেবী পার্বতী কৈলাসে স্নান করছিলেন। স্নানাগারের বাইরে তিনি নন্দীকে দাঁড় করিয়ে রেখেছিলেন, যাতে তাঁর স্নানের সময় কেউ ভিতরে ঢুকতে না পারে। এই সময় শিব এসে ভিতরে প্রবেশ করতে চান। নন্দী শিবের বাহন। তাই প্রভুকে তিনি বাধা দিতে পারলেন না। পার্বতী রেগে গেলেন। তিনি ভাবলেন, নন্দী যেমন শিবের অনুগত, তেমনই তাঁর অনুগত কোনো গণ নেই। তাই তিনি তাঁর প্রসাধনের হলুদমাখা কিছুটা নিয়ে গণেশকে সৃষ্টি করলেন এবং গণেশকে নিজের অনুগত পুত্র রূপে ঘোষণা করলেন।

এরপর থেকে পার্বতী স্নানাগারের বাইরে গণেশকে দাঁড় করাতেন। একবার শিব এলেন। তিনি ভিতরে প্রবেশ করতে চাইলেন। কিন্তু গণেশ তাঁকে বাধা দিলেন। শিব রেগে গিয়ে তাঁর বাহিনীকে আদেশ দিলেন গণেশকে হত্যা করার। কিন্তু তারা গণেশের সামান্য ক্ষতি করতেও সক্ষম হল না।

এতে শিব অবাক হলেন। তিনি বুঝলেন, গণেশ সামান্য ছেলে নয়। তাই তিনি নিজে গণেশের সঙ্গে যুদ্ধ করতে এলেন। শিব গণেশের মুণ্ডটি কেটে তাকে হত্যা করলেন। একথা জানতে পেরে পার্বতীও রেগে সমগ্র সৃষ্টি ধ্বংস করে ফেলতে উদ্যোগী হলেন। তখন সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মা তাঁর কাছে ক্ষমা ভিক্ষা করলেন। পার্বতী দুটি শর্ত দিলেন। প্রথমত, গণেশের প্রাণ ফিরিয়ে দিতে হবে এবং সকল দেবতার পূজার আগে তাঁর পূজার বিধি প্রবর্তন করতে হবে।

এই সময় শিবেরও রাগ পড়ে গিয়েছিল। তিনি পার্বতীর শর্ত মেনে নিলেন। তিনি ব্রহ্মাকে উত্তর দিকে পাঠিয়ে বললেন, যে প্রাণীটিকে প্রথমে দেখতে পাওয়া যাবে, তারই মাথাটি কেটে আনবে। কিছুক্ষণ পরে ব্রহ্মা এক শক্তিশালী হাতির মাথা নিয়ে ফিরে এলেন। শিব সেই মাথাটি গণেশের দেহে স্থাপন করলেন। তারপর তাঁর মধ্যে প্রাণের পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হল। শিব গণেশকে নিজ পুত্র ঘোষণা করলেন এবং সকল দেবতার পূজার আগে তাঁর পূজার ব্যবস্থা করে দিলেন। সেই সঙ্গে তাঁকে সকল গণের অধিপতি নিযুক্ত করা হল।

গণেশের হাতির মাথা

বৌদ্ধধর্মে  গণেশ  ::



বৌদ্ধধর্মেও গণেশের উল্লেখ পাওয়া যায়। এই ধর্মে শুধুমাত্র বৌদ্ধ দেবতা বিনায়ক রূপেই গণেশের উল্লেখ নেই, বরং হিন্দু দেবতা রূপেও বিনায়কের উল্লেখ আছে। গুপ্ত যুগের শেষ পর্যায়ের বৌদ্ধ ভাস্কর্যে গণেশের মূর্তির সন্ধান পাওয়া যায়। বৌদ্ধ দেবতা রূপে বিনায়কের মূর্তিটি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নৃত্যরত। এই রূপটির নাম ‘নৃত্য গণপতি’। উত্তর ভারতে এই রূপটি জনপ্রিয় ছিল। পরবর্তীকালে তা নেপালে গৃহীত হয় এবং তারও পরে তিব্বতে গৃহীত হয়। মালয় দ্বীপমালার চণ্ডী সুকুহ মন্দিরে নৃত্যরত গণেশের একটি মূর্তি দেখা যায়।

মঞ্জনগন (গণেশ) মন্দির,  বালি, ইন্দোনেশিয়া


নৃত্যরত গণেশের মূর্তি


জৈন ধর্মাবলম্বীদের গণেশ  卐卐

অধিকাংশ জৈন ধর্মাবলম্বী গণেশের পূজা করেন। তাঁদের বিশ্বাস, গণেশ কুবেরের কিছু কিছু দায়িত্ব পালন করেন।[৫] জৈন ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে বাণিজ্যের বিশেষ যোগ থাকায় তাঁদের কাছে গণেশ পূজার ধারণাটি বেশ গ্রহণযোগ্য হয়।

গণেশ গুম্ফা, উদয়গিরি 

বর্ধমানসূরি রচিত শ্বেতাম্বর জৈন গ্রন্থ আচারদিনকর (১৪১২ খ্রিস্টাব্দ) অনুসারে, দেবতারাও কাঙ্ক্ষিত দ্রব্য অর্জনের জন্য গণপতিকে প্রসন্ন রাখেন। এই গ্রন্থে আরও বলা হয়েছে যে, যে কোনো শুভ অনুষ্ঠান ও নতুন কাজ শুরু করার আগে তাঁকে পূজা করা হয়। এই প্রথা এখনও শ্বেতাম্বর জৈন সম্প্রদায়ে বেশ জনপ্রিয়। এই গ্রন্থ থেকে গণপতি বিগ্রহ প্রতিষ্ঠার বিধিও পাওয়া যায়।

যদিও দিগম্বর ধর্মগ্রন্থগুলিতে গণেশের এই জনপ্রিয়তা দেখা যায় না। অধুনা ওড়িশার উদয়গিরি ও খণ্ডগিরি গুহাসমূহে খোদিত দুটি মধ্যযুগীয় মূর্তি এবং মথুরায় প্রাপ্ত একটি প্রাচীন মূর্তি ছাড়া কোনো দিগম্বর তীর্থস্থানে গণেশের মূর্তি নেই।


$*$* গণেশ পূজার ফলে ভক্তরা কি লাভ করেন  $*$*  



শাস্ত্রমতে গণেশের স্তবস্তুতি ও পুজোয় অশেষ কল্যাণ সাধিত হয়। কর্মের বিঘ্ননাশ হয়। গণেশ পুজো করলে গ্রহপীড়ার মধ্যে পড়তে হয় না। আর এই  কারণেই ব্যবসায়ীরা ব্যাবসায় ক্ষতির হাত  থেকে বাঁচতে,  ব্যাবসার সমৃদ্ধি কামনায় সেই  আদিকাল থেকে গণেশ পুজো করে আসছেন।  

গণেশ যেহেতু গণশক্তি বা সমষ্টিশক্তির প্রতীক,  সেহেতু, সকলের শক্তি তাতে ঐক্যবদ্ধ থাকে। ফলে, সেই শক্তির জোরেই যে কোনও বিঘ্ন খুব সহজেই অপসারিত হয়। তাই গণেশের পূজা ঠিক ঠিক সম্পাদিত হলে অন্য সকল দেবতার পূজা সার্থক হয়। এছাড়াও গণেশের অর্চনায় অষ্টপাশ অর্থাৎ ঘৃণা, অপমান,  লজ্জা, মাহ, মোহ, দম্ভ, দ্বেষ ও বৈগুণ্য প্রভৃতি বন্ধন থেকে মুক্তি লাভ হয়। বিদ্যার্থীর বিদ্যা, ধনার্থীর ধন, পুত্রার্থীর পুত্র এবং মোক্ষার্থীর মোক্ষ লাভ হয়।

কোথায় স্থাপন করতে হবে গনেশ মূর্তি: অনেকে গৃহের মঙ্গল ও ব্যবসার উন্নতি লাভের জন্য সিদ্ধিদাতার পুজো করেন। কিন্তু কোন স্থানে তাঁর মূর্তি স্থাপন করতে হবে, সে সম্পর্কে বেশিরভাগই জানেন না। তাই দিনের পর দিন আরাধনার পরেও তেমন কোনও ফল মেলে না। বাস্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, বাড়ির পূর্বদিকে যদি গণেশ ঠাকুরের মূর্তি রাখা যায়, তাহলে সবথেকে বেশি সুফল মেলে। যদি তা সম্ভব না হয়, তাহলে উত্তরদিকে রেখেও পুজো করতে পারেন।

শ্বেত গণেশ: অনেকে বিশ্বাস করেন, বাড়ির ঠাকুরঘরে সাদা গণেশের মূর্তি স্থাপন করলে পরিবারে অশান্তির আশঙ্কা কমে। সেইসঙ্গে পরিবারে সমৃদ্ধি ছোঁয়া লাগে। তাই এবার থেকে গণেশ মূর্তি বাড়ি আনলে সাদা মার্বেলের মূর্তি আনুন!

গণেশের শুঁড়: সিদ্ধিদাতার মূর্তি আনার সময় খেয়াল রাখতে হবে, তার শুঁড় যেন ঠাকুরের বাঁ-হাতের দিকে বেঁকে থাকে। কারণ, বিশেষজ্ঞদের মতে এমন মূর্তি বাড়িতে রাখলে গৃহের উন্নতি হয়। সেইসঙ্গে অনেক বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

মোদক এবং বাহন: গণেশের হাতে মোদক এবং পায়ের কাছে বাহন, এমন মূর্তি বাড়িতে রাখলে গৃহের সুখ-শান্তি বজায় থাকে, তেমনি মানসিক শান্তি বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়।

তাই পরিশেষে ভগবান বিষ্নুর সাথে গলা মিলিয়ে পরমভক্তি  সহকারে সর্ববিঘ্ন বিনাশক গণপতির স্তব করতে ইচ্ছা করে    "  হে সিদ্ধেশ্বর গণেশ,  তুমি সকল দেব ও সিদ্ধগণের শ্রেষ্ঠ,  যোগীদের গুরু , তুমি সর্বস্বরূপ, সকলের ঈশ্বর এবং ঞ্জানরাশিস্বরূপ। তুমি অব্যক্ত,  অক্ষর, নিত্য,  সত্য  এবং আত্মস্বরূপ, তুমি বায়ুতুল্য নির্লিপ্ত,  অক্ষত এবং সর্বসাক্ষী। সংসার সাগরের পারবিষয়ে তুমি মায়ারূপ পোতারোহী জীবগনের দুর্লভ কর্ণধার স্বরূপ  এবং ভক্তগনের প্রতি অনুগ্রহকারী।  তুমি ধার্মিক,  ধর্মস্বরূপ, ধর্মঞ্জ এবং ধর্ম  ও অধর্মের ফলদাতা। তুমি সংসার বৃক্ষের বীজ এবং তদাশ্রিত অঙ্কুর। তুমি স্ত্রী, পুরুষ ও নপুংসকের স্বরূপ এবং অতীন্দ্রিয়। তুমি সকলের আদিতে অবস্থিত,  অগ্রে পূজনীয়, সকলের পূজনীয় এবং গুনের সাগর। তুমি আপনার ইচ্ছানুসারে কখন সগুন এবং কখন নির্গুন ব্রহ্মারূপে অবস্থান কর। তোমাকে ভক্তিপূর্ন নমস্কার জানাই।"