Sunday, 16 May 2021

টুকিটাকি বেড়ানো



A day trip is all you require from Kolkata to visit  be temple that speaks volumes about the terracotta art of Bengal

 03 Min Read   

Although we had heard about the terracotta temple of Debipur from friends, no one had prepared us for the sight. Sixty feet in height and richly carved, it stood like a lonely sentinel, its time-worn red tiles a sharp contrast to the translucent blue sky above.

There is nothing touristy about Debipur, a suburban town located a little over 80km by road from Kolkata.  So if you are looking for a day trip without much ado, pack a picnic hamper and set off for this little town, around two hours’ drive away. Once you reach the town’s periphery, ask for the way to Lakshmi Janardan Temple.

On the way, you may stop at the twin Shiva temples, with a Dol Mancha in the middle. But do keep a sharp lookout as the neighbourhood seems to have known around it with scant regards towards the heritage these temples preserve. The Shiva temples sported the eight-roofed architecture typical of Bengal. The Dol Mancha (where typically an idol of Radha-Krishna is brought for worship during Holi) was taller than the temples and stood in the middle. All three were on the same platform, an example of peaceful co-existence of Shaiva and Vaishnav principles. However, we could not find out if the door-like structure at the bottom of the Dol Mancha was a false one or has been sealed later on.

Lakshmi Janardan Temple of Debipur rises to a height of 60 feet

A short walk from here will take you to the Lakshmi Janardan Temple. We entered through a small gate set within the boundary wall. The arched entrance with pillars were reminiscent of the glorious days. Encircling the quadrangle were rows of dilapidated rooms.

Built in a mixed style of Bengal and Odia architecture, the colossal temple stood on a high platform. The main entrance was through a three-arched façade, which was topped by a double-roofed sloping structure (‘do chala’ of Bengal). Fused with it and rising over the sanctum was the tall spire or the ‘deul’ (reflecting the Odisha influence). However, since the main entrance was barred, we entered through a side door.

A terracotta panel from the Lakshmi Janardan Temple of Debipur

It was the sculptures on the façade that astounded us. Not an inch was left unadorned. While time had taken its toll on the intricate terracotta artwork, still they reflected the fine craftsmanship for which Bengal artisans were once famous. Most of the decorations were drawn from the life of Krishna but tales from mortal life were also present, such as hunting scenes, as well as ornamental and floral patterns. It was interesting to note that dresses of the women from the Krishna tales were of north Indian style and not that of Bengal. If you are a photographer, remember to carry a long lens and a camera stand.

A terracotta panel depicting a scene from Krishna’s life

According to records, Narottam Singha purchased the land from the then ruler of Burdwan to build the temple. The temple was completed in 1844. Although the family maintains the temple through a trust, it is not easy. Therefore family member Indudipa Sinha, a medical doctor and a theatre performer is aiming to repurpose the space as a cultural venue. She had started organising cultural events before the pandemic struck. The repurposing will also ensure that the local people connect with the temple and want to preserve this architectural marvel as a part of our common legacy, she said.

Note: Since visitors are few and far between, the priest may not always be around. But ask at the twin Shiva temple or the people in the neighbourhood and they may help you in locating the priest. 



৫১ সতীপীঠের অন্যতম হুগলি জেলার খানাকুলের রত্নাবলী আনন্দময়ী মা


হুগলি জেলার কালী তীর্থ অখ্যাত কোড়ালা


#হুগলী_জেলার_কালী_তীর্থ_অখ্যাত_কোড়লা 
_________________________________________
আমাদের রাজ্যের না না প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে একাধিক শক্তি পীঠ, যার কিছু পরিচিত, কিছু অপরিচিত। তেমনি এক অপরিচিত বা স্বল্প পরিচিত একটি কালী তীর্থের কথা আজ বলবো। 
আজ আপনাদের জানাবো হুগলী জেলার কালী ক্ষেত্র #কোড়লা_কালী_মন্দির এর কথা। হুগলী জেলার ব্যান্ডেল এর নিকটবর্তী গ্রাম কোড়লা। সেখানে অবস্থিত চারশো বছর এর প্রাচীন এই মন্দির। আপাত অখ্যাত এই গ্রামটি কোড়লা মায়ের, যাঁর পোশাকি নাম সিদ্ধেশ্বরী মাতার কারণে  প্রসিদ্ধ। 
শোনা যায় তৎকালীন ডাকাত সর্দার ঘোষাল সর্দার নামে এক ডাকাতের হাতেই এই মায়ের প্রতিষ্ঠা। আনুমানিক ৪০০ বছর আগের কথা, তখন কোড়লার পাশ দিয়ে বয়ে চলা সরস্বতী নদী আজকের মত মজে যায় নি। পাশেই ছিল তৎকালীন বাণিজ্য কেন্দ্র সপ্তগ্রাম। এই সময় ঘোষাল সর্দার নামক এক দস্যু কোড়লার বৃহৎ পুকুর থেকে তুলে আনেন সিদ্ধেশ্বরী মাকে। প্রতিষ্ঠা করেন সেই পুকুর পারে, আজ যেখানে সিদ্ধেশ্বরী মায়ের মন্দির। ঘোষাল সর্দার স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন মা সিদ্ধেশ্বরী পুস্করিণী তে আছেন, সেখান থেকে তাঁকে উদ্ধার করে প্রতিষ্ঠা করতে। বর্তমানে কোড়লার এই মন্দিরে রয়েছে বড় আকারের মাতৃ মূর্তি এবং তার বা দিকে আজও প্রতিষ্ঠিত  ঘোষাল সর্দার এর প্রতিষ্ঠিত সেই প্রাচীন মূর্তি। যা আজও পূজিত হয়। 
মন্দিরে গিয়ে মনটা সত্যি ভালো হয়ে গেল, আর পাঁচটা মন্দির এর মত চাকচিক্য, বাহার হয়ত নেই কিন্তু যে পবিত্র একটা রেস মন্দিরে আছে তা অতুলনীয়। মন্দিরের বর্তমান সেবাইত শ্রী শ্যামাপদ বটব্যাল মহাশয় এর সাথে কথা বলে জানলাম বর্তমানে গ্রামের ভট্টাচার্য পরিবারের হাতে মন্দির এর দেখাশোনার ভার আছে। মন্দিরের দুই পাশে দুই বাড়ি(ভট্টাচার্য দের দুই ভাই ), যা এলাকায় বড় বাড়ি ও ছোট বাড়ি নামে পরিচিত। বছরের ছ মাস করে দুই বাড়ির পুজোর ভার পড়ে। আপাত বৈচিত্রহীন এই মন্দিরের সামনে খানিকটা ফাঁকা জায়গা, এখানে বছরের বিভিন্ন সময় না না অনুষ্ঠান হয়,  বিশেষ করে কালী পুজো, কৌশিকী অমাবস্যা পৌষ কালী পুজো হয় খুব ধুমধাম করে। পূর্বেই জানালাম মন্দির প্রাঙ্গনে আলাপ হল ভট্টাচার্য বাড়ির বড় ঘরের জামাই শ্রী শ্যামাপদ বটব্যাল ও সন্দীপ ভট্টাচার্য এর সাথে, এনারা বর্তমানে মন্দিরের সেবাইত। কথায় কথায় আরো জানলাম এই মাতৃ মন্দিরের বর্তমান বিগ্রহ বেশ অভিনব, কারণ বেদি থেকে সমগ্র বিগ্রহ এক সিমেন্ট এর ধাঁচে নির্মিত, তাই একই মূর্তিতে প্রতি বছর পুজো করা হয়। কেবল প্রতি বছর পুজোর আগে মূর্তি রং করা হয়। আরো যেটা সবচেয়ে ভালো লাগলো এই মন্দিরে কোন বলিদান প্রথা নেই। ভোগ সম্পর্কে জানলাম প্রতি শনিবার, মঙ্গলবার মাকে ভোগ নিবেদন করা হয়, এছাড়া যাঁরা দূর থেকে যাবেন টেলিফোনে বটব্যাল বাবু, বা ভট্টাচার্য বাবুকে বলে রাখলে ও কজনের জন্য ভোগ বানানো হবে, জানিয়ে রাখলে তারা ভোগের আয়োজন করেন। 

#পথনির্দেশ :- এবার জানাই কিভাবে আসবেন। শহর ব্যান্ডেল এর কাজীডাঙ্গা হয়ে সরস্বতী নদী পেরিয়ে যে রাস্তা বাঁয়ে ঘুরে গেছে, ওই বাক ধরে কিছুটা এগিয়ে গেলেই সবুজে ঘেরা অখ্যাত গ্রাম এই কোড়লা। তাই আপনি যে দিক থেকেই আসুন ব্যান্ডেল স্টেশন নেমে টোটো করে সহজেই আসতে পারেন কোড়লায়। টোটোকে কোড়লা কালী বাড়ি বললেই আপনাকে নিয়ে আসবে। যে কোন দিন এলেই শান্ত, স্নিগ্ধ পরিবেশে এক ধর্মীয় ভাব আপনাকে উদ্বেল করে তুলবে, বলে দিতে পারি। আপনি আস্তিক যদি নাও হন, কোন অসুবিধা নেই, শুধু একটা অখ্যাত গ্রামের সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসতেই পারেন, সাথে উপরি পাওনা হতে পারে কথাশিল্পী শরৎ চন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এর স্মৃতি বিজড়িত  ব্যান্ডেল এর দেবানন্দপুর অথবা রাজহাট এর লাহিড়ী বাবার আশ্রম। তাই একবেলা সময় বের করে ঘুরে আসুন, নেহাত নিরাশ হবেন না, বলতে পারি। 


সবশেষে আরেকটি প্রয়োজনীয় কথা মন্দির প্রতিদিন খোলা থাকে সকাল ৬:৩০ থেকে বেলা ১:০০ ও বিকেলে ৪:৩০ থেকে রাত ৮:০০ টা পর্যন্ত। 
জয় কোড়লা সিদ্ধেশ্বরী মায়ের নাম নিয়ে একবার ঘুরেই আসুন না, দেখুন কেমন লাগে.... 

নিচে আমার মোবাইলে তোলা কিছু ছবি দিলাম, দেখুন কেমন লাগে। 
©ছবি ও লেখা :- সেন মহাশয়



টাওয়ার অফ সাইলেন্স


আজকের কলকাতার অন্যতম ব্যস্ত রাস্তা বেলেঘাটা মেইন রোড। সারাদিন রাস্তায় গাড়ির জট লেগেই থাকে। কিন্তু একদিন এখানে মানুষের বসতি বলতে কিছুই ছিল না। দিনের বেলা ছিল ডাকাতদের আস্তানা, আর সন্ধে নামলেই শেয়াল ডাকত। সে আজ থেকে দুই শতাব্দী আগের কথা। সে দৃশ্য কল্পনাতেও দেখতে পারবেন না। কিন্তু ‘টাওয়ার অফ সাইলেন্স’ তা দেখেছে। শেয়ালদা স্টেশন পেরিয়ে শহরের একপ্রান্তে সেই ভূতের রাজত্বের সাক্ষী আজও নীরবে দাঁড়িয়ে আছে রাস্তার একধারে। তার নামের মধ্যেই যে সেই নীরবতার কথা আছে।

বিরাট ফটকের ওপারে উঁচু মিনারটা আজও শহরের সমস্ত কোলাহলের সীমানা পেরিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। চারপাশটা বদলে গিয়েছে অনেকটা। এখন আর আশেপাশে চিল-শকুনের দেখা মেলে না। কিন্তু একটা সময় তারাও এখানে অপেক্ষা করে থাকত। কখন একটি মৃতদেহ আসবে, পল-বিয়ারারের দল সেটিকে নীরবে তুলে দেবে মিনারের চূড়ায়। আর তারপর সেই মৃতদেহের দিকে ঝাঁকে ঝাঁকে এগিয়ে আসবে মাংসাশী পাখিরা। তখন ডানার ঝাপটে আর অবিরাম চিৎকারে সমস্ত নীরবতা ভেঙে খানখান হয়ে যাবে। এখন আর চিল-শকুনেরা অপেক্ষা করে থাকে না। মৃতদেহও আসে না বললেই চলে। কলকাতায় আর পার্সি মানুষের সংখ্যাই বা কত! সব মিলিয়ে বড়জোর ৪০০ হবে। তবে উনিশ শতকে এই কলকাতা শহরেই এক লক্ষ পার্সি নাগরিক বাস করতেন।

কম্পানি বাহাদুরের কৃপায় কলকাতা তখন নতুন কসমোপলিটান। আইনি-বেআইনি নানাধরনের ব্যবসার কেন্দ্রে তখন কলকাতা। আর সেই ব্যবসার টানেই পৃথিবীর প্রায় সমস্ত জাতি-ধর্ম-বর্ণের মানুষ এসে আস্তানা তৈরি করছেন এখানে। আর তার মধ্যে অগ্নি-উপাসক পার্সিরা ধনে-বিদ্যায়-ঐশ্বর্যে এগিয়ে ছিল সকলের থেকেই।

পার্সি ব্যবসায়ী দাদাভাই বেহরামজি বানাজি সুরাট থেকে কলকাতা এসেছিলেন ১৭৬৭ সালে। তবে ব্যাপকভাবে পার্সি বসতি গড়ে উঠতে থাকে উনিশ শতকের দ্বিতীয় দশকে। মূলত প্রত্যেকেই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। কলকাতায় তাঁদের উদ্যোগে তৈরি হয়েছিল একাধিক এন্টারপ্রাইজ। তবে বাঙলা ও বাঙালির সঙ্গে মিলেমিশে যেতে তাঁদের বেশি সময় লাগেনি। অনেকের তো পদবীর শেষে ‘বেঙ্গলি’ শব্দটাও যুক্ত হয়ে গিয়েছিল।

তেমনই একটি পরিবার সোরাবজি পরিবার। কলকাতার পার্সিদের মধ্যে একজন অগ্রণী ব্যবসায়ী ছিলেন নওরোজি সোরাবজি বেঙ্গলি। এদেশের পার্সি জনজাতির মানুষদের একজোট করতে বিশেষ ভূমিকা নিয়েছিলেন তিনি। আর সেই সূত্রেই কলকাতায় তৈরি করেছিলেন একটি দখমা। ইংরেজিতে যাকে বলে ‘টাওয়ার অফ সাইলেন্স’।

পার্সির মৃতদেহকে কবরে দেয় না, চিতায় পোড়ায় না। মৃত্যুর পর তাদের লোকালয়ের বাইরে একটি উঁচু মিনারের উপর রেখে আসে। সেখানে মাংসাশী পাখির দল আত্মসাৎ করে মৃত মানুষটির শরীর। এভাবেই প্রকৃতির মধ্যে সেই শরীর মিশে যায়। এই মিনারকেই বলা হয় দখমা। বেলেঘাটা অঞ্চলে জঙ্গলের মধ্যে দখমা তৈরির কাজ শুরু হয় ১৮২২ সালে। খরচ পড়েছিল তখনকার দিনে ৩৫ হাজার টাকা। মূল উদ্যোক্তা ছিলেন নওরোজি। সঙ্গে অন্যান্য ব্যবসায়ীরাও এগিয়ে এসেছিলেন। ১৮২৮ সালের ২৮ জানুয়ারি উদ্বোধন হয় টাওয়ার অফ সাইলেন্স। পূর্ব এশিয়ায় এটাই পার্সিদের প্রথম শেষকৃত্যভূমি। রেঙ্গুন, সিঙ্গাপুর, মালয় থেকেও মৃতদেহ বয়ে আনা হত বহুদিন। এখন আর সেই প্রথা নেই বললেই চলে। পার্সিরাও অনেকে বিকল্প সৎকারের ব্যবস্থা করছেন। তাছাড়া চিল-শকুনও তো আর নেই। মৃতদেহ সৎকারের জন্য এই দখমার চূড়াতেও বসানো হয়েছে সৌরচুল্লি। কিন্তু দুশো বছরের ইতিহাস বুকে নিয়ে আজও দাঁড়িয়ে রয়েছে ‘মৌন শিখর’।

কলকাতার বুকে এমন কত ইতিহাস আজও রয়ে গিয়েছে। আমরা রাস্তায় ব্যস্ত চলাফেরার মধ্যে মাঝে মাঝে সেসবের সামনে থমকে দাঁড়ান অনেকেই। কিন্তু ইতিহাসের কতটুকুই বা খোঁজ রাখি আমরা? অনেক অনেক বছর আগে, যখন বেলেঘাটার খালটাও ছিল না, তখন কেমন ছিল এই এলাকা। সেই জঙ্গলের নিশ্ছিদ্র নীরবতার চেহারা কেমন ছিল? আজ আর কিছুই জানা যাবে না। টাওয়ার অফ সাইলেন্সের আশেপাশে তার খানিকটা আভাস হয়তো পেতে পারেন।

তথ্যসূত্র: অচেনা এই কলকাতা, রমাপদ চৌধুরী (সম্পা.), টাওয়ার অব সাইলেন্স, অশোক ভট্টাচার্য
কলকাতায় এখন চারশোর কিছু বেশি পার্সির বাস, শীর্ষ বন্দোপাধ্যায়, আনন্দবাজার পত্রিকা


বীরচন্দ্রপুর ,‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌বীরভূম 


বীরভূমের তীর্থস্থানগুলির অন্যতম এখন বীরচন্দ্রপুর। এখানে আপনি ভ্রমণে এলে একসাথে অনেকগুলি তীর্থস্থান ভ্রমন করতে পারবেন। যেমন বীরচন্দ্রপুর ইসকন মন্দির, নিতাই বাড়ি, বাঁকারায় মন্দির বা একচক্র ধাম আরও কত কি।
যাতায়াতের জন্য আপনি সিউড়ি, বোলপুর অথবা সাঁইথিয়া যেকোনো পথই বেছে নিতে পারেন। তারাপীঠ থেকে মাত্র ৯ কিমি দূরত্ব।



আরামবাগের তিড়োলের সিদ্ধেশ্বরী ( খ্যাপা ) কালীবাড়ি


https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=399605840979786&id=284165832523788&sfnsn=scwspwa&funlid=q0RKX5jzjIjWCK3f


উত্তমকুমার - গোহালপোতা ও ভরত দাস

#উত্তমকুমার_গোহালপোতা_ও_ভরত_দাস

বাংলা চলচ্চিত্রের স্বর্ণযুগে চন্ডীমাতা ফিল্মস এর তখন রমরমা । কর্ণধার সত্যনারায়ণ খাঁ । নিজের জমিদারী হাওড়া জেলার জগৎবল্লভপুরের গোহালপোতা গ্রামকে বেছে নিয়েছিলেন বেশকিছু বিখ্যাত সিনেমার লোকেশন হিসেবে । ধন্যি মেয়ে, সন্ন্যাসী রাজা, বনপলাশীর পদাবলী, আরও অনেক । 
দুই ভ্রাতৃপ্রতীম বন্ধুর সঙ্গে গুগল GPS কে পথপ্রদর্শক করে আজ, শনিবার হাজির হয়েছিলাম সেই গ্রামে । আর, মেঘ না চাইতেই জলের মতো এক স্থানীয়, সহৃদয় মানুষের সঙ্গে দেখা হলো সেই বিখ্যাত মাঠে । নিতাই । মূহুর্তের মধ্যে নিতাই হয়ে গেলেন গাইড । শুরু হল মাঠ দিয়ে । এই মাঠেই শুটিং হয়েছিল সেই ফুটবল খেলার । ধন্যি মেয়ে সিনেমায় উত্তমকুমারের দলের সেই ফুটবল ম্যাচ যার রেফারি পুরোহিত রবি ঘোষ, কমেন্টেটর সুখেন দাস ও তেঁতুল গাছের ওপর জয়া ভাদুড়ী । মনে পড়ে ? পাশেই শ্মশান । 
এবার নিতাই বললেন, "দেখবেন সেই বাড়ি, ঘর, যেখানে এসে থাকতেন উত্তমকুমার, সুচিত্রা সেন ; দোলের দিন উত্তমকুমার ও সুপ্রিয়া আসতেন রং খেলতে ?" 

৩০০ মিটারের মত হেঁটে গিয়ে হাজির হলাম সেই বাড়িটার সামনে । হঠাৎ নিতাই বললেন, "দাঁড়ান, ভরতদাকে ডেকে আনি । ভরতদাই উত্তমকুমারকে কলকাতা থেকে গাড়ি করে নিয়ে আসতো ও ফিরিয়ে নিয়ে যেত । সেইই সবচেয়ে ভালো বলতে পারবে সব ইতিহাস ।" 
তারপর, কয়েকঘন্টা আমরা তিনজন ৭৫ বছর বয়সী ভরত দাসের ও নিতাইয়ের সৌজন্যে পৌঁছে গেলাম বাংলা সিনেমার উত্তমযুগে । কত স্মৃতি তাঁদের ভাঁড়ারে !!! কোন ঘরে কে থাকতেন, সুচিত্রা সেন, সুপ্রিয়া দেবী, অমল পালেকর, ভিক্টর ব্যানার্জী, মাধবী মুখোপাধ্যায়.....লম্বা তালিকা । কত ঘটনা, কোথায় কোন সিনেমার কোন দৃশ্যের শুটিং, কোন পুকুরে "দেখুক পাড়া পড়শিতে কেমন মাছ গেঁথেছি....." গানের চিত্রায়ন ....সব গড়গড় করে বলে যাচ্ছিলেন আর আমরা মন্ত্রমুগ্ধের মত শুনছিলাম ও দেখছিলাম আর কল্পনা করার চেষ্টা করছিলাম মনটাকে বহুবছর পিছিয়ে নিয়ে গিয়ে ।
এবার ফেরার পালা । দুজনকে আমন্ত্রণ জানালাম আমাদের সঙ্গে বসে চা খেতে । দু-চারবার না না করে রাজী হলেন । পাড়ার চায়ের দোকানে চা খেতে খেতে আরও কিছু কাহিনী শোনা হলো । চায়ের দাম দিতে গিয়ে আরেক চমক । কিছুতেই দাম দিতে দেবেন না । আমরা নাকি অতিথি । আর, এই যে আমরা আগ্রহ নিয়ে দেখতে ও জানতে এসেছি, এটা নাকি খুব আনন্দিত করেছে তাঁদের । 

আবার আসবো, এই প্রতিশ্রুতি দিয়ে, একটা ঘোরের মধ্যে এইমাত্র বাড়ি ফিরলাম ।










ফুলিয়া , হবিবপুরের ইস্কন মন্দির 

''ভ্রমন পিয়াসী''রা গত 23শে ফেব্রুয়ারী ঘুরে এলো কৃত্তিবাসের বাড়ি থেকে। ফুলিয়ায় কবি কৃত্তবাস ওঝার বাড়ি আর হাবিবপুরের ইস্কন মন্দির এবার আমাদের লক্ষ্য ছিলো। তবে ইস্কনের মন্দিরের তুলনায় কৃত্তিবাসের বাড়ির টানটাই ছিলো বেশী। সেদিন সকাল 7:30-এর ট্রেন ধরতে আমরা সময়মতো দমদম ষ্টেশনে পৌছে যাই। 2ঘন্টার সফরে পৌঁছে যাই ফুলিয়া। ষ্টেশনে নেমে টোটো ধরে সোজা কৃত্তিবাসের বাড়ি। তার আগে বাড়ির লাগোয়া বড় পাঁচিল ঘেরা সুবিশাল মাঠসহ একটি সরকারী হাই স্কুল কবির নামে। তার ভিতরে কৃত্তিবাস কুপ আর একটি মন্দিরে কৃত্তিবাসের মুর্তি আছে। এর ঠিক গায়েই কবির বাসস্থান। এখানে এখন কৃষ্ঞ মন্দির ইত্যাদি আছে। মন্দিরের পিছনে গোয়ালঘর। মন্দিরের পাশে কবির অস্থি সমাধি। বিশাল উঠোনে বটসহ কিছু বড় গাছ। দোলের সময় ভোজ হয়। একটি বড় কড়াই রাখা একপাশে। এখানে কিছুক্ষন কাটানোর পর আমরা গঙ্গার পাড়ে গেলাম সেখানে চা পান করে একটু ফ্রেশ হয়ে আমাদের টোটোতেই হাবিবপুর ইস্কন মন্দিরের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। ফুলিয়ার আগের ষ্টেশনই হাবিবপুর। আমরা টোটোতে ষ্টেশন থেকে মিনিট দশেকের দুরত্বে ইস্কনের মন্দিরের সামনে পৌঁছলাম। মন্দিরটি বেশ ছোটো। এখানে দু রকমের ভোগের ব্যাবস্থা আছে। মহাভোগ 60/- টাকা আর রাজভোগ 150/- টাকা। আমরা মহাভোগই নিয়েছিলাম কারন রাজভোগের অতো খাবার আমাদের পক্ষে খাওয়া সম্ভব ছিলো না। একটু ভিতরে এদের অফিসের দোতলায় ঘর ভাড়ায় পাওয়া যায়। শুনেছি 2000/- টাকা। আমরা এসবদিকে যাইনি। বরং মন্দিরের পাশের গাছের নীচের চেয়ারে ও ছাউনিতে বসে গল্প করে সময় কাটিয়েছি। এখানে একটি চিনার গাছেরও দেখা পেয়েছি। আমার ধারনা ছিলো এখানকার গরম আবহাওয়ায় চিনার গাছ হয় না।

(আমাদের ভ্রমন পিপাসু মহিলাদের গ্রুপ ''ভ্রমন পিয়াসী'' আজ আর কারুর কাছে অপরিচিত নাম নয়। আজ 2 বছরের বেশী সময় ধরে আমরা নানা স্থানে আমাদের ভ্রমন কার্য চালিয়ে যাচ্ছি। কখনও ডে ট্রিপ, কখনও স্টেয়িং। ভবিষ্যতের ঝুলিতে অপেক্ষা করে আছে আরও অনেক বেড়ানো।)
©মৌসুমী রায় ঘোষ


হরসিল ভ্রমণ, গাড়য়াল  হিমালয়। 




আজকে বলব গারবাল হিমালএর এক সুন্দর পাহারি গ্রাম হারসিল এর কথা।


গংগত্রী ধামের পথে ২৬ কিমি আগে সুন্দর সেই গ্রাম। উত্তরকাশি থেকে ৮০ কিমি দুরত্ত। উত্তরকাশি থেকে প্রায় ৫০০০ ফুট ওপরে ২৭০০ মি উচ্চতা তে হারসিল। গাংনানি পেরতেই শুরু প্রানান্তকর চড়াই। এপথে সুখিটপ সর্বোচ্চ স্থান। সুখি পেড়িয়ে ধীরগতিতে নেমে আসা ভাগীরথী উপত্যকায়। দুপাশের পরিবেশ ইতিমধ্যে পরিবরতিত। চারিদিকে ঝকঝকে হিমালয় আর মাঝখানে বিস্তৃত উপত্যকায় ছুটে চলা পান্না সবুজ ভাগীরথী। দুপাশে আপেলের বাগিচা। সুখিটপ পেড়িয়ে আর অল্প সময়ের মধ্যে পৌছে গেলাম হারসিল।



প্রথম দেখাতেই হারসিল ভালো লেগে যায়। ভাগীরথীর উপর বেইলি ব্রীজ পেরিয়ে মূল জনপদে প্রবেশ। প্রশংগত বলে রাখি গাড়ওয়াল মন্ডল বাংগালো পযন্ত গাড়ি যায়না এক্ষেত্রে বাজার থেকে ৫০০ মিটার হেটে নিচে যেতে হবে।
আমাদের বুকিং ছিল ডিলাক্স হাট এ। এটি একদম নদীর ধারে। সারাদিন বারান্দায় বসে ভাগীরথীর ছন্দময় নৃত্য দেখে সময় চলে যায়। নদীর পেছনে বরফাচ্ছন্ন হিমালয়। এক সপ্নের পরিবেশ।




পরের দিন আমাদের প্রথম গন্তব্য মুখবা গ্রাম। হারসিল থেকে ২ কিমি দূরে এই গ্রামে বাস পুজারী সম্প্রদায়ের মানুষজন। শতাব্দী ধরে এখানকার পুরহিত রাই গংগত্রী ধাম এর পুজার কাজ করে চলেছেন। আমরা হারসিল পৌছেছি অক্ষয় ত্রিতিয়ার ২ দিন আগে। দীপাবলি থেকে অক্ষয় ত্রিতিয়া এই শীতকালীন  সময় গঙ্গা মাতা পূজিত হন মুখবা গ্রামএর মন্দিরে। গংগত্রীর মূল মন্দির তখন বরফাচ্ছাদিত এবং বন্ধ। অক্ষয় ত্রিতিয়ার আগের দিন এক বরনাঢ্য যাত্রা র মধ্যে দিয়ে গঙ্গা মাতা কে মুখবা থেকে গংগত্রীর মূল মন্দিরে নিয়ে যায়া হয়।  সেই বিশেষ যাত্রা দেখতেই আমাদের হারসিল ভ্রমণ।




মুখবা পৌছতেই গ্রামের মানুষ আমাদের সাদর আপ্যায়ন করলেন। মন্দির সেইদিন গোবর দিয়ে ধোয়া চলছিল আগামীকালের জন্য। আমরা   মন্দিরে প্রবেশ করে মা গঙ্গার আরতি তে অংশগ্রহণ করলাম। গঙ্গা মাকে এতটা কাছ থেকে দেখতে পাব ভাবনা র বাইরে ছিল। এই অপূর্ব প্রাকৃতিক পরিবেশে গঙ্গা মাতার আরাতি দেবতাত্মা হিমালয়ের আধ্যাত্মিকতাকে আরও বেশি করে অনুভব করালো।




মুখবা গ্রামটা হেটে ঘুরে দেখলাম। পাহাড়ি রীতির পুরনো সব কাঠের বাড়ি। চারপাশে আপেলের বাগিচা। গ্রাম থেকে সুন্দর দেখা যায় শ্রীকন্ঠ পিক। প্রায় ২১০০০ ফিট উচ্চতার এই পিক গ্রামের প্রহরী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে বলে মনে হয়।




আমাদের পরের গন্তব্য গংগত্রী। হারসিল থেকে সুন্দর রাস্তা অল্প চড়াই  কিন্তু বেশ চওড়া। পথে পড়ে আরেক অনিন্দ্য সুন্দর জনপদ ধারালি। এখানে উপত্যকা আরও বিস্তৃত ভাগীরথীর সৌন্দর্য অপার। ধারালি পেড়িয়ে ভাইরঘাটি হয়ে এগিয়ে চল্লাম গংগত্রীর দিকে। পথে একজায়গায় পান্না সবুজ ভাগীরথী নদী আর বরফাচ্ছাদিত ভাগীরথী পিক কে এক ফ্রেম এ পেয়ে গেলাম। অবিস্মরণীয় সেই সৌন্দর্য।




গংগত্রী পৌছে দেখি গঙ্গা মাতার আগমনের জন্য জনপদ নতুন করে সেজে উঠছে। দোকানপাট নতুনভাবে রং হচ্ছে। চারিদিকে একটা জমজমাট পরিবেশ। আমরা ধীরপায়ে চলে এলাম গংগত্রীর মূল মন্দিরে। সম্পুর্ণ মারবেলের তৈরি এই শ্বেত শুভ্র মন্দির নীল আকাশের নিচে এক অসম্ভব সুন্দর রূপে ধরা দিল। মন্দিরের পাশেই ভাগীরথীর ঘাট। সেখান থেকে ভাগীরথীর একদম চরন স্পর্শ করা যায়। খরস্রোতা ভাগীরথী এখানে ধীর লয়ে বয়ে চলেছে। চারিদিকে এক অপার শান্তি। কিছুটা সময় নদীর ধারে কাটিয়ে আবার ফিরে চল্লাম হারসিল এর পথে।





পরের দিন আমাদের আবার গন্তব্য সেই মুখবা গ্রাম। আজকের বিশেষ অনুশঠান গঙ্গা মাতার ডুলি যাত্রা। সকাল থেকেই উত্তরকাশি এলাকার গ্রামের মানুষ জমা হয়েছেন মন্দির চত্তরে। আমরা মন্দিরে পৌছতেই গ্রাম বাসীরা সাদর আপ্যায়ন জানালেন। কিছু সময়ের মধ্যেই অনুশঠান শুরু হল। পাহাড়ি বাদ্য আর নাচের তালে তালে এক অদ্ভুত পরিবেশ তৈরি হল। প্রায় ১ ঘন্টা ধরে চল্ল এই নাচ। তারপর মন্দিরের মূল ফটক খুলে ভক্তরা কাধে করে নিয়ে এলেন গঙ্গা মার ডুলি। এবার সবার আশীর্বাদ নেবার পালা। এ অনেকটা আমাদের বিজয়া দশমীর আবহ। গ্রামের মেয়ে গঙ্গা গ্রাম ছেড়ে আগামী ৬ মাসের জন্য চলেছে গংগত্রী ধাম। গ্রামের সকলের চোখে জল। অবশেষে পুজারির দল ডুলি নিয়ে গ্রাম ছেড়ে পাহাড়ি পথে এগিয়ে চল্ল গংগত্রী ধাম এর দিকে। মন্দিরে তখন গ্রামবাসী ভক্ত আর ভ্রমণ পিপাসুদের একান্ত আলাপচারিতা৷ হিমালয়এর বুকে ৯০০০ ফুট উচ্চতায় তখন এক অসাধারণ মিলনতীর্থ।





I love VIETNAM ::




📸 📖 Hello Ha Long Bay! How you doing  buddy 😍. My favourite place of all Vietnam 🇻🇳. I had spent all my days cruising in those ships by visiting world heritage sites, dinning Vietnamese sea cuisines, kayaking between mountains, trekking in hidden caves, sleeping under the starts..Bla Bla Bla .. Really difficult to list out 🤪

Vietnam is one of the most visited travel destinations in south East Asia for many reasons. Do you know the movie skull island was shot here! Yes it is! Every heavenly place we see in the movies are not VFX shots 🙈. Earth holds lot of hidden gems 😍. I wish to ssee Vietnam 🇻🇳 detaching its anchors soon and pick up all the travellers who are waiting to aboard 🤗

Would you go here after quarantine 🤔. Let me know in the comments section by tagging your travel partner 👫🏻

What goes around comes around!
Let’s start Respecting & Preserving Mother Nature at-least now! 🌏 ✊

PC-@www.instagram.com/vamsitrim

For More Travel Adventures & Photography Follow @www.instagram.com/vamsitrimphotograph


ভিয়েতনামে মাইসন স্যাংচুয়ারি চত্বরে মাটি খুঁড়ে উদ্ধার করা হলো নবম শতাব্দীর শিব লিঙ্গ ! আর এটা করছে ভারতের Archaeological Survey of India (ASI). এই MySon চত্বর ইতিমধ্যে UNESCO-র স্বীকৃতিপ্রাপ্ত। আর এখানে ধ্বংসপ্রাপ্ত হিন্দু মন্দির তথা স্থাপত্য যত্রতত্র ছড়ানো ! ভারতের বিদেশ দপ্তর এক টুইটে জানিয়েছে, এই আবিষ্কার ফের প্রমাণ করলো ভারতের প্রাচীন সভ্যতা তথা বন্ধুত্বপরায়ণতা গোটা এশিয়া তথা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছিল অতীতে। তথ্য/ছবি : #ASI










🌷#ওঁ_শ্রী_শ্রী_কামাক্ষ্যা_মাতা_শরণম্🌷

::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::

🌹 অম্বুবাচী 🌹

হিন্দুশাস্ত্রে পৃথিবীকে মা বলা হয়। বেদে ও পৌরানিক যুগে পৃথিবীকে ধরিত্রীমাতা বলা হত। তাই পৃথিবী আমাদের মা, এক কথায় সবাই আমরা পৃথিবীর সন্তান। মহাজাগতিক ধারায় পৃথিবী যখন সূর্যের মিথুন রাশিস্থ আদ্রানক্ষত্রে অবস্থান করে সেদিন থেকে বর্ষাকাল শুরু ধরা হয়। আমরা জানি, মেয়েদের ঋতুকাল বা রজঃস্বলা হয় এবং একজন নারী তারপরই সন্তান ধারনে সক্ষম হয়।
 ঠিক তেমনি প্রতিবছর অম্বুবাচীর এই তিনদিনকে পৃথিবীর ঋতুকাল ধরা হয়। এর সাথে প্রাচীন কৃষিভিত্তিক উৎসব ব্যবস্থা জড়িয়ে আছে। এই তিন দিন জমিতে কোন চাষ করা হয় না। বর্ষায় সিক্তা পৃথিবী নতুন বছরে নতুন ফসল উৎপাদনের উপযোগী হয় । উর্ব্বরতা কেন্দ্রিক কৃষিধারায় নারী এবং ধরিত্রী সমার্থক বলে গণ্য করা হয় । 
আষাঢ় মাসের শুরুতে পৃথিবী বা বসুমতী মাতা যখন বর্ষার নতুন জলে সিক্ত হয়ে ওঠেন তখন তাকে ঋতুমতী নারী রূপে গন্য করা হয় এবং শুরু হয় অম্বুবাচী, একে বলা হয় অম্বুবাচী প্রবৃত্তি। প্রবৃত্তির ঠিক তিন দিন পরে সেটা শেষ হয়, সেটা হল অম্ববুচি নিবৃত্তি। এই নিবৃত্তির পরই প্রাচীন কালে জমি চাষ করত কৃষকেরা। এখনও বিভিন্ন জায়গায় এ নিয়ম রক্ষা করা হয় । 
ভারতের বিভিন্ন জায়গাতে এটা রজোউৎসব নামেও পালিত হয়। আসামের কামরুপে কামাখ্যা দেবীর মন্দির এই তিনদিন বন্ধ থাকে। আমাদের প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী ঋতুকালে মেয়েরা অশুচী থাকে। একই ভাবে পৃথিবী এই অম্বুবাচী বা অমাবতীর তিন দিন অশুচী থাকে বলে চিন্তা করা হয়। 
এ সময় ব্রহ্মচারী, সাধু-সন্নাসী , যোগীপুরুষ, বিধবা মহিলা এরা কেউই অশুচি পৃথিবীর উপর আগুনের রান্না কিছু খান না । বিভিন্ন ফলমূল খেয়ে থাকেন এই তিন দিন। যাই হোক এটা ধর্মের একটা লৌকিক আচার। প্রতি বছর আষাঢ় মাসের ৭ তারিখে এটা শুরু হয় এবং ১০ তারিখে শেষ হয়।
সংগ্রহঃ

#জয়_মা_কামাক্ষ্যা।









রামেশ্বরম


"যারা আসেন এই রামেশ্বরমে আর আমার আশীর্বাদ প্রার্থনা করেন, তাদের চিরজীবনের নিবাস শিবলোকে স্থির হয়ে যায়, তাদের #পুনর্জন্মের_বন্ধন সব কেটে যায়"
~ #শ্রীরাম
#রামচরিতমানস,
#তুলসীদাস।

চারধাম যাত্রায় রামেশ্বরমের গুরুত্ব:
উত্তরে #বদরি_নারায়ন_ধাম, পূর্বে #পুরী_জগন্নাথধাম, পশ্চিমে #দ্বারকা_শ্রীকৃষ্ণ মন্দির আর দক্ষিণে #রামেশ্বরম মন্দির।
কথিত রয়েছে দিনের শুরুতে নারায়ন রামেশ্বরমে স্নান করেন। দ্বারকা তে নববেশ ধারন করেন। বদরি নারায়নে ধ্যান করেন। পুরীতে খাবার খান। পুনরায় ফেরেন দ্বারকাতে, তখন শয়ন করেন।

তিন ধাম হয়ে গেছে ঈশ্বর কৃপায়, আজ চলেছি রামেশ্বর মন্দিরে। যখন ব্রিজ পার হচ্ছি দেখি পাশে চলেছে রেল ব্রিজ। এটি অন্যতম লম্বা ব্রিজ। নিচে আকাশি নিল সমুদ্র। ক্রমশ দূরে ফিরোজা রং নিয়েছে। নিল রংয়ের নানা shadeএ সমুদ্র যেন আজ আমাদের স্বাগতম করছে। কি তার রূপ চোখ ফেরানো যায় না।
দূরে বেশ কিছু রঙিন নৌকো আর সবুজে সবুজ স্থলভাগ সেই সমুদ্রের ফিরোজা রঙে যেন নতুন কিছু pastel ঢেলেছে। অপূর্ব এক ফ্রেমে বাঁধা ছবি।
অনেক দূরে দেখা যাচ্ছে শ্রীরামসেতু। আহা দেখেও শান্তি। হলেই বা দূরে চর্মচক্ষু তো হল স্বার্থক...

পাশের রেল ব্রিজটির নাম #পাম্বন_ব্রিজ। এটি প্রয়োজনমত খুলে যায় জাহাজ চলাচলের জন্য আবার বন্ধ হয়ে যায় যখন আসে ট্রেন। এ এক অদ্ভুত প্রযুক্তির নিদর্শন তো বটেই।
প্রায় 2.5 কিমি লম্বা এই ব্রিজ তৈরিতে সময় করে লেগেছিল প্রায় 14 বছর।





ব্রিজ পেরিয়ে ঢুকলাম আমরা রামেশ্বর মূল ভূখণ্ডে। বেশি বড় বড় ঘর নেই। ছোট ছোট উচ্চতার ফাঁকা বসতি। শুনলাম মাছ ধরা মূল জীবিকা এখানের।

বেশ লাইন রয়েছে মূল মন্দিরের সামনে। আমরাও দাঁড়ালাম তবে সময় বেশি লাগল না।
ঢুকলাম মূল চত্ত্বরে। পাশে একটা লম্বা বারান্দার সামনে দাঁড়ালাম। গাইড আমাদের দাঁড় করিয়ে দেখাল পাশের পিলারগুলো। দেখি সার সার পিলার সেই দূরে গিয়ে মিলেছে এক বিন্দুতে। অদ্ভুত স্থাপত্য।
এই সুবিশাল লম্বা বারান্দাটি এই মন্দিরের অন্যতম সেরা বৈশিষ্ট্য, যা আর কোন মন্দিরেই দেখা যায় না।





মন্দিরের বিভিন্ন অংশে নতুন করে পলেস্তারা চড়ছে। মেরামতির পাশাপাশি চলছে রং করার কাজ।

ঢুকলাম মূল মন্দিরে, রয়েছে পাশাপাশি দুইটি শিবলিঙ্গ। একটি #সীতা_দেবীর গড়া আরেকটি বজ্রঙবলির আনা।
দাঁড়িয়ে পুজো দিলাম। মোটামুটি সময় নিয়ে ভালোই হল আমাদের পুজো দেওয়া।
এখানে বিবাহিতদের নতুন করে বিয়ে করার বিধি রয়েছে। শ্রীরাম ও সিতাদেবী শ্রীলঙ্কা থেকে ফিরে এখানে নতুন করে বিবাহ করেন সেই রীতি স্মরণে।
আমাদের সাথে থাকা কয়েকজন করল বিবাহ। আমরা দাঁড়িয়ে উৎসাহ দিলাম। ফুল ছোড়া উলুধ্বনি দেওয়া এসবের মধ্যে দিয়ে চলল #বিবাহ_উৎসব।

মন্দিরের পাশে দেখলাম অনেকগুলো জলের কুন্ড। বাঁধানো রয়েছে। এই কুন্ডগুলির একেকটি জলের স্বাদ ও তাপমাত্রা একেক রকম।
পাশে স্নানের ব্যবস্থা রয়েছে।

এরপরে আমরা গেলাম #পঞ্চমুখী_হনুমান মন্দির দেখতে। তখনো সেই মূর্তি গড়ার কাজ অনেকটা বাকি।
এখানে দেখলাম সেতুবন্ধন থেকে আনা ভাসমান পাথর। বেশ বড় বড় পাথর রয়েছে। জোর করে জলে ডুবিয়ে দিলেও ছেড়ে দেওয়া মাত্র ভেসে উঠে।

#রামায়ন কথন অনুযায়ী সেতুবন্ধের আগে এখানে শ্রীরাম পুজো করেন তারপর সেতুবন্ধের কাজের সূচনা হয়।
এখান থেকে কয়েক কিমি দূরেই #ধনুষকডি থেকে শুরু হয়েছিল রামসেতু বাঁধার কাজ। নল ও নীল নামে দুই প্রযুক্তিবিদের তত্ত্বাবধানে বানরকুল শুরু করেছিল এই কাজ। অদ্ভুত সেই প্রযুক্তি যা আজও রয়ে গেছে।
শ্রীরামের নামে পুজো দিয়ে লিখে দেওয়া হত পাথরের উপর "শ্রীরাম" নাম। শ্রীরাম নামের মাহত্ম্যে সেই পাথর ভেসে উঠত বলে বর্ণিত রয়েছে রামায়নে।

বানরদের অক্লান্ত কাজ দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে শ্রীরামের সেবার জন্য কাঠবিড়ালির দল ছোট ছোট পাথর এনে সরবরাহ করতে থাকে #নল_ও_নীল কে।
কাঠবিড়ালি দলের এই সেবা দেখে আনন্দিত হয়ে শ্রীরাম নিজের হাত দিয়ে মতান্তরে তীর দিয়ে কাঠবিড়ালিদের পিঠে তিনটে দাগ এঁকে দেন বলে একটি বিখ্যাত কাহিনী রয়েছে।

প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি:
সেতুবন্ধের এই ভাসমান পাথর পৃথিবীর আর কোথাও দেখা যায় না।

.


#স্থান_মাহাত্য

বর্তমান মন্দিরের জায়গায় দাঁড়িয়েই শ্রীরাম রাবন বধের সংকল্পের উদ্দেশ্যে দেবী দুর্গা কে আবাহন করেন আর 101 নীলপদ্ম দিয়ে পুজো দেন।
দেবী দুর্গা একটি পদ্ম সরিয়ে নেন শ্রীরামকে পরীক্ষার উদ্দেশ্যে। যথাসময়ে পদ্ম না পেয়ে নিজের নয়নকমল #দেবী_দুর্গার উদ্দেশ্যে নিবেদন করতে চাইলে দেবী দুর্গা দেখা দিয়ে শ্রীরাম কে রাবনবধের আশীর্বাদ দান করেন বলে জানা যায়।

প্রসঙ্গত বলে রাখি~
শ্রীরাম পুজো করেছিলেন দেবী দুর্গার  শরৎকালে। এই সময়টা দেব দেবীদের নিদ্রার সময়। নিদ্রা ভেঙে অকালে ডাক দেবার জন্য এই পুজো অকাল বোধন নামে পরিচিত হয়।
আমাদের বাংলার বিখ্যাত দুর্গাপুজো এই অকালবোধন কেই স্মরণ করে হয়। শরৎকালে হয় তাই এই পুজো #অকালবোধন_শারদীয়_দুর্গোৎসব।

এইখানেই #বিভীষন প্রথমবার দেখা করেন শ্রীরামের সাথে।

এরপরে শ্রীলঙ্কা জয়ের পরে ফিরে এসে শ্রীরাম আবার এখানে পুজো দেবেন বলে ঠিক হয়।
সেই জন্যে বজ্রঙবলিকে পাঠান কৈলাশ। বজ্রঙবলির দেরি হয় আর এদিকে পুজোর সময় এসে গেছে তাই সিতাদেবী বালি দিয়ে একটি শিবলিঙ্গ তৈরি করেন। যা পুজো করেন শ্রীরাম।
পুজো শেষ হয় আর বজ্রঙবলিও এসে পৌঁছন দুইটি শিবলিঙ্গ নিয়ে। এরপরে সেই শিবলিঙ্গ আবার পুজো করেন শ্রীরাম। বিধান দেন যে এরপর থেকে আগে পুজো হবে বজ্রঙবলির আনা শিবলিঙ্গর, তারপর পুজো হবে সিতাদেবীর বানানো শিবলিঙ্গর।
সেই বিধি মেনে এখনো পুজো হয় এই নিয়মেই।

পাশের জলকুন্ডগুলি রয়েছে শ্রীরামের সৈন্যদলের জন্য।এইগুলো শ্রীরাম মাটিতে তীর ছুঁড়ে সৃষ্টি করেছিলেন। মন্দিরে রয়েছে 24 টি।
এছাড়াও রয়েছে বহু, সব মিলিয়ে রয়েছে 100 টির ও বেশি।

অন্য শিবলিঙ্গটি নিয়ে বজ্রঙবলি যেখানে পুজো করেন সেখানে বর্তমানে তৈরি হয়েছে #পঞ্চমুখী_বজরঙ্গি মন্দির।

রয়েছে #লক্ষণ_তীর্থ। যেখানে লক্ষণ স্নান করে নিজেকে যুদ্ধপাপ মুক্ত করেন।
এখানে প্রচুর মাছ রয়েছে। মাছেদের খাবার দিলে ওরা দেখা দেয় ঝাঁকে ঝাঁকে।

রয়েছে আরো বেশ কিছু ছোট বড় মন্দির।

মোটামুটি সব দেখে আমরা আবার ফিরলাম রামেশ্বরম মন্দিরে। এখানে আমাদের খাবার আয়োজন করা হয়েছে।
প্রথম মন্দির এখানে তৈরি করেন বিভীষণ।
বর্তমান এই মন্দিরটির কাজ শুরু হয় নবম শতাব্দীতে, তৈরি করেন রাজেন্দ্র চোলা। পরবর্তীতে পান্ড বংশ, চোলা বংশ, জাফনা বংশ, বিজয়নগর বংশ থেকে সেতুপতি রাজবংশ একে একে এই মন্দিরের রূপদান করেন। এবং বর্তমান রূপ পেতে সময় নেয় 900 বছর।

মন্দিরের অদূরেই রয়েছে এক মসজিদ। এবং রয়েছে কিছু মুসলিম পরিবার। এরমই এক পরিবারের সন্তান আমাদের ভারতের গর্ব, প্রয়াত প্রেসিডেন্ট ও বিজ্ঞানী #sir_আব্দুল_কালাম। উনি এই রামেশ্বর মন্দিরের সকালের আরতির ঘণ্টাধ্বনি শুনতে মন্দিরে আসতেন এবং রামেশ্বর মন্দিরের পূজারীর কাছে পড়াশোনা করতেন। মন্দিরের পূজারী তার নিজের সন্তানের সাথে শিশু কালাম sir কেও যত্ন সহকারে পড়াতেন বলে জানা যায়। 
সেই শিক্ষার প্রভাব সুদূরপ্রসারী হয়েছিল এবং সমস্ত ধার্মিক সঙ্কীর্ণতার উর্ধে উঠে উনি আজীবন নিজের কাছে একটি শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা রাখতেন বলে জানা যায়।
ধন্য শ্রীরামের আশীর্বাদ। এমন এক মহান ব্যক্তিকে আমরা পেয়েছি ভারতের মাটিতে। গর্ব হয়।

প্রণাম শেষ করে আমরা ফিরলাম গাড়ীতে। নিলাম সবাই মিলে সেই পুন্যধ্বনি-
🙏#জয়_শ্রীরাম🙏
🙏#জয়_সীতামা🙏
🙏#জয়_বজ্রঙবলি🙏

.
                                   ✍️ Prithwi Sen🖋️










শিবানী পীঠের দেবী ভবানী


 ধর্মতলা থেকে ৩২ কিলোমিটার আর গাড়িয়া থেকে মাত্র ১৬ কিলোমিটার দূরে বারুইপুর কুলপি রাস্তার বাঁপাশে একটি গলির ভিতর মা কালীর এই মন্দিরটি। দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার বারুইপুর একটি প্রসিদ্ধ স্থান। মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্যদেব স্বয়ং এই অঞ্চলে পদধূলি দিয়েছেন। বেশিদিনের কথা নয় ১৯৬৬ সালে এই মন্দির প্রতিষ্ঠিত হয়। মা আবির্ভূত হয়েছিলেন স্বপ্নাদেশের মাধ্যমে। মায়ের স্বপ্নাদিষ্ট হয়েছিলেন বারুইপুরের আদি ও অত্যন্ত সম্মানীয় ভট্টাচার্য পরিবারের স্বর্গত নারায়ণ দাস ভট্টাচার্য ও শান্তিলতা দেবীর জ্যেষ্ঠা কন্যা শ্রীমতি নিরুপমা দেবী চক্রবর্তী। নিরুপমা দেবীর বিবাহ হয়েছিল কাঁচরাপাড়ায়। বিবাহের পর তাঁর পদবী হয় চক্রবর্তী। শ্বশুর বাড়ি থাকাকালীন একদিন তিনি স্বপ্নে দেখেন বাপেরবাড়িতে পঞ্চাননের পুজো হচ্ছে। সেসময় পঞ্চানন মন্দিরে বাঁপাশে পুকুরের জলের মধ্যে একটি দেবী ঘট অবহেলায় পড়ে রয়েছে। স্বপ্নের মধ্যে সেই ঘটটিকে তুলতে গেলে সেই দেবী ঘটের মধ্য থেকে এক কালীমূর্তি আবিরভূত হয়ে নিরুপমাদেবীকে নির্দেশ দিলেন, দেবীঘটটি তুলে কোথায় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এর কিছুদিন পর নিরুপমা দেবী বাপের বাড়ি থেকে বারুইপুর এলে এখানেও সেই একই স্বপ্ন—ঘটটিকে তুলে প্রতিষ্ঠা করার জন্য মাতৃ আদেশ। নিরুপমা দেবীর মুখে মা কালীর স্বপ্নাদিষ্ট কথা শুনে তাঁরই জ্যাঠামশাই স্বর্গত দুর্গাদাস ভট্টাচার্য উৎসাহিত হয়ে দেবীঘটটি ১০ই শ্রাবণ বাংলা ১৩৭৩ মঙ্গলবার নবমী তিথিতে জল থেকে তুলে ঢাক, কাঁসর ও শঙ্খবাদ্য সহযোগে মন্দিরে প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীকালে দেবী প্রতিমা প্রতিষ্ঠার স্থানটির নাম হয় শিবানী পীঠ। পরদিন থেকে শুরু হল ভক্তদের উপর মায়ের অলৌকিক কৃপা প্রদর্শন।
ভট্টাচার্য বাড়ির পাশের বাড়ির একটি ছেলে বহুদিন নানা রোগে ভুগছিল। অনেক চিকিৎসা করেও কোনো ফল হয়নি। অবশেষে ছেলেটির মা করুণাময়ী মায়ের কাছে পুত্রের রোগ মুক্তির জন্য প্রার্থনা জানালেন। সর্বদুঃখহারিণী মা ভক্তের কাতর ডাকে সাড়া দিলেন। সেদিন দুপুরে নিরুপমা দেবী স্বপ্নে দেখলেন, মা বলছেন—পদ্মপুকুরে গিয়ে পুষ্করিণীর ওপারে একটা পাঁচিলের পাশে একটি সরু রাস্তায় একটি কড়ি দেখতে পাবি। সেটা নিয়ে ছেলেটির গলায় পরিয়ে দিবি। তাহলেই ভালো হয়ে যাবে। স্বপ্নাদিষ্ট মতো সেই স্থানে গিয়ে সত্যি সত্যি একটি অদ্ভুত দর্শন কড়ি পাওয়া গেল। যেন ছাঁচে ফেলা এক রমণীর মূর্তি। কড়িটি রোগগ্রস্ত ছেলেটিকে পরানোর পর সে সম্পূর্ণ আরোগ্য লাভ করে। মায়ের কৃপায় সেদিন থেকে বহু লোক উপকৃত হয়েছে বলে জানা যায়।   
ভারী সুন্দর এই মন্দিরের পরিবেশটা। তেমনই সুন্দর মন্দির। মন্দিরে অধিষ্ঠাত্রী দেবী হলেন দেবী কালিকা। অত্যন্ত সুন্দর নিমের দারুময় বিগ্রহ। সালঙ্কারা মায়ের দিকে তাকালে আর চোখ ফেরানো যায় না। এমনই জীবন্ত ও অপরূপা। এবার ঘটের সাথে দেবী কালিকার বিগ্রহ স্থাপিত হল ২৫ কার্তিক, ১৩৭৩ ঘোর অমাবস্যায়। শঙ্খ, ঘণ্টাবাদ্য সহকারে একশ আট ঘড়া গঙ্গা জল, সুগন্ধি, অগুরু, চন্দন, পুষ্পোদক প্রভৃতি দিয়ে মায়ের স্নান সমাপনান্তে নীল রঙ্গের বেনারসী পরানো হল। ফুল-মালা-চন্দনে চতুর্ভুজা মা সেজে উঠলেন। হাতে রুপোর খর্গ, মাথায় অপরূপ রুপোর মুকুট। মায়ের ইচ্ছানুসারেই নামকরণ হল ভবাণী। শিবাণী পীঠের মা ভবাণী।
ট্রেন এ শিয়ালদহ থেকে সাউথ সেকশন ট্রেনে বারুইপুর এসে অটোতে বা টোটোতে ১০ মিনিটের পথ। আর গাড়ির রাস্তা পুরোটাই অসম্ভব সুন্দর, বাইপাস দিয়ে এসে কামালগাজি ফ্লাইওভার ধরে বারুইপুর বাইপাস রোড, যেটা গোবিন্দপুর পদ্মপুকুর মোর থেকে বা দিকে বেঁকে বারুইপুর কুলপি রোড ধরে বারুইপুর রেল ব্রিজ টপকে ৩ মিনিট শিবানী পীঠ পৌঁছনো যায়।
পরিব্রাজক গৌতম
ভালো লাগলে মায়ের প্রচার করতে দয়াকরে কোনো রকম এডিট না করে শেয়ার করবেন।মা কালী আপনাদের মঙ্গল করুন।মনে রাখবেন আমরা সকলেই মায়ের প্রচারক।







মহাবলীপুরমের  মাখন  নাড়ু  ::


কৃষ্ণের মাখন নাড়ু (অপর নাম: বাণ ইরাই কল )হল ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের ইতিহাস-প্রসিদ্ধ শহর মহাবলীপুরমে অবস্থিত বিশালাকার একটি গ্র্যানাইট প্রস্তরখণ্ড। ভূমিতল থেকে ১.২-মিটার (৪ ফু) উচ্চতায় একটি ঢালু অংশে সামান্য নত অবস্থায় অথচ ভারসাম্য বজায় রেখে দাঁড়িয়ে রয়েছে এই পাথরটি। এটির উচ্চতা প্রায় ৬ মিটার, প্রস্থ ৫ মিটার ও ওজন প্রায় ২৫০ টন। একাংশ ক্ষয়প্রাপ্ত হওয়ায় পাথরটিকে এখন অর্ধ-গোলাকৃতি মনে হয়। প্রচলিত বিশ্বাস অনুসারে, বিগত ১,২০০ বছর ধরে পাথরটি একই স্থানে রয়েছে। কথিত আছে, পল্লব সম্রাট নরসিংহবর্মণ পাথরটি স্থানচ্যূত করার চেষ্টা করতে গিয়ে ব্যর্থ হন। ১৯০৮ সালে মহাবলীপুরমের তৎকালীন গভর্নর আর্থার হ্যাভলক নিরাপত্তাজনিত কারণে সাতটি হাতির সাহায্যে পাথরটি সরানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তার প্রচেষ্টাও সফল হয়নি।
পাথরটির প্রকৃত নাম বাণ ইরাই কল। অ্যাটলাস অবস্‌কুরার মতে, তামিল ভাষায় এই নামের অর্থ আকাশ দেবতার পাথর ।হিন্দু পুরাণে বালক কৃষ্ণের মাখন চুরির গল্প পাওয়া যায়। সম্ভবত সেই উপাখ্যানের পরিপ্রেক্ষিতেই এই পাথরটির বর্তমান নামটি রাখা হয়েছে।১৯৬৯ সালে প্রকাশিত একটি পর্যটন সহায়িকায় উল্লিখিত তথ্য অনুসারে, মহাবলীপুরম সফরে এসে ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী এই পাথরটির নাম রাখেন কৃষ্ণের মাখন নাড়ু ( Krishna’s Butterball)।
কথিত আছে, দক্ষিণ ভারতের তামিল চোল সম্রাট প্রথম রাজারাজ চোল বিশালাকায় এই পাথরটির ভারসাম্য বজায় রাখার অদ্ভুত ক্ষমতা দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে তাঞ্জাভুর বোম্মাই নামে এক বিশেষ ধরনের পুতুল তৈরি করেন। এই পুতুলটি একটি অর্ধ-গোলাকৃতি ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে থাকে এবং কেউ সেটিকে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করলে সেটি পড়ে না গিয়ে আবার আগের জায়গায় ফিরে আসে।
কৃষ্ণের মাখন নাড়ু নামে পরিচিত প্রস্তরখণ্ডটি পেরুর ওলানটাইটাম্বো ও মাচু পিচুর একশিলা স্তম্ভগুলির চেয়েও বড়ো ও বেশি ভারী।কৃষ্ণের মাখন নাড়ু শহরের একটি জনপ্রিয় পর্যটন আকর্ষণ এবং ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের ঐতিহাসিক স্মারক তালিকার অন্তর্ভুক্ত।
How to Reach :Chengalpattu (22 kms) is the nearest railway station. However, Chennai railhead (60 kms) is the nearest major station having trains to Mahabalipuram. Taxi/cabs and buses are available from both the stations to reach Mahabalipuram.
Date of click:23.10.18





বাবা  পঞ্চানন্দ, গোয়ালপোতা, খয়াদহ, সোনারপুর।



পঞ্চানন বা পঞ্চানন্দ বা পাঁচু ঠাকুর বাংলার এক খ্যাতিমান লৌকিক দেবতা।
 লোকবিশ্বাসে ইনি মহাদেব শিবের আর এক রূপ;

 মূলত গ্রামরক্ষক, শিশুরক্ষক রূপে পঞ্চানন পূজিত হন; তবে সন্তানদাতা, শস্যদেবতা হিসাবেও বাঙালি হিন্দু সমাজে তার পূজার প্রচলন আছে। রক্তবর্ণ পঞ্চাননের মুণ্ড-মূর্তি ও ঘট প্রতীক পূজিত হয়।

মূলত বঙ্গের উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, হাওড়া-হুগলী-কলকাতা, বর্ধমান, নদিয়া ও বাঁকুড়াতে এনার পূজা হয়ে থাকে।
দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার স্থানবিশেষে ইনি 'বাবাঠাকুর' নামেও পরিচিত।

বৈশিষ্ট্য
কাব্যে উল্লেখ সম্পাদনা
মধ্যযুগীয় বেশকিছু মঙ্গলকাব্য-এর পুঁথিতে পঞ্চানন ঠাকুরের উল্লেখ দৃষ্ট হয়। দ্বিজ দুর্গারাম রচিত পঞ্চাননমঙ্গল সংগীতাংশে আছে, "

রূপরামের ধর্মমঙ্গলে আছে,

'তারকেশ্বর শিবতত্ত্ব' নামক মধ্যযুগীয় কাব্যাংশে আছে,

"পঞ্চানন দেব প্রায় অশ্বত্থ তলায় পূজিত হন,

তথ্য সংগ্রহ করা,

এখানে  দঃ ২৪ পরগনায় সোনারপুর খয়াদহ অঞ্চলে গোয়ালপোতা নামন জায়গায় বাবা পঞ্চানন্দের মন্দিরের তিনি পূজিত হন,
গতকাল মন্দিরে গেছিলাম সেখানে থেকেই ছবিগুলি তুলেছি,




কফি হাউস মার্গারিটা ডেক, কারশিয়ঙ্


কারশিয়ং থেকে সাত কিলোমিটার এগিয়ে একটি বিখ্যাত কফি হাউস মার্গারিটা ডেক,‌পৃথিবীর অসুখ সারলে একদিন চা খেতে খেতে সন্ধ্যায় পাহাড়ের নিচে কারশিয়াং শহরটায় ক্রমান্বয়ে আলো জ্বলে ওঠার সাক্ষী থাকবো বলে ভেবে রেখেছি।




##গত_বর্ষায়_এক_দিনের_সফর_ফিরে_দেখা ##



প্রায় এক বছর আগে দক্ষিণ চব্বিশ পলঝরগনার গঙ্গার তীরে রায়পুর , হাওড়ার আটান্ন গেট ও গড়চুমুক পর্যটন কেন্দ্র একদিনের ভ্রমণ ঃ
বর্ষার দিনে ( ৩০ - ০৭ - ২০১৯ ) সকাল বেলাতেই আকাশের মুখ ভার , মাঝে মধ্যেই এক পশলা করে বৃষ্টি আর তারপর রৌদ্র । তাই ঠিক করলাম আজকে গঙ্গার তীরবর্তী অঞ্চলে ঘুরে বেড়াতে মন্দ লাগবে না । যেমন ভাবনা তেমনই কাজ । একটু বেলার দিকে বেড়িয়ে পরলাম । ট্রেনে করে বজবজ , সেখান থেকে ট্রেকারে এক ঘন্টার কিছু বেশি সময়ে রায়পুর । শান্ত নিরিবিলি জায়গা , নদীর পাশ দিয়েই রাস্তা চলে গেছে । নেমে পরলাম রায়পুরে নদীর পাশে । গঙ্গার উপর দিয়ে ছোট ছোট নৌকা চলেছে মাছ ধরতে । আর মাঝেমধ্যে দু-একটি জাহাজ খিদিরপুর থেকে মালপত্র নিয়ে ডায়মন্ড হারবারের দিকে চলেছে । নদীর পারে বসে জেলেদের নৌকা নিয়ে মাছ ধরা দেখলাম ও কিছু ছবি তুললাম । তারপর ওখান থেকে আবার ট্রেকার ধরে কিছু দূরে বরুল লঞ্চঘাট চললাম । ঐখানেই দুপুরের খাবারটা প্রায় বিকেল নাগাদ খেয়ে লঞ্চ ধরে গেলাম গঙ্গার ওপারে হাওড়া জেলার আটান্ন গেট । মাঝ গঙ্গায় বেশ ঢেউ , লঞ্চ খুব দুলছিলো আর ঢেউয়ের জল লঞ্চের ভিতরে ঢুকে আসছিলো । মহিলা এবং শিশু যাত্রীদের মধ্যে তা ভীতির সঞ্চার করেছিলো , তারা ঠাকুরের নাম নিতে শুরু করেছিলো । লঞ্চ থেকে নেমে মটরভ্যান ধরে আটান্ন গেটের পাশেই প্রথমে ঢুকলাম গড়চুমুক পর্যটন কেন্দ্র । দশ টাকা করে ভিতরে ঢোকার টিকিট । গঙ্গার পারে অনেকটা জায়গা নিয়ে এই পর্যটন কেন্দ্র । জঙ্গলের মধ্যে অনেক রকম পাখি রয়েছে , তাদের ডাকও শুনতে পাওয়া যাচ্ছিল । ঘেরা জায়গার মধ্যে রয়েছে কয়েকটি ময়ূর , পাখি ও জীবজন্তু । জায়গাটি বেশ ছিমছাম ও সাজানো গোছানো । কিছু দূরে একটা বেশ বড় ঘেরা জঙ্গলের মধ্যে রয়েছে বেশ কিছু হরিণ । বিকেলের মেঘলা আকাশ তাই তাঁরা খোলা জায়গায় এসে খাবার খেতে ব্যস্ত । বিকেলের দিকে আশপাশ অঞ্চলের ছেলে মেয়েদের একটা ভিড় চোখে পরলো ,  নিরিবিলি ঘোরাঘুরির জায়গা হলে যা হয় আর কি । এবার ওখান থেকে বের হয়ে আসলাম আটান্ন গেটের পাশে নদীর পাড়ে , যেখান থেকে আটান্ন গেটগুলি ভালো ভাবে দেখা যায় । দেখলাম দুটি গেট খোলা রয়েছে , যেখান দিয়ে জল এসে নদীতে পরছে । ওখানে কিছুক্ষন বসে নদীর শোভা দেখলাম । নদীতে তখনও দু-চারটি নৌকা মাছের সন্ধানে জাল পেতে রয়েছে । ওখানে কিছুক্ষণ থেকে এবার লঞ্চঘাটের উদ্দেশ্যে মটরভ্যান ধরলাম । শেষ লঞ্চ সাড়ে ছটায় ছাড়বে তাই সময় মতো ঘাটে এসে পৌচ্ছালাম । তখন সন্ধ্যা হতে চলেছে , সূর্যাস্তের কিছু ছবি নিয়ে লঞ্চে উঠে দাঁড়ালাম । সাতটার সময় লঞ্চ বরুলঘাটে এসে পৌচ্ছলো । সাড়ে সাতটার সময় শেষ ট্রেকার ছাড়বে বজবজের উদ্দেশ্যে । চা খেয়ে ট্রেকারে উঠে বসলাম , ড্রাইভারের পাশের সিটে । এই সিটটি আমার খুব প্রিয় কারন এখানে বসে রাস্তার সামনের দিক এবং দুপাশটা ভালো ভাবে দেখা যায় । রাত নটায় বজবজ এসে পৌচ্ছালাম , তারপর ওখান থেকে ট্রেন ধরলাম কলকাতার উদ্দেশ্যে । এভাবেই একটা দিন একটু অন্যভাবে প্রকৃতির সানিণ্ধ‍্যে কাটাতে নেহাদ মন্দ লাগলো না ।













নলাটেশ্বরী ভ্রমণ


 ৫১ সতীপীঠের মধ্যে অন্যতম শক্তিপীঠ নলাটেশ্বরী পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলায় অবস্থিত। কথিত আছে, সতী মায়ের দেহাংশের গলার নলি বা কণ্ঠ পড়েছিল এই স্থানে। লোকমুখে জানা যায় ২৫২ বঙ্গাব্দে অর্থাৎ আজ থেকে প্রায় ১১৭৪ বছর আগে ভগবান কামদেব সতী মায়ের দেহাংশ এই কণ্ঠনালী খুঁজে পান নিকটবর্তী নলহাটি’র জঙ্গলে। এখানে দেবী কালী রূপে পূজিতা হন মা নলাটেশ্বরী। মায়ের ভৈরব হলেন যোগেশ। অত্যন্ত জাগ্রত এই পীঠস্থান। নলাটেশ্বরী থেকেই শহরের নাম নলহাটি। পাশেই রয়েছে বাংলা-ঝাড়খন্ড সীমান্ত। তাই পাশের রাজ্য থেকেও ভক্ত পুণ্যার্থী’দের ভিড় লেগেই থাকে। নলাটেশ্বরী মন্দিরে দুবার বিশেষ পুজো হয়। নবরাত্রি দশেরা আর কালিপূজায়। দুর্গাপুজোর চারদিন মা কে দুর্গারূপে পুজো করা হয়। আর কালীপুজোর দিন মা নলাটেশ্বরীকে কালীরূপে পুজো করা হয়। এখানে "দুর্গা পুজোর সময় শুধুমাত্র মায়ের নব পত্রিকা আনা হয় না। তাছাড়া পুজোর চারদিন মায়ের সমস্ত আচার মেনে পুজো করা হয়। কালী পুজোয় সকালে মঙ্গল আরতি করা হয়। তারপর শুরু হয় নিত্যপুজো। রাত্রে ১০৮ প্রদীপ জ্বালিয়ে মায়ের বিশেষ আরতি করা হয়। নিশি অমাবস্যায় মায়ের মন্দিরে হোম যজ্ঞ করা হয়। মাটির প্রদীপ,  মোমবাতির আলোয় ঝলমল করে মন্দির চত্বর। বহু মানুষ মনস্কামনা পুরণ করতে মায়ের সামনে পাঁঠা বলি দেন"। অন্যান্য বেশিরভাগ বিখ্যাত মন্দিরের মতো এখানে কোনও পান্ডা’দের উৎপাত নেই। মন্দির চত্বরেই রয়েছে আশ্চর্য এক নিমগাছ। প্রকৃতির এক অদ্ভুত সৃষ্টি এই গাছ। যার কিছু পাতা তেতো আর কিছু মিষ্টি !
নলাটেশ্বরী মন্দিরের বিশেষ বৈশিষ্ট্য এখানে মন্দিরের পিছনেই রয়েছে মুসলিম ধর্মপ্রাণ মানুষদের মাজার। যা সম্প্রীতির বার্তা বহন করে। এখানকার পাথরশিল্পের কদর রয়েছে সারা ভারতে। মুলত ওই শিল্পের উপর নির্ভর করেই এলাকায় সমৃদ্ধি ফেরে।
নলাটেশ্বরী মন্দিরে যেতে হলে প্রথমে ট্রেনে বা বাসে করে যেতে হবে রামপুরহাট। সেখান থেকে অটো বা টোটোয় উঠে নলাটেশ্বরী মন্দির পৌঁছাতে পারবে






#বাঙ্গালির_বেড়ানো
#ভারত_ভ্রমন
#পর্ব_১
না এই পোস্ট টি কোনও একটি জায়গার বেড়িয়ে আসার পোস্ট নয়। আমাদের এই বিশাল সুন্দর দেশের ২৮ টি রাজ্য এবং ৮ টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল এর যে সুন্দর সব জায়গা গুলি আছে সেই গুলি কে একত্রিত করে একটা তালিকা আপনাদের সামনে রাখার চেষ্টা করলাম । প্রত্যেকটা রাজ্যর ও কেন্দ্রাশাসিত অঞ্চলের জায়গা গুলি কে আমি নানান ভাবে ভাগ করে এই তালিকা বানিয়েছি । আমি তালিকা টা কে clockwise (ঘড়ির কাঁটা অনুযায়ী) পর পর সাজিয়েছি আর যতটা পেরেছি সব জায়গা গুলো কে রেখেছি  । আমাদের দেশ টা কে সম্পূর্ণ ভাবে ঘুরতে গেলে হয়তো সারাটা জীবন ও পেরিয়ে যাবে কিন্তু শেষ আর হবেনা । এই গ্রুপের সমস্ত ভ্রমণ পিপাসু মানুষদের আশা করি এটা ভাল লাগবে ।

ভুল ত্রুটি মার্জনীয় ।আপনারা বলুন কোনও কোথাও ভুল আছে কি না । এইগুলো ঘুরে নিলে আমার তো স্বপ্নপুরন ।
কি অতুলনিয় মোদের দেশ । আমাদের ভারত Incredible India !!!!
আর হ্যাঁ এটা বানাতে আমি অই সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রাশাসিত অঞ্চল এর গভর্নমেন্ট ট্যুরিজ্‌ম সাইট থেকে সাহায্য নিয়েছি । কিছু টা Google এবং  Wikipedia.

এটি প্রথম ভাগ । আপনাদের মতামত জানান , কোথাও কিছু যোগ বিয়োগ হলে কমেন্ট এ জানান । 

CC Welcome. ফেসবুকের পোষ্ট  এ Table format এ আপলোড হছে না , তাই pdf ফাইল টা কে ছবির মত করে দিলাম এবং pdf ফাইল টাও আপলোড করে দেবো ।












🕉️🕉️
#কালীকথা

শান্তিপুরের কালীপুজোর প্রধান দুই আকর্ষণ (আগের লেখাতে উল্লেখ করেছি) আগমেশ্বরী ও মহিষখাকি মাতার পুজো ও বিসর্জন হলেও, শান্তিপুর শহর জুড়ে অগুনতি কালীপুজো হয়, তারমধ্যে যেমন বারোয়ারি পুজো আছে তেমন আছে বনেদি বাড়ির পুজো। শান্তিপুরের বনেদি বাড়ি মানে ইংরেজ আমল নয়, তারও আগের যুগ। শান্তিপুরে কোনো বাড়িতে বড়লাট হয়তো কখনও আসেনি কিন্তু শান্তিপুর ধন্য শ্রী শ্রী বিজয় কৃষ্ণ গোস্বামীর আবির্ভাব স্থান হয়ে, শ্রী চৈতন্য দেবের দীক্ষা ও লীলা ভূমি হিসেবে।
সেরকম শান্তিপুরের কয়েকটি বাড়ির পুজো প্রায় পাঁচশো বছরের প্রাচীন।
           আগের কালীকথা তে যেমন দুটো কালীপুজোর কথা উল্লেখ করেছিলাম এবারেও দুটো কালী মাহাত্ম্য উল্লেখ করছি।
পশু বলির রেওয়াজটা ঠিক না ভুল এই তত্ত্বে যাচ্ছি না তবে এখনও মা চাঁদুনীর সামনে পাঁঠা বলি প্রদত্ত হয়, পাঁচশো বছরের বেশি পুজো হয়ে আসছে মা চাঁদুনীর।
কথিত আছে কাশীনাথ সার্বভৌম এই পুজো শুরু করেন,
 শৈশবে কাশীনাথ নিজের মায়ের কাছে আবদার করে কালীমূর্তি তৈরী করে দিতে। মা ঐ বালক কাশীনাথের আবদার মেটাতে মাটি দিয়ে কালীমূর্তি তৈরী করে দেন, কাশীনাথ সেই মূর্তি পুজো করেন। এখনও সেই প্রথা মেনে ঐ বাড়ির বড় বধূ মাটি লেপে কালী মূর্তি গঠন শুরু করেন।
বিজয়া দশমীর দিন শুরু হয় মূর্তি গড়ার কাজ, যা শেষ হয় কালীপুজোর আগের দিন। পুজোর দিন দুপুরে মাতৃমূর্তি আনা হয় মন্দিরে। এই আচার কে বলা হয় চাঁদুনী মায়ের পাটে ওঠা । দুপুরে একটা নাগাদ মন্দির প্রাঙ্গণ জনসমাগমে ভরে ওঠে মায়ের পাটে ওঠা দেখতে। কালীপুজোর পরদিন সন্ধ্যায় গ্যাসের বাতি ও বর্তমানে বৈদ্যুতিক আলোর সজ্জায় সজ্জিত হয়ে হয় চাঁদুনী মায়ের নিরঞ্জন।
 শান্তিপুরের অন্যতম মন্দির সিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দির। এই মন্দির তৈরী করা হয় প্রায় ১৬০৬ সালে, ৪০০ বছর পেরিয়ে গেছে এই পুজো। তখনকার রাজা ভবানন্দ মজুমদার, শ্রী পার্বতীচরণ মুখোপাধ্যায় অথবা অনেকের মতে শ্রী ফকিরচাঁদ মুখোপাধ্যায়কে এই মন্দিরের পুজোর দায়িত্ব  দেন। এই মুখোপাধ্যায় পরিবারের আদি পদবী ওঝা (বাংলা রামায়ণ রচয়ীতা কৃত্তিবাসের বংশধর)।
        এই মন্দিরের বার্ষিক পূজা হয় দীপান্বিতায়, অর্থাৎ কার্তিক মাসের অমাবস্যায়, সাড়া ভারতবর্ষে এই অমাবস্যাতে পালিত হয় দিপাবলী বা দেওয়ালী। এছাড়া সাড়া বছর ও বিভিন্ন পূজায় মন্দিরে দর্শনার্থীদের ভীড় হয়। কালীপুজোর অমাবস্যর পুজোর সময় দেবীকে পোলাও, খিচুড়ি, মাছ ভোগ হিসেবে দেওয়া হয়; বিভিন্ন মিষ্টি, পায়েস, ক্ষীর ইত্যাদি ভোগ হিসেবে নিবেদন করা হয়।
              সিদ্ধেশ্বরী মায়ের বিশেষত্ব শান্তিপুরে যে কটি কালীপূজা হয় তার প্রথা এই সিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দিরে পূজা দিয়েই শুরু হয়। আগে সিদ্ধেশ্বরী কালীমূর্তি মাটির ছিল; পরবর্তীকালে পাথরের মূর্তি করা হয়।কাশী থেকে নিয়ে আসা হয়েছিল বর্তমান পাথরের মূর্তিটি। সবচেয়ে চমকপ্রদ বৈশিষ্ট্য হল যে দীপান্বিতায় ১১.৪০ মিনিটেই শুরু হবে পূজা। কোন কোন সময় যদি দীপান্বীতার সময় কিছুটা এগিয়েও থাকে তাহলেও রাত ১১.৪০ মিনিটেই পূজা শুরু করার রীতি রয়েছে।
এবার প্রশ্ন হচ্ছে কি ভাবে শান্তিপুরে গিয়ে এই ঠাকুর গুলি দর্শন করা যায়। এক বা দুরাত থেকে যদি শান্তিপুরের কালীপুজো দেখতেচান তাহলে কালীপুজোর দিন বেলা বারোটার মধ্যে শান্তিপুর পৌঁছে যান, স্টেশনে নেমে টোটো বা রিক্সা তে চাঁদুনী বাড়ি বললেই নিয়ে যাবে। চাঁদুনী মায়ের পাটে ওঠা দেখে যেখানে রাতে থাকবেন সেখানে গিয়ে বিশ্রাম নিয়ে একটু রাত করে বেরিয়ে একটি টোটো রিজার্ভ করে সিদ্ধেশ্বরী সহ অন্যান্য ঠাকুর দেখে নিন (অবশ্য দ্রষ্টব্য :সাধনা কালী,চড়ার বামা কালী, বোম্বাটেরকালী, পাতাল কালী, জজের বাড়ির কালী, ঘাট চাঁদুনী এছাড়া আগমেশ্বরী, মহিষখাকি ও চাঁদুনী যে কোনো মন্দিরে রাতে পুজো দেখা)। যদি পরদিন রাতে থেকে প্রতিমা নিরঞ্জন দেখতে চান তাহলে সবচেয়ে ভালো জায়গা ভারতমাতা মোড়। দুপুর তিনটের মধ্যে পৌঁছে মহিষখাকির শোভাযাত্রা দেখেনিন । এরপর একে একে সব ঠাকুর এই পথেই আসবে।
আর যদি শান্তিপুরে রাত্রি যাপন না করে ঠাকুর দেখতেচান তাহলে কালীপুজোর পরদিন এগারোটার সময় শান্তিপুর পৌঁছে টোটো রিজার্ভ করে সব ঠাকুর দেখে সন্ধ্যা আটটা পর্যন্ত প্রতিমা নিরঞ্জন ভারতমাতা মোড় থেকে দেখে স্টেশনে চলে এসে ট্রেন ধরে নিন।
শান্তিপুরে রাত্রিবাসের হোটেলের অভাব আছে। খাওয়ার জন্য হোটেল ও মিষ্টির দোকান প্রচুর।





*কালীক্ষেত্র কলকাতা* 
================== 

                  
তখন শহর কলকাতা হয়নি। তবুও কালীক্ষেত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিল হুগলী নদীর তীরের এই জনপদ। সময়ের গতিতে ক্ষূদ্র জনপদ আজ মহানগরী। সেই ব্যস্ত শহরের ভিড়ের মাঝেও অমলিন কালীমাহাত্ম্য। উত্তর কলকাতা জুড়ে ছড়িয়ে থাকা এই সবকালীমন্দিরের সঙ্গে জড়িয়ে বহু ইতিহাস, বহু জনশ্রূতি। 

    আদ্যাপীঠ


কলকাতার উত্তর প্রান্তে শক্তি আরাধনার অন্যতম পীঠস্থান। হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার ইচ্ছা ছিল অন্নদা ঠাকুরের। কিন্তু স্বপ্নে রামকৃষ্ণদেব বলেন, ইডেন জলাশয় থেকে মাতৃমূর্তি তুলে এনে মন্দির প্রতিষ্ঠা করতে। প্রতিষ্ঠা হয় আদ্যাপীঠ। শুধু মন্দির নয়। একই প্রাঙ্গনে রয়েছে মহিলা ও শিশুদের আশ্রম। তবে মূল মন্দিরে সাধারণের প্রবেশ নিষেধ। নিয়ম অনুযায়ী দীপান্বিতা অমাবস্যা শুরু হলেই তবেই পুজো হয়। সেইমত এবার আদ্যাপীঠে পুজো ররিবার। 

                ফিরিঙ্গি কালীবাড়ি :

বৌবাজার মোড়ে ব্যস্ত রাস্তার মোড়ে মন্দির। আর এই মন্দির ঘিরে কত না গল্প, কত না উপাখ্যান। লোককথা থেকে রূপোলী পর্দায় বার বার উঠে এসেছে এই মন্দিরের কথা। কথিত আছে এই মন্দিরে বসে গান গাইতেন অ্যান্টনি কবিয়াল। ভিনদেশি ভক্ত কবিয়ালের নামেই পরিচিত পেয়েছে মন্দির। যদিও অনেকে বলেন, ফিরিঙ্গি পাড়ার কাছাকাছি হওয়াতেই নাম হয়েছে ফিরিঙ্গি কালীবাড়ি 

               ঠনঠনিয়া কালীবাড়ি

উত্তর কলকাতার এই মন্দির যেন এক খণ্ড ইতিহাস। ডাকাতরা কালীমুর্তি প্রতিষ্ঠা করেছিল। তারপর আর দেবীকে নড়ানো যায়নি। অগত্যা জঙ্গলে ভরা অঞ্চলেই তৈরি হয় মন্দির। জনশ্রুতি বলে, এই মন্দিরের ঘণ্টা বাজিয়ে একসময় দুর দুরান্তে ডাকাতদের হামলার সতর্কবার্তা ছড়িয়ে দেওয়া হত। ঘণ্টার ঠনঠন শব্দ থেকে মন্দিরের নাম ঠনঠনিয়া। প্রাচীন এই মন্দিরের ইতিহাসে নাম জড়িয়ে রয়েছে দুই মহাসাধকেরও। ডাব আর চিনি দিয়ে এই মন্দিরের মায়ের পুজো দিয়েছিলেন রামকৃষ্ণদেব। এক সময় মন্দির প্রাঙ্গণ ধ্বনিত হত সাধক রামপ্রসাদের কণ্ঠ। 

              জয় মিত্র কালীবাড়ি : 

গঙ্গা পেরিয়ে বরানগরের এই মন্দিরে আসতেন রানি রাসমণি। সেখান থেকেই দক্ষিণেশ্বরে মন্দির প্রতিষ্ঠার ভাবনা হল রানির। জোড়াসাঁকো - বাঙালির কাছে জোড়াসাঁকো মানে ঠাকুরবাড়ি। বনেদি কলকাতার সেই অঞ্চলেই আরেক কালীবাড়ি। সাবেকি আমলের পুজো এখনও স্বমহিমায়। এখনও কালীপুজোয় বলির প্রচলন বহাল রয়েছে। বেনারসিতে মোড়া মাতৃমূর্তি জুড়ে সোনার অলঙ্কারের ছটা। মায়ের পা দুটি রূপোর তৈরি। 

                   পাথুরিয়াঘাটা :


প্রতিষ্ঠিত মন্দির নয়। বারোয়ারী পুজো। কিন্তু তাতেও জড়িয়ে অনেক ইতিহাস। তখন ইংরেজ আমল। কলকাতার বহু ব্যায়াম সমিতির মত পাথুরিয়াঘাটা ব্যায়াম সমিতি ছিল বিপ্লবীদের গোপন আস্তানা। সমিতির সভাপতি থাকাকালীন সুভাষ চন্দ্র বসুর উদ্যোগে পুজো শুরু হয়। শক্তি আরাধনায় এখানে যোগ দিতেন বহু বিপ্লবী। নয় দশক পুরনো পুজোয় এখনও সাবেকি মেজাজ। মা এখানে দক্ষিণাকালী। 

                     কালীঘাট :


কালীক্ষেত্র কলকাতা। একসময় কালীঘাটের জন্যই পরিচিত ছিল সাবেক কলকাতা। একান্ন পীঠের অন্যতম। কথিত আছে সতীর হাতের ছিন্ন কনিষ্ঠা পড়েছিল এই পূণ্যক্ষেত্রে। কালীক্ষেত্রে তাই নিত্যই বিপুল ভক্ত সমাগম। তবে কালীপুজোর দিনটা অন্যরকম। কালীঘাটে সেদিন কালীপুজো হয় না। অলক্ষ্মী বিদায় করে হয় লক্ষ্মীর পুজো। 

                   লেক কালীবাড়ি :


বয়সে খুব একটা প্রাচীন নয়। গত শতকের মাঝামাঝি স্বপ্নাদেশ পেয়ে এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করা হয়। স্বপ্নে মন্দির প্রতিষ্ঠার নির্দেশ পান হরিপদ চক্রবর্তী। কিন্তু গরিব মানুষ এত টাকা পাবেন কোথা থেকে? ভক্তকে আশ্বাস দেন দেবী স্বয়ং। বলেন, পুজোর ভার তিনি নিজেই নেবেন। সেই পর্ণকুটিরই আজকের লেক কালীবাড়ি। ভক্তদের সাহায্যেই চলে মন্দির। কলকাতার ব্যস্ত রাস্তার ধারে রোজই বিপুল ভক্ত সমাগম। তবে কালীপুজোর দিন ভিড়টা অনেক বেশি। পুজোর শুরু হলে, এখানে সাজ বদলায় দেবীর। কখনও ফুলের, কখনও এবার সোনার সাজে সালাঙ্কারা মাতৃমুর্তি। 

                 করুণাময়ী কালীবাড়ি :


টালীগঞ্জের এই এলাকা দিয়ে তখন বয়ে যেত আদিগঙ্গা। আদিগঙ্গার ধারে কালীমন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন নন্দদুলাল রায়চৌধুরী। সাবর্ণ রায়চৌধুরীর বংশের সাতাশতম পুরুষ। সেই আদিগঙ্গা আর নেই। তবে রয়ে গেছে করুণাময়ী কালীমন্দির। পুজোর দিন ভোর চারটে নাগাদ আরতি দিয়ে শুরু শক্তির আরাধনা। বিকেলে রাজবেশে সেজে ওঠেন দেবী।                    

             দয়াময়ী কালী (কলেজ স্কোয়্যার):


 ১৭৭১ সালে জগদ্ধাত্রী পুজোর দিনে গুরুপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায় কলেজ স্কোয়্যারের কাছে রাধানাথ মল্লিক লেনে দালান রীতির এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। দেবীর বিগ্রহটি কষ্টিপাথরের তৈরি। প্রায় দু’ফুট উচ্চতার দেবীমূর্তি কাঠের সিংহাসনের উপর অধিষ্ঠিত। দীপান্বিতা কালীপুজোয় আজও অসংখ্য ভক্তসমাগম হয় ।    
         
               নিস্তারিণী কালী (বেথুন রো):

 নানেদের কালীমন্দির বলে পরিচিত হলেও এর নেপথ্যে রয়েছে একটি কাহিনি। সিমলা অঞ্চলে অবস্থাপন্ন ব্যক্তি কৃষ্ণচন্দ্র সিংহ দক্ষিণেশ্বরের ভবতারিণী বিগ্রহের আদলে বারাণসী থেকে নিস্তারিণীর বিগ্রহ তৈরি করিয়ে আনলেও নানা কারণে শেষ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠা করতে না পারায় তাঁর প্রতিবেশী ঈশ্বরচন্দ্র নানের কাছে বিগ্রহটি হস্তান্তর করেছিলেন। পরে ঈশ্বরচন্দ্র নবরত্ন মন্দির তৈরি করে ১৮৬৫ সালে রথযাত্রার দিনে মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আজও প্রতি বছর সাড়ম্বরে এই মন্দিরে কালীপুজো হয়।  

      সিদ্ধেশ্বরী কালী (বাগবাজার): 

বহু বছর আগে কুমোরটুলি অঞ্চলে কালীবর তপস্বী নামের এক সন্ন্যাসী হোগলা পাতার ছাউনির নীচে এই মূর্তি তৈরি করে পুজো করতেন। পরে কুমোরটুলির গোবিন্দরাম মিত্রের পরিবার বর্তমান মন্দিরটি তৈরি করে দেন। শ্রীরামকৃষ্ণ এই মন্দিরে এসেছিলেন। শোনা যায়, নাট্যসম্রাট গিরিশচন্দ্র ঘোষ এই মন্দিরের দেবীকে ‘উত্তর কলকাতার গিন্নি’ বলতেন। কালীপুজোর রাতে আজও তন্ত্রোক্ত বিধিতে দেবীর পুজো হয়।  আগে নরবলি হত। আজও এখানে পশুবলি হয়। কার্তিকী অমাবস্যা ছাড়াও বুদ্ধপূর্ণিমায় ফুলদোল এবং জ্যৈষ্ঠ মাসের ফলহারিণী কালীপুজো সাড়ম্বরে পালিত হয়।    

        পুঁটে কালী (কালীকৃষ্ণ টেগোর স্ট্রিট):  

  
  এখানে পুজো হয় তন্ত্র মতে। পুজোয় ভোগে থাকে খিচুড়ি, লুচি, পোলাও, নানা ধরনের তরকারি, পাঁচ রকমের মাছ, চাটনি, পায়েস। এ ছাড়াও থাকে খাস্তা কচুরি আর চানাচুর। কালীপুজোর পরের দিন হয় কুমারী পুজো ও অন্নকূট উৎসব।   

           রাজরাজেশ্বরী কালী (জোড়াবাগান):  


 রামনারায়ণ মিশ্র অষ্টাদশ শতকের শেষ ভাগে তাঁর গৌর লাহা স্ট্রিটের বসতবাড়িতে রাজরাজেশ্বরী কালীমূর্তি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। কালীমূর্তিটি কষ্টিপাথরের হলেও শিবমূর্তিটি অষ্টধাতুর তৈরি। কালীপুজো উপলক্ষে বিশেষ পুজো এবং ভক্তসমাগম হয়। এ ছাড়াও এখানে ফলহারিণী কালী ও রটন্তী কালীপুজো হয়।
              🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏


অম্বিকানগর রাজবাড়ীর ইতিহাস , বাঁকুড়া। 


রাজা নেই৷ নেই রাজ্যপাট৷ কঙ্কালসার রাজবাড়িতে কিন্ত্ত শুধু রাজপরিবারের নয় , অগ্নিযুগের ইতিহাস লুকিয়ে৷ স্বাধীনতা সংগ্রামের সশস্ত্র ধারার সঙ্গে যোগ ছিল রাজবাড়ির৷
অতীতের জৌলুস আর নেই৷ বনেদিয়ানাও ম্লান৷ কিন্ত্ত পুরোনো প্রথায় এখনও ফি বছর দুর্গোৎসব হয় বাঁকুড়ার অম্বিকানগর রাজবাড়িতে৷ বাঁকুড়ার পর্যটন কেন্দ্র মুকুটমনিপুর থেকে তিন কিলোমিটার দূরে এই অম্বিকানগর৷
এই বংশেরই রাজা রাইচরণ ধবলদেব রাজপ্রাসাদের ঐশ্বর্য ও সুখভোগ ছেড়ে বিপ্লবের দুর্গম পথে ঝাঁপ দিয়েছিলেন ব্রিটিশ শাসন থেকে দেশকে মুক্ত করার শপথ নিয়ে৷ এই রাজবাড়িতে নিয়মিত যাতায়াত ছিল অনুশীলন সমিতির বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসু, প্রফুল্ল চাকী , বারীন ঘোষ , ভূপেশ দত্ত , নরেন গোঁসাইদের৷গভীর রাতে এই বাড়িতে আত্মগোপন করে থাকা বিপ্লবীরা ঘোড়ার পিঠে চেপে যেতেন দুর্গম ছেন্দাপাথরে।ওই ছেন্দাপাথরের পাহাড়ের গুহায় থাকত বোমা-পিস্তল তৈরির গোপন কারখানা।এই বিপ্লবীদের খোঁজ নিতে আসত ব্রিটিশ গুপ্তচররা৷একবার পুরীর পান্ডা সেজে এক গুপ্তচর রাজবাড়ির সিংহদ্বারের কুঠুরিতে আশ্রয় নিয়েছিল৷ 
তাদের পূর্বপুরুষের বাস ছিল রাজস্থানের ঢোলপুরে৷ প্রায় ৪০০ বছর আগে সেখান থেকে এসে বাঁকুড়ার সুপুর গ্রামে ৩২ বছর রাজত্ব করার পর ভাঙন ধরে রাজবংশে৷ খাতড়া গ্রামে জমিদারি পত্তন করেন হরিশচন্দ্র ধবল দেব৷

অম্বিকানগরে আসেন খড্গে়শ্বর ধবল দেব৷ কংসাবতী ও কুমারী নদী দিয়ে ঘেরা গ্রামে রাজপাট গড়ে তোলেন তিনি৷ পরিবারের ইষ্টদেবতা অম্বিকার নামেই রাজ্যের নামকরণ৷ সেখানেই একসময় দুর্গাপুজার প্রচলন হয়৷ তখনকার রীতি এখনও মানা হয়৷সন্ধিপুজোয় এখনও তোপধ্বনির রেওয়াজ আছে৷ আগের মতোই পুজোর ক ’টা দিন মোরগ লড়াই , কাঠিনাচ , পুতুল নাচ , ছৌ নাচের মতো লোক অনুষ্ঠানে মেতে ওঠে অম্বিকানগর রাজবাড়ি চত্বর৷






ভাগলপুরের বাবা গঙ্গাধরের মন্দির,  বাঁকুড়া। 




আজ শ্রাবন মাসের দ্বিতীয় সোমবার l বাবা মহাদেবের বার l আজ এরকম একটা জায়গায় সন্ধান দেবো যেখানে বাবা আধিষ্ঠান করছেন ও খুবই জাগ্রত l আর এই জায়গা টি সম্মন্ধে অনেকের ই হয় তো জানা নেই l

ভিডিও লিংক:-
https://youtu.be/4nxK-RVXGrc

Lockdown এ একঘেয়ে গৃহ বন্দি জীবন, রোজের অফিসের কাজের চাপ, একই রুটিন এইসব নিয়ে দমবন্ধ হয়ে যাচ্ছিলো l তাই ঠিক করলাম কাছে পিঠে এক দিনের জন্য একটু ঘুরে এলে কেমন হয়? যেমনি ভাবা তেমনি কাজ l ব্যাস বেরিয়ে পড়লাম l পাবলিক ট্রান্সপোর্টে না গিয়ে নিজেরাই বেরোলাম l মাক্স, স্যানিটাইজার, বাড়ির খাবার গুছিয়ে নিলাম সঙ্গে l সোশ্যাল ডিস্ট্যানস মেন্টেন করে দুগ্গা দুগ্গা বলে বেরিয়ে পড়লাম l

হ্যাঁ এবার বলি কোথায় যাচ্ছি l বাঁকুড়া ডিস্ট্রিক এর ভগলপুরে বাবা গঙ্গাধরের মন্দির এ l এই মন্দির টি প্রায় সাড়ে তিনশো বছরের পুরানো l যেখানে শিব লিঙ্গ প্রতিষ্ঠিত আছে l স্থানীয়দের মতে বাবা খুবই জাগ্রত l তাই অনেক দূর থেকেও মানুষের সমাগম হয় এখানে l এর সাথে দেখে নিতে পারেন গ্রাম ও গ্রাম্য জীবন l তুলিতে আঁকা যে গ্রামের চিত্র শিল্পীরা তাঁদের ছবিতে তুলে ধরেন, ভগলপুর তারই নিদর্শন বলা যায় l এখানে এসে চোখে পড়বে লাল মাটির রাস্তা, শালপাতার জঙ্গল, মাটির দোতলা বাড়ি এমন কি গরুর গাড়িও বাদ পড়বে না l এতো সুন্দর গ্রামের পরিবেশ যে লিখে তা বর্ণনায় আনা যাবে না l এসব দেখতে গেলে আপনাকে আসতে হবে এখানে l আমরা তো গিয়ে খুব মজা করেছি আর খুব ভালোও লেগেছে আমাদের l আপনাদের জন্য সঙ্গে এনেছি একটি সুন্দর ভিডিও l যদি না গিয়ে থাকেন বা যাবার ইচ্ছে থাকে তা হলে ভিডিও টি দেখার অনুরোধ রইলো l আশাকরি ভালো লাগবে l
ভিডিও লিঙ্ক:-

https://youtu.be/4nxK-RVXGrc








মালদার চাঁচলের  জমিদার বাড়ি  *"*"*"



সত্যি কার কপালে যে বিধাতা কী লিখেছেন তা বলা মুশকিল। নইলে ইতিহাসে কত রাজা মহারাজার কথা পড়ি যাঁরা রাজত্ব চালানোর পাশাপাশি সফলভাবে সাহিত্য চর্চাও করেছেন, কিন্তু ভাগ্যের পরিহাসে একজন সফল সাহিত্যিকের রাজা হতে না পারার গল্প বলি আপনাদের। 
১৮৬৫-৬৬সালে চাঁচলের জমিদার রাজা ঈশ্বর চন্দ্র রায় (স্থানীয় মানুষের কাছে রাজা) দুই রানিকে অপুত্রক অবস্থায় রেখে মারা গেলেন। বড়ো রানি সিদ্ধেশ্বরী দেবী নিজের বোনের ছেলে শিবপ্রসাদ কে দত্তক নিতে মনস্থির করায় তাকে মুর্শিদাবাদ থেকে  নিজের কাছে এনে রাখলেন। শিবপ্রসাদ ছিলেন ধার্মিক প্রকৃতির। আনুষ্ঠানিকভাবে দত্তক নেওয়ার আগে রাজ ঐশ্বর্যের মায়া কাটিয়ে সন্ন্যাসীদের সাথে বেড়িয়ে পড়লেন। 
একরকম বাধ্য হয়েই সিদ্ধেশ্বরী দেবী প্রিভি কাউন্সিলের অনুমোদন অনুসারে নিমতিতার মধুসূদন রায়ের ৫বছরের পুত্রকে দত্তক নিলেন। যিনি ১৬বছর বয়সে সিংহাসনে বসলেন এবং ইংরেজদের থেকে রাজা উপাধি লাভ করলেন। চাঁচলের নতুন রাজা, রাজা শরৎচন্দ্র। 
               এদিকে দীর্ঘদিন নিরুদ্দেশ থাকার পর হঠাৎ একদিন শিবপ্রসাদ ফিরে এলেন। সিদ্ধেশ্বরী দেবী তাকে বঞ্চিত করেন নি, তাঁকে হাতিন্দা পরগণা টি দেন। যে ভূ সম্পত্তি লাভ করলেন তা সমগ্রের ততুলনায়  সামান্য হলেও নেহাত অল্প নয়। শিবানী দেবীর সঙ্গে শিবপ্রসাদের বিয়ে হয়ে গেল এবং তাদের কোল আলো করে এলেন শিবরাম চক্রবর্তী। যিনি পরবর্তীতে একজন বিখ্যাত সাহিত্যিক, বিশেষত  শিশু সাহিত্যিক হিসেবে সমাদৃত হবেন। 
শিবপ্রসাদ ছিলেন আত্মভোলা প্রকৃতির মানুষ। চাঁচল রাজ শরৎচন্দ্র তাঁকে এককালীন ২৫০০০টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে হাতিন্দা পরগণা টি হাতিয়ে নেন এবং নতুন রাজবাড়ি প্রস্তুত হলে শিবপ্রসাদের পরিবারকে পুরাতন ভগ্ন প্রাপ্ত রাজবাড়ি তে রেখেই নতুন রাজবাড়ি তে চলে যান। কিছুদিন বাদে শিবপ্রসাদ দের মাসোহারা বন্ধ করে দেন। যার জন্য শিবরামের শৈশব চরম আর্থিক দূর্দশায় কাটে। 
শিবরামের জীবন বড়োই  বৈচিত্রময়। 
শৈশবে বেশ কয়েকবার বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। তাঁর "বাড়ি থেকে পালিয়ে" বইটি ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতায় পুষ্ট। ছাত্রাবস্থায় লেখালেখি শুরু। কৈশোরেই তাঁর জীবনে প্রেমের স্পর্শ এনেছিল তাঁর বাল্য প্রেমিকা রিনি। চাঁচলে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন এলে, তাঁর বক্তৃতায় অনুপ্রাণিত হয়ে শিবরাম দশম শ্রেণীর পড়া অসমাপ্ত রেখেই স্বাধীনতা আন্দোলনে যোগ দিতে কলকাতায় চলে গেলেন একেবারে সহায়সম্বলহীন অবস্থায়। দেশবন্ধুর নির্দেশে বিপিন বিহারী গাঙ্গুলি তাঁর থাকার ব্যবস্থা করলেন ১৩৪নং মুক্তারাম বাবু স্ট্রিটের মেস বাড়িতে। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত এখানেই ছিলেন। 
একবার স্বাধীনতা আন্দোলনে যোগ দিয়ে জেলে গেলেন, সেখানে দেখা হয়ে গেল বাল্য প্রেমিকা রিনির সাথে। 
১৯২৫ সালে চাঁচল রাজ শরৎচন্দ্রের নানা কুকর্ম এবং অধঃস্তন কর্মচারীদের অন্যায়ের মুখোস খুলে দেওয়ার জন্য "জমিদারদের রথ" উপন্যাস রচনা করেন যা ব্রিটিশরা ব্যান করে দেয়। ( এই বইটি র আর কোনো অস্তিত্ব নেই, এই ব্যাপারে কারও কিছু জানা থাকলে দৃষ্টি আকর্ষণ করবেন) 
শিবরাম জীবনে অনেক বঞ্চনার শিকার হয়েছেন, দুঃখের বিষয় এই ব্যাপারে সাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের নামও জড়িত। 
পৈতৃক সম্পত্তির দাবীতে চাঁচল রাজের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন শিবরাম, যাকে বলা যায় একেবারে শিব্রামীয় মামলা। নিজের পক্ষে সাক্ষী করলেন কাকে ❓না যার বিরুদ্ধে মামলা অর্থাৎ চাঁচল রাজ শরৎচন্দ্র কে। মানুষের উপর তাঁর এতই বিশ্বাস । ভাবলেন যে মিথ্যে বলবে না। সাক্ষী আদালতে দাঁড়িয়ে অভিযোগ অস্বীকার করলেন এবং শিবরামও মামলা হেরে গেলেন। 
তাঁর সমগ্র জীবন টা কেটে গেল মেসবাড়ির একটি ঘরে। জীবন সম্পর্কে কোন আক্ষেপ ছিলনা তাঁর। বলতেন মুক্তারামের তক্তারামে (চৌকি) শুয়ে, শুক্তারাম খেয়ে মুক্ত আরামেই আছেন। 
তথ্যসূত্র:(১)  চাঁচলের ইতিহাস--মেঘনাদ দাস
             (২) আনন্দবাজার পত্রিকা

[চাঁচল রাজবাড়ী মালদা শহর থেকে প্রায় ৭০কিমি দূরে অবস্থিত, বাস যোগে ২-২.৩০ঘন্টা। আপনাদের উৎসাহ পেলে চাঁচল রাজবাড়ির আরও অজানা বিষয়ে আলোচনা করব আগামী পর্বে]











    • G-প্লট অভিযান
    • দাদা / দিদি, প্রথমেই বলি এতো কষ্ট করে ঘুরে লাভ নেই।  এসব জায়গায় একদম যেতে নেই।  গাড়ি করে যাওয়া যায় না।  AC নেই।  কেন যাবেন।  একদম যাবেন না।  কোথায় সমুদ্রের ধরে AC রুমে বসে একটু আমোদ প্রমোদ করবো, তা না করে, কেউ ৭ ঘন্টা জার্নি করে G-প্লট পৌঁছায়?
    1. ভনিতা অনেক্ষন হলো, এবার আসি আসল গল্পে।  এতো কষ্ট করে পৌঁছে কি পাবো যখন ভাবছেন, তখন বলেই দিই।  যেটা পাবেন সেটা হলো অপার্থিব সমুদ্রের সৌন্দর্য্য। 

    2. বাংলা ভাষায় একটা প্রবাদ আছে , :- যেখানে বেশি কষ্ট করে পৌঁছতে হয়, সেটার সৌন্দর্য্য চিরকালীন বর্ণাতীত হয়।  আমার মনে হয়, ক্যারিয়ার হোক বা ঘোরার জায়গা দুটোর ক্ষেত্রেই মনে হয় কথাটা প্রযোজ্য।  

    3. ছোটবেলা থেকেই মা বাবার সৌজন্যে পায়ের তলায় সর্ষে।  বিয়ের পর আরো বেড়ে গেছে ব্যাপারটা।  প্রত্যেক মাসেই বেড়াতে না বেরোলে প্রথমত মন বেয়াড়া হয়ে পড়ে, অথবা আমাদের ছোট গ্রুপ থেকে ফোন চলে আসে, দাদা ঘুরতে যাবো।  ও হ্যা, আমাদের গ্রুপের লোকেদের সাথে আলাপ করানো হয়নি।  আমাদের ছোট গ্রুপের ৭ জন সদস্য।  আমি , আমার সহধর্মিনী (অঙ্কিতা ), অঙ্কিতার বেস্ট ফ্রেন্ড শ্রুতি, শ্রুতির বর সৌরভ, আমার শ্যালক (অনিন্দ্য) আর দুই শ্যালিকা (অমৃতা, রশ্মিতা)। অনেক আলোচনার পর ঠিক হলো, নতুন কিছু জানবো, নতুন কিছু দেখবো।  চলো তবে দেখা যাক কি আছে   G-প্লটে।  

সিন্টু আর সান্টু দের GET LOST গ্রুপের বিভিন্ন জায়গায় হোমস্টে থাকার দরুন, অনেক আগে থেকেই ওদের সাথে  আমার।  ওদেরই একটি হোমস্টে G-প্লট বুক করে, আমরা ৭ জন বেরিয়ে পড়লাম ২৫-জুন-২০২২ সকাল ৬টা নাগাদ।  বারুইপুর জংশন থেকে ডাইরেক্ট নামখানা লোকাল ধরে নেমে পড়লাম কাকদ্বীপ স্টেশনে সকাল ৭টা ৪৫ মিনিট নাগাদ।  ওখান থেকে টোটো নিয়ে পৌঁছলাম কাকদ্বীপ বাজার।  তারপর সেখান থেকে ট্রেকার করে পৌছালাম পাথরপ্রতিমা ঘাট। এই জার্নিটি প্রায় ১ ঘন্টা মতন।  সেখান থেকে আবার টোটো করে পৌঁছলাম পাথরপ্রতিমা - চাঁদমারি ঘাট।  এখানে একটু বলে রাখি, পাথরপ্রতিমাতে পরপর তিনটি ঘাট।  প্রথমটির নাম বাঁধানো ঘাট, দ্বিতীয়টি পাথরপ্রতিমা - চাঁদমারি ঘাট, তৃতীয়টি পাথরপ্রতিমা- রামগঙ্গা ঘাট। আমাদের পৌঁছতে হলো দ্বিতীয় ঘাটে।
কথা প্রসঙ্গে বলে রাখা ভালো।  রামগঙ্গা ঘাট আর পাথরপ্রতিমা ঘাট দুটি একে ওপরের উল্টো দিকে।  যদি কেউ লক্ষ্মীকান্তপুর হয়ে যান, তাকে যেতে হবে রামগঙ্গা ঘাটে।  যাওয়ার লঞ্চটি পাথরপ্রতিমা - রামগঙ্গা ঘাট থেকে ছেড়ে, রামগঙ্গা ঘাট হয়ে চাঁদমারি ঘাটে থামে।   আমরা ৯টা ৩০ মিনিটের লঞ্চ ধরে চাঁদমারি ঘাটে নামি ১০টা ৫০ মিনিটে নাগাদ।  এখান থেকে ভ্যান ভাড়া করে পৌঁছতে হয় তটের বাজার।  আবার সেখান থেকে টোটো করে ইন্দ্রপুর।  সেখান থেকে টোটো ভাড়া করে বাঘাযতীন ক্লাব।  আমরা অবশ্য চাঁদমারি ঘাট থেকে ভ্যান  রিসার্ভ করে নিয়েছিলাম আসা যাওয়ার জন্য । আমাদের সারথি  সুখদেব জানা বিভিন্ন গল্প বলতে বলতে এগিয়ে চললো।  
এবার আসি একজন মানুষ আর তার পরিবার এর কথায়।  মানুষটির নাম জন্মেজয় জানা। উনি আর ওনার পরিবার এতো আপন করে নিয়েছিলেন আমাদের, যে মনেই হয়নি আমরা টুরিস্ট।  আমরা প্রত্যেকেই যেন ওনার বাড়ির লোক হয়ে উঠেছিলাম।  যখন যা আবদার করেছি উনি সঙ্গে সঙ্গে সেই আবদার রেখেছেন।   প্রথমদিন পৌঁছনোর সাথে সাথে টিউবয়েল এর জলে স্নান সেরে আমরা লাঞ্চ করে নিই।  হোমস্টের মানুষদের  দেখাশোনা করা, রান্না করে খাওয়ানো সবকিছু এই মানুষটি আর ওনার পরিবার করেন।  প্রথমদিন লাঞ্চে ছিল :-   ভাত, শুক্ত, মুগ ডাল, আলু ভাজা, লোকাল কাটাপোনা মাছের ঝোল, ফজলি আম ও পেঁপে দিয়ে বানানো চাটনি (জীবনে প্রথম বার এই আইটেমটি খেলাম, অপূর্ব স্বাদ)। বিকেল বেলা ঘুম থেকে উঠে গেলাম গোবর্ধনপুর বিচ।  ঘন্টা খানেক বিচে ঘুরে ফিরে আসার পর পেলাম ঘরে বানানো মুড়ি, চানাচুর সঙ্গে ফ্রাইড চিকেন ( প্যাকেজের মধ্যে ছিল বেগুনি / পেঁয়াজি ), ঘন্টা দুয়েক বাদে হলো ডিনারের সময়।  তখন পেলাম ভাত / রুটি, মুগ ডাল, আলু ভাজা, চিকেনের ঝোল।  সব কিছুই কাঠের জালে তৈরি।  সারাদিনের ক্লান্তির জন্য সবার চোখে ঘুম নেমে এলো কিছুক্ষনের মধ্যেই। 

পরদিন ভোরবেলা পাখিদের কলরবে ঘুম ভেঙে গেলো ৫টা নাগাদ। আমি, সৌরভ আর অনিন্দ্য হেঁটে হেঁটে  চললাম G-প্লট সি বিচ দেখতে।  হোমস্টে থেকে বিচ এর দূরত্ব ১ কিমি মতো। একটি কথা না বললেই নয় G-প্লট সি বিচ স্নান করার জন্য একেবারেই অনুপযোগী। সকাল বিকেল জমিয়ে বসে গল্প করার জন্য অতি সুন্দর একটি জায়গা। এরপর ফিরে এসে, প্রাতরাশে পেলাম গরম গরম লুচি আর সাদা আলুর তরকারি। 
এবার আমাদের সমুদ্র স্নানের পালা।  আবার টোটো নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম গোবর্ধনপুর বিচের উদেশ্যে সকাল ৯টা নাগাদ । পুরো বিচ জুড়ে শুধু আমরা ৭ জন।  আড়াই ঘন্টা ধরে স্নানপর্ব সেরে যখন হোমস্টে ফিরলাম তখন বাজে দুপুর ১২টা। বিচের কাছেই আছে নিঃশুল্ক পরিষ্কার পাবলিক টয়লেট। স্নানের পর সেখানেও ভেজা জামা কাপড় বদল করা যায় । এবার লাঞ্চে ছিল :-   ভাত,  মুগ ডাল, আলু ভাজা, আলু চিংড়ি মাছের তরকারি,  লোকাল কাটাপোনা মাছের ঝোল, কামরাঙ্গার চাটনি। বিকেলবেলা আবার চললাম ড্যামের পথ ধরে G-প্লট সি বিচে।  প্রায় ঘন্টা দুয়েক বিচে কাটিয়ে যখন ফিরলাম তখন আমাদের জন্য ছিল চিলি চিকেন। এবার আমাদের বায়না বার্বিকিউ করবো। আবার সেই জন্মেজয়দার শরণাপন্ন।  উনি সব ব্যবস্থা করে দিলেন।  রাতের ডিনারে ছিল ভাত / রুটি, মুগ ডাল, বেগুন ভাজা, চিকেনের ঝোল।  সবাই চললাম ঘুমের দেশে, সকালে ফিরতে হবে নিজ গৃহ পথে।  
তৃতীয় দিন সকালে , ঘুম থেকে উঠেই দেখি সুখদেব হাজির ভ্যান নিয়ে।  তখন বাজে ৬টা ৩০ মিনিট।  আর আমাদের জন্মেজয়দা, সকাল বেলা হাসি মুখে হাজির রুটি, আলুর তরকারি আর ডিম সেদ্ধ নিয়ে।  
সব কিছু সেরে বেরিয়ে পড়লাম ৭টা নাগাদ বাড়ির উদ্দেশ্যে। ফেরার সময় ফিরলাম রামগঙ্গা হয়ে এবং লক্ষীকান্তপুর হয়ে। 

এবার আসি G-প্লট এর কিছু তথ্যে : -
কোথায় থাকবেন : -
১) গেট লস্ট এর হোমস্টে (বাঘাযতীন ক্লাব হোমস্টে) :- সিন্টু ভট্টাচার্য্য ( 9836830342 / 6291377154)
২) ঝাউমন হোমস্টে :- 9831309512 
৩) ইকো মেরিডিয়ান ভিলেজ :-  8017098992 / 8777071291 / 8777397379 / 9830009312 

আমরা ছিলাম বাঘাযতীন ক্লাব হোমস্টেতে, ফুডিং এবং লজিং প্যাকেজ পড়েছিল (১২০০ টাকা প্রতিজন প্রতিদিন) 

কিভাবে যাবেন :- 
১) ঘন্টায় ঘন্টায় শিয়ালদাহ থেকে নামখানা লোকাল আছে ।  সেটা ধরে নামবেন কাকদ্বীপ।  বিভিন্ন রেলওয়ে অ্যাপে ডাইরেক্ট ট্রেন দেখায়না। যেটা দেখায় সেটা হলো শিয়ালদাহ (SDAH ) থেকে লক্ষীকান্তপুর  (LKPR ) লোকাল ।  তারপর (LKPR ) থেকে নামখানা (NMKA ) লোকাল।  এখানে একটু তথ্য দিয়ে রাখা ভালো , শিয়ালদাহ থেকে লক্ষীকান্তপুর  লোকাল গুলোই পড়ে নামখানা লোকাল হয়ে যায়। 
শিয়ালদাহ  থেকে নামখানা ভাড়া :- ২৫ টাকা। 
কাকদ্বীপে স্টেশনে থেকে টোটো ধরে চলে আস্তে হবে কাকদ্বীপ বাজার।  ভাড়া : - ১০ টাকা প্রতিজন
সেখান থেকে বাসে (ভাড়া ৩৫ টাকা ) অথবা ট্রেকার রিসার্ভ (আমাদের পড়েছিল ৪০০ টাকা ) করে চলে আস্তে হবে পাথরপ্রতিমা ঘাটে।  
ডাইরেক্ট এসপ্ল্যানেড থেকে বাসেও আসা যায় পাথরপ্রতিমা ঘাটে।  
পাথরপ্রতিমা ঘাট বাসস্ট্যান্ড থেকে টোটো করে যেতে হবে পাথরপ্রতিমা - চাঁদমারি ঘাট।  ভাড়া : - ১০ টাকা প্রতিজন
লঞ্চে  করে  চাঁদমারি ঘাট। ভাড়া : - ২০ টাকা প্রতিজন
যাওয়ার লঞ্চ :- ৬:৩০, ০৭:৩০, ০৮:৩০, ০৯:৩০, ১০:৩০, ০২:৩০, ০৩:৩০, ০৪:৩০ 
ফেরার লঞ্চ :- ০৬:৩০, ০৭:০০, ০৭:৩০, ০৮:০০, ০৮:৪৫, ০২:২০, ০৪:২০ 

চাঁদমারি ঘাট থেকে ভ্যানে করে তটের বাজার।   ভাড়া :- ২০ টাকা প্রতিজন
তটের বাজার থেকে টোটো করে ইন্দ্রপুর বাজার।  ভাড়া :- ২০ টাকা প্রতিজন
ইন্দ্রপুর বাজার থেকে টোটো করে বাঘাযতীন ক্লাব। ভাড়া :- ১৫ টাকা প্রতিজন
আমরা চাঁদমারি ঘাট থেকেই ভ্যান রিসার্ভ করে নিয়েছিলাম ৪০০ টাকায় বাঘাযতীন ক্লাব।  ২৫ জুন যাওয়া 
আর ২৭ জুন ফেরা একেবারেই রিসার্ভ করে নিয়েছিলাম ৮০০ টাকা।

চাঁদমারি ঘাট থেকে ভ্যান রিসার্ভের জন্য কন্টাক্ট করতে পারেন :- সুখদেব জানা (6296765426 ) 

২) আরেকটি রাস্তা হলো লক্ষীকান্তপুর  হয়ে।  ঘন্টায় ঘন্টায় শিয়ালদাহ থেকে লক্ষীকান্তপুর লোকাল আছে। লক্ষীকান্তপুরে নেমে সেখান থেকে বাসে (ভাড়া ৪৫ টাকা ) অথবা ট্রেকার রিসার্ভ ( ১১০০ টাকা ) করে চলে আস্তে হবে রামগঙ্গা ঘাটে।  বাকি রাস্তাটা উপরেই বর্ণিত আছে। 

কি করবেন G-প্লটে :- 
নির্ভেজাল প্রকৃতির শোভা উপভোগ করুন।  দূষণমুক্ত সমুদ্র উপভোগ করুন।  গ্রামের লোকেদের সাথে বন্ধুত্ব করুন।  

বিঃদ্রঃ :- G-প্লটে ঘোরার জন্য টোটো জন্মেজয়দা ভাড়া করে দিয়েছিলেন।  দুদিনের জন্য দুটি টোটো আমাদের পড়েছে মোট ৭০০ টাকা। 

যাওয়ার সঠিক সময় :-
১) সবচেয়ে ভালো সময় শীতকাল (নভেম্বর থেকে মার্চ ) 
২) সবুজ ভালোবাসলে, সঠিক সময় বর্ষাকাল (জুনের শেষ থেকে অক্টোবর ) , যদি না কোনো দুর্যোগের পূর্বাভাস থাকে।  উত্তাল সমুদ্রের সৌন্দর্য্য অবর্ণনীয়। 
৩) এপ্রিল আর মে মাসেও যাওয়া যায়।  কিন্তু বেশি গরমে না যাওয়াই বাঞ্চনীয়।  কারণ ইলেক্ট্রিসিটির অবস্থা শোচনীয়।  রাতের দিকে ভোল্টেজ আপ - ডাউন  করে।

কি করবেন না : -
শহুরে জীবনযাপন লক্ষীকান্তপুর / কাকদ্বীপে ছেড়ে যাবেন।  নাহয়, দুটো দিন আমাদের গ্রাম বাংলাতে কাটিয়ে দেখলেন কেমন লাগে।  

পুনশ্চঃ :-  লেখাটির সাথে আমাদের কিছু ছবি দিলাম। 
ⓒ ঋতব্রত মণ্ডল

No comments:

Post a Comment