Monday, 28 August 2023

জীবন উন্নতিকরনের উপায়

 


একদিন স্বামী বিবেকানন্দ নিজের জীবন নিয়ে হতাশ হয়ে গুরু রামকৃষ্ণের কাছে গেলেন। তিনি গুরুকে জীবন সম্পর্কে প্রশ্ন করলেন।


স্বামী বিবেকানন্দ: আমি অবসর সময় খুঁজে পাচ্ছি না। জীবন আমার জন্য কঠিন হয়ে উঠেছে।

রামকৃষ্ণ পরমহংস:  কাজ তোমাকে ব্যাস্ত করবে কিন্তু সৃজনশীলতা তোমাকে অবসর দেবে।

স্বামী বিবেকানন্দ:  জীবন এখন কেন এত জটিল ?

রামকৃষ্ণ পরমহংস:  জীবনের বিশ্লেষণ বন্ধ করো। .. এটা জীবনকে আরও জটিল করে তোলে।

স্বামী বিবেকানন্দ:  কেন আমরা অসুখী?

রামকৃষ্ণ পরমহংস:  উদ্বেগ তোমার অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। তাই তুমি অসুখী।

স্বামী বিবেকানন্দ:  কেন ভাল মানুষ সবসময় কষ্ট পায়?

রামকৃষ্ণ পরমহংস:  ঘর্ষণ ছাড়া হীরা মসৃণ করা যায় না। আগুন ছাড়া সোনা বিশুদ্ধ হয় না। ভাল মানুষ পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যায়, এটা তাদের ভোগান্তি নয়। এই অভিজ্ঞতা দিয়ে তাদের জীবন আরও সুন্দর হয়ে যায়, তিক্ত নয়।

স্বামী বিবেকানন্দ:  আপনি কি বলতে চাচ্ছেন যে এইরকম অভিজ্ঞতা উপকারী?

রামকৃষ্ণ পরমহংস:  হ্যাঁ। সবসময় অভিজ্ঞতা হলো কঠিন শিক্ষকের মত। যে শিক্ষক তোমাকে আগে পরীক্ষার সম্মুখীন করে এবং পরে শিক্ষা দেয়।

স্বামী বিবেকানন্দ:  অনেক সমস্যার কারণে আমরা জানি না আমরা কোথায় যাচ্ছি …

রামকৃষ্ণ পরমহংস:  যদি তুমি বাইরে তাকাও তাহলে বোঝবে না কোথায় যাচ্ছো। যদি ভেতরটা দেখো তুমি বোঝতে পারবে তুমি কোথায় যাচ্ছো। চোখ আমাদের দৃষ্টি দেয় আর হৃদয় আমাদের উপায় দেখায়।



স্বামী বিবেকানন্দ:  অসফলতা কি সফল পথে চলার চেয়েও বেশি কষ্টদায়ক ?

রামকৃষ্ণ পরমহংস:  সফলতা অন্যদের দ্বারা নির্ধারিত একটি পরিমাপ। সন্তুষ্টি নিজের দ্বারা নির্ধারিত একটি পরিমাপ।

স্বামী বিবেকানন্দ:  কঠিন সময়ে, কীভাবে আপনি অনুপ্রাণিত থাকেন?

রামকৃষ্ণ পরমহংস:  সর্বদা তুমি কতদূর যেতে পেরেছো তা দেখো, তুমি কতদূর যেতে পারো নি তা হিসাব করতে যেয়ো না। সবসময় তোমাকে কারা ভালোবাসে তা দেখো, কে ভালোবাসে না তা হিসাব করতে যেয়ো না।

স্বামী বিবেকানন্দ: মানুষ সম্পর্কে আপনার কী অবাক লাগে?

রামকৃষ্ণ পরমহংস:  যখন তারা কষ্ট করে তখন তারা অভিযোগ করে ‘এই কষ্ট কেনো আমাকে দেয়া হলো’। কিন্তু যখন তারা সফল হয় তখন তারা বলে না, ‘এই সফলতা কেনো আমাকে দেয়া হল?’

স্বামী বিবেকানন্দ:  কীভাবে আমি জীবন থেকে সেরাটা পেতে পারি?

রামকৃষ্ণ পরমহংস:  তোমার অতীতকে অনুশোচনা ছাড়াই মেনে নাও। আস্থার সঙ্গে তোমার বর্তমান পরিচালনা কর। ভয় ছাড়াই ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত হও।

স্বামী বিবেকানন্দ:  একটি শেষ প্রশ্ন। কখনো কখনো আমি মনে করি আমার প্রার্থনার উত্তর দেওয়া হয় না।

রামকৃষ্ণ পরমহংস:  সব প্রার্থনার উত্তর দেওয়া হয়। বিশ্বাস রাখো এবং ভয় ছেড়ে দাও। জীবন কোন সমস্যা নয় যে সমস্যার সমাধান করতে হবে, জীবন একটি রহস্য যার সমাধান করতে হবে। বিশ্বাস কর, যদি তুমি জানো কিভাবে বাঁচতে হয় তবে জীবন বিস্ময়কর সুন্দর।

পৃথিবী কত সুন্দর এটা তোমাকে যে কেউ বোঝাতে পারবে কিন্তু এর মধ্যে খুব কম মানুষই তোমাকে বোঝাতে পারবে যে, তুমি পৃথিবীতে কত সুন্দর।

অসাধারণ দার্শনিক আলোচনা....জীবন কে উন্নত করে।

@&@&@&@&@&@&@&@&@&@&@&@&@&

শয়নে প্রণামজ্ঞান নিদ্রায় করো মাকে ধ্যান ।

**************************************

সবসময় তাঁকে চিন্তা করলে উগ্র হতে পারবে না। তাঁকে চিন্তা না করলেই মনটা চঞ্চল হয় ,  মন রাগ - ঝাগ করে । স্মরণ - মনন করার অভ্যাস যে করবে সে - ই  শান্তি পাবে। এ তো আর ঔষধ নয় যে গুলে খাইয়ে দেবে। মায়ের হাতে সব আছে ।  মাকে খুব ভালবাসবে । অনুরাগ চাই। তা না হলে শুধুই বসে বসে   'ফরে ফৃষ্ট ফরে ফৃষ্ট' করবে আর ঢুলবে। কিছুই হবে না।

             "দুটি মন থাকে -----একটি বহির্মুখী ও অন্যটি অন্তর্মুখী ।  কারও দোষ দেখছ না তো ?  মা বলেছেন একথা। ঠাকুরের প্রতি ভালবাসা এলে তবে ডুব দেওয়া যায় । অভ্যাস করতে হবে।  বিনা অনুরাগ নেহি মিলে নন্দলালা ।

           --- প্রব্রাজিকা ভক্তিপ্রাণা মাতাজী

!@!@!@!@!@!@!@!@!@!@!@!@!@!@!@!@!@!


*꧁জপ꧂*

পবিত্র ঈশ্বরীয় নাম অথবা শক্তিশালী ইষ্টমন্ত্রের পুনঃ পুনঃ উচ্চারণই 'জপ'।

অরণি কাঠ বারবার ঘর্ষণ করতে করতে যেমন তা থেকে আগুন বার হয়, ঠিক তেমনই গোপন ইষ্টমন্ত্র সঠিক উচ্চারণে জপ করতে করতে তা থেকে শক্তি নির্গত হয়ে সাধককে অতীন্দ্রিয় রাজ্যের দিকে নিয়ে যায়। তখন স্তরে স্তরে মন উপরে উঠতে থাকে।

জপের সময় মুখ বন্ধ এবং জিভ স্তব্ধ থাকা উচিৎ। অর্থাৎ জপ হবে মনে মনে। 

মন অন্যদিকে নিযুক্ত রেখেও মুখে কোনও শব্দ উচ্চারণ করা সহজ। কিন্তু মনকে জপের দিকে নিযুক্ত না রেখে মানসিক জপ প্রায় অসম্ভব, তাই নীরব মানসজপই শ্রেষ্ঠ। 

মনকে অন্য সকল চিন্তা থেকে মুক্ত করে সর্ব প্রকারে ঈশ্বরমুখী করাই সাধনার উদ্দেশ্য। 

মনের চিন্তা দুই প্রকার : শ্রবণধর্মী এবং দর্শনধর্মী।

অর্থাৎ আমরা কোনও শব্দ চিন্তা করতে পারি অথবা দৃশ্য চিন্তা করতে পারি। 

এই দুইপ্রকার চিন্তনকে ঈশ্বরমুখী করতে গেলে অন্তরে ইষ্টের রূপ (দৃশ্য ) চিন্তন এবং তাঁর ভাব-প্রতিপাদক মন্ত্র (শব্দ) চিন্তন করতে হয়। তাহলে মনে আর অন্য চিন্তা আসেনা।

আর তা না হলে মুখে নাম করে যাচ্ছি কিন্তু মন তার অভ্যাসবশতঃ জাগতিক চিন্তা করে যাচ্ছে তাতে কী লাভ?  

মুখে একটি শব্দ উচ্চারণ করা সহজ, কিন্তু দৈহিক কম্পন বন্ধ করে শুধু মানস জপ করতে গিয়ে দেখা যায় সেটা কত কঠিন! আর কঠিন বলেই সেটা অধিকতর ফল প্রদানকারী।

স্বামী বিবেকানন্দ রাজযোগের আলোচনায় বলছেন,

_‘‘...মন্ত্র জপ করিবার তিন প্রকার নিয়ম আছে — 'বাচিক', 'উপাংশ' ও 'মানস'।_

_বাচিক জপ সর্বনিম্নে এবং মানস জপ সর্বাপেক্ষা শ্রেষ্ঠ।...’’_

মন্ত্র জপের সঙ্গে সঙ্গে মন্ত্রের অর্থ অর্থাৎ মন্ত্রের ভাবটি চিন্তা করতে হয়। মহর্ষি পতঞ্জলি শেখাচ্ছেন, _'তজ্জপস্তদর্থ- ভাবনম্';_

— অর্থাৎ জপের সঙ্গে সঙ্গে জপমন্ত্রের অর্থ ভাবার কথা বলা হয়েছে। 

এখানে 'মন্ত্র' বলতে ঈশ্বরীয় নাম এবং তার অর্থ বলতে নামের প্রতিপাদ্য ভাবের কথা বলা হচ্ছে। 

এই ভাব-চিন্তন থেকেই বিক্ষেপহীন ভাবময় স্থিতি বা ধ্যান আসে। এভাবেই জপ থেকে ক্রমে ধ্যানে উন্নীত হতে হয়।

যাঁরা শ্রীরামকৃষ্ণ-নাম জপ করছেন, তাঁরা জপের সাথে সাথে সেই নামের অর্থ বা ভগবান শ্রীরামকৃষ্ণের রূপ চিন্তন করেন। 

কিন্তু ভগবান শ্রীরামকৃষ্ণের প্রকৃত রূপ আমাদের বুদ্ধির অগম্য। তাঁর অনন্ত ভাব আমাদের ধারণার বাইরে। আমরা তাই নিজেদের সীমাবদ্ধ ক্ষমতা অনুযায়ী আমাদের পক্ষে যতটুকু সম্ভব শুধু ততটুকুই তাঁকে চিন্তা করতে পারি। 

স্বয়ং স্বামী বিবেকানন্দ তাঁর সম্পর্কে বলেছেন, 

_‘‘এই অদ্ভুত রামকৃষ্ণ-চরিত্র তোমার ক্ষুদ্র বিদ্যাবুদ্ধি দিয়ে যতদূর সাধ্য আলোচনা  কর, অধ্যয়ন কর। আমি তো তাঁর লক্ষাংশের একাংশও এখনও বুঝতে পারিনি। ও যত বুঝবার চেষ্টা করবে, ততই সুখ পাবে, ততই মজবে।’’_

কথামৃতে আছে — শ্রীমতি রাধিকা যত কুঞ্জবনের দিকে এগোচ্ছেন তত কৃষ্ণ-গন্ধ নাকে আসছে।

 — এর আধ্যাত্মিক তাৎপর্য হল : আমরা যত পবিত্র হব, যত তাঁর দিকে এগোতে থাকব, ততই তাঁর স্বরূপ আমাদের কাছে স্পষ্ট থেকে স্পষ্টতর হবে। 

জপের পথে আমরা ভাবময় ইষ্টের কাছাকাছি পৌঁছে যাই।

#$#$#$#$#$#$#%#$#$#%#$#$#%#$#$#$#$#$%#$

রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের মূলমন্ত্র হল “আত্মনো মোক্ষার্থং জগদ্ধিতায় চ” (নিজের মুক্তি ও বিশ্ব কল্যাণ)। স্বামী বিবেকানন্দ এই ধর্মের ব্যাখ্যা করেছিলেন। 

%&%&%&%&%&%&%&%&%&%&%&%&%&%

মনের অশান্তির জন্য কিছু ভেবো না। তিনিই শান্তি দেবেন। তোমার হবেও। তাঁর কাছে না হলে এখানে এলে কি করে সব ছেড়েছুড়েদিয়ে? খুব তাঁর নাম কর। জপ-ধ্যান কর। কেঁদে কেঁদে তাঁর কাছে প্রার্থনা কর। প্রার্থনা করলে তাঁর অস্তিত্ববোধটা খুব হয়। কেঁদে কেঁদে প্রার্থনা করে বলবে, 'ঠাকুর আমার মনের সব দুর্বলতা, মলিনতা দূর করে দাও। আমি শরণাগত। তুমি আমায় রক্ষা কর।'

স্বামী শিবানন্দজী মহারাজ 

জ্ঞান আবার মানুষের অন্তর্নিহিত। কোন জ্ঞানই বাহির হইতে আসে না, সবই ভিতরে। আমরা যে বলি মানুষ ‘জানে’, ঠিক; মনোবিজ্ঞানের ভাষায় বলিতে গেলে বলিতে হইবে মানুষ ‘আবিষ্কার করে’(discovers) বা ‘আবরণ উন্মোচন করে’ (unveils)। মানুষ যাহা ‘শিক্ষা করে’, প্রকৃতপক্ষে সে উহা ‘আবিষ্কার করে’। ‘Discover’ শব্দটির অর্থ-অনন্ত জ্ঞানের খনিস্বরূপ নিজ আত্মা হইতে আবরণ সরাইয়া লওয়া। আমরা বলি, নিউটন মাধ্যাকর্ষণ আবিষ্কার করিয়াছিলেন। উহা কি এক কোণে বসিয়া তাঁহার জন্য অপেক্ষা করিতেছিল? না, উহা তাঁহার নিজ মনেই অবস্থিত ছিল। সময় আসিল, অমনি তিনি উহা দেখিতে পাইলেন। মানুষ যতপ্রকার জ্ঞানলাভ করিয়াছে, সবই মন হইতে। জগতের অনন্ত পুস্তকাগার তোমারই মনে। বহির্জগৎ কেবল তোমার নিজ মনকে অধ্যয়ন করিবার উত্তেজক কারণ উপলক্ষ্য মাত্র, তোমার নিজ মনই সর্বদা তোমার অধ্যায়নের বিষয়। আপেলের পতন নিউটনের পক্ষে উদ্দীপক কারণ-স্বরূপ হইল, তখন তিনি নিজের মন অধ্যায়ন করিতে লাগিলেন। তিনি তাঁহার মনের ভিতর পূর্ব হইতে অবস্থিত ভাবপরম্পরা আর একভাবে সাজাইয়া উহাদের ভিতর একটি নূতন শৃঙ্খলা আবিষ্কার করিলেন; উহাকেই আমরা মাধ্যাকর্ষণের নিয়ম বলি। উহা আপেলে বা পৃথিবীর কেন্দ্রে অবস্থিত কোন পদার্থে ছিল না। অতএব লৌকিক বা পারমার্থিক সমুদয় জ্ঞানই মানুষের মনে। অনেক স্থলেই উহারা আবিষ্কৃত (বা অনাবৃত) হয় না, বরং আবৃত থাকে; যখন এই আবরণ ধীরে ধীরে সরাইয়া লওয়া হয়, তখন আমরা বলি ‘আমরা শিক্ষা করিতেছি’, এবং এই আবরণ অপসারণের কাজ যতই অগ্রসর হয়, জ্ঞানও ততই অগ্রসর হইতে থাকে। এই আবরণ যাঁহার ক্রমশঃ উঠিয়া যাইতেছে, তিনি অপেক্ষাকৃত জ্ঞানী; যাহার আবরণ খুব বেশী, সে অজ্ঞান; আর যাঁহার ভিতর হইতে অজ্ঞান একেবারে চলিয়া গিয়াছে, তিনি সর্বজ্ঞ। পূর্বে অনেক সর্বজ্ঞ পুরুষ ছিলেন; আমার বিশ্বাস একালেও অনেক হইবেন, আর আগামী কল্পসমূহে অসংখ্য সর্বজ্ঞ পুরুষ জন্মাইবেন। চকমকি পাথরে যেমন অগ্নি নিহিত থাকে, মনের মধ্যেই সেইরূপ জ্ঞান রহিয়াছে; উদ্দীপক কারণটি যেন ঘর্ষণ-জ্ঞানাগ্নিকে প্রকাশ করিয়া দেয়। আমাদের সকল ভাব ও কার্য সম্বন্ধে ও সেইরূপ; যদি আমরা ধীরভাবে নিজেদের অন্তঃকরণ অধ্যয়ন করি, তবে দেখিব, আমাদের হাসি-কান্না, সুখ-দুঃখ, আশীর্বাদ-অভিসম্পাত, নিন্দা-সুখ্যাতি সবই আমাদের মনের উপর বহির্জগতের বিভিন্ন আঘাতের দ্বারা আমাদের ভিতর হইতেই উৎপন্ন। উহাদের ফলেই আমাদের বর্তমান চরিত্র গঠিত, এই আঘাত-সমষ্টিকেই বলে কর্ম।                 

—স্বামী বিবেকানন্দ।

=^=^=^=^=^=^=^=^=^=^=^=^=^=^=^=^=^=

🙏🏻🌺 *গুরু সচ্চিদানন্দ*🌼🙏🏻   

*রামকৃষ্ণ সঙ্ঘের গুরুবাদের মধ্যে কোথাও কোন এক-ব্যক্তির স্থান নেই। প্রত্যেক সঙ্ঘগুরু বলেছেন,গুরু হচ্ছেন সচ্চিদানন্দ। গুরু কোন এক ব্যক্তি নন, গুরু একটি দেহ নন। গুরু একটি মহাশক্তি। গুরু স্বয়ং ঈশ্বর। রামকৃষ্ণ সঙ্ঘে তিনি "শ্রীরামকৃষ্ণ" মূর্তিতে বিরাজিত। এই গুরুবাদে গুরু কখনো আমাদের ছেড়ে যান না। একজন যান আর একজন আসেন।সেই কারণে যাঁরা দীক্ষা দেন তাঁরা সকলেই বলেন,"আমরা কেউ গুরু নই। আমাদের সকলের গুরু শ্রীরামকৃষ্ণ। তিনিই ইষ্ট, তিনিই সব। যারা আমার গুরু,আমার গুরু করে তারা পুকুরের মাছের মতো নিজেদের সঙ্কীর্ণ গণ্ডিতে নিশ্চিত হয়ে আছে। স্বামী বীরেশ্বরানন্দজী লিখেছেন, বিভিন্ন গুরুর জন্মদিন তাঁদের নিজেদের শিষ্যদের দ্বারাই শুধু পালিত হওয়া নির্বুদ্ধিতার পরিচায়ক। কারণ এর ফলে বিভিন্ন গুরুর শিষ্যদের মধ্যে একটা সংকীর্ণ বিভেদকামী প্রবণতার সৃষ্টি হয়। প্রতিটি শিষ্যগোষ্ঠীই বলে আমার গুরু,আমার গুরু। গুরুকে কেন্দ্র করে একটা সম্প্রদায় তৈরি করা খারাপ। রামকৃষ্ণ সঙ্ঘে ৫০ বছর আগে দীক্ষা হোক বা আজই হোক, সবাই একই গুরুর শিষ্য। সকলের গুরু শ্রীরামকৃষ্ণ।

@@@@@@@@@@@@@@@@@@@@@

‘পাকা আমি'  বনাম ‘পাকামি'


 পূজা করার সময় ভগবান শ্রীরামকৃষ্ণ অনেকক্ষেত্রে তথাকথিত শাস্ত্রীয় বিধি লঙ্ঘন করতেন বলে শোনা যায়। স্বামীজিও পূজার সময় কখনও কখনও ফুল- নৈবেদ্যদি একসাথে অর্পণ করে গভীর ধ্যানমগ্ন হয়ে পড়তেন; আবার কখনও কখনও মন্দিরে উপবিষ্ট শিষ্যগণ ও অন্যান্য সাধু ব্রহ্মচারীদের মস্তকে পূজার ফুল নিক্ষেপ করতেন। এসব 'বৈধী' পূজা-বিধিতে পাওয়া যায়না। 

  —এই আচরণ বৈধী-ভক্তির ঊর্ধ্বে পরা ভক্তির স্তরের। 

কিন্তু এই দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে যদি সাধারণ স্তরের কোনও ব্যক্তি অনুরূপ আচরণ করেন তবে ভগবান শ্রীরামকৃষ্ণের ভাষায় সেক্ষেত্রে বলতে হয় :

❝বিষয়ী লোকের ঈশ্বরের নাম করা — অনুরাগ নাই। বালক যেমন বলে, ‘তোর পরমেশ্বরের দিব্যি।’ 

—খুড়ী-জেঠীর কোঁদল শুনে ‘পরমেশ্বরের দিব্যি’  শিখেছে!❞

সাধারণ স্তরের মানুষ বা বিধিবাদীয় ভক্তির স্তরের ভক্তদের পক্ষেও ওইরূপ মহাজন-সদৃশ্য আচরণের অনুকরণ ও তাকে ‘ভাবের পূজা’ - নাম দিয়ে আত্মপ্রসাদ লাভ করা ওই ‘খুড়ি জেঠির কোঁদল শুনে পরমেশ্বরের দিব্যি’ শেখার মতোই 'পাকামি' বলেই বোধ হয়।

অনেকে বলে থাকেন : ঠাকুরের পূজায়  কেক, ঝালমুড়ি বা পিৎজা দেওয়া যাবে, অর্থাৎ আমরা যা খাই সেই সবই পুজোর উপাচার হিসাবে ব্যবহার করা যাবে। কিংবা উচ্ছিষ্টপূর্ণ খাবার টেবিলের উপরে ইষ্টের প্রতিকৃতি রেখে আমাদের সাথেই তাঁকেও ওখানেই ভোগ নিবেদন করা যাবে - ইত্যাদি।

—এইসব বক্তব্য আমাদেরকে বিস্মিত করে।  

শ্রীশ্রীঠাকুরের বাহ্যপূজা প্রবর্তন করেছিলেন স্বামী রামকৃষ্ণানন্দজী। পরবর্তীকালে প্রেমানন্দজী ঠাকুরের বাহ্যপূজার দায়িত্ব নেন। শ্রীশ্রীমাও ঠাকুরের বাহ্যপূজা করতেন।  এঁদের পূজা সম্পর্কে অনেক তথ্য আমরা বিভিন্ন বইপত্র থেকে পাই। সেখানে দেখেছি, ঠাকুরের পূজা কোনও ছেলেখেলা নয়। অত্যন্ত শুদ্ধাচারে তা করতে হয়। 

কেউ যদি মনে করে থাকেন ঠাকুরের পূজায় কেক, ঝালমুড়ি, পিৎজা এসব নিবেদন করবেন সেটা তাঁর ব্যক্তিগত স্বেচ্ছাচারিতা হতে পারে,  তবে 'ভাবের পুজো' নাম দিয়ে ওই অশাস্ত্রীয় ছেলেখেলাকে সর্বজনীন করার প্রচেষ্টা অত্যন্ত হানিকর। 

শিশুরা বড়দের মতো আচরণ করলে যদি তাকে 'পাকামি' বলা হয়, তাহলে এসব ক্ষেত্রেও ভক্তিরাজ্যে নিম্ন অধিকার বিশিষ্টরা যদি পরা ভক্তির রাজ্যে অধিষ্ঠিত উচ্চ অধিকারীর অনুকরণ করতে থাকে তবে সেই কর্মটিকেও অনুরূপ বিশেষণে কেন ভূষিত করা যাবে না?

'ভাবের পুজো' অনেক উচ্চস্তরের ব্যপার। ওটা সর্বজনীন হতে পারেনা। ঠাকুর বলতেন 

❝ছাদে উঠে দু'হাত তুলে নাচলেও কোনও ভয় নেই কিন্তু সিঁড়িতে নাচানাচি করলে পতনের সম্ভাবনা।❞

—বৈধীভক্তির স্তরে এ'রকম স্বেচ্ছাচারিতা আধ্যাত্মিক সাধনার ক্ষেত্রে বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। 

শোনা যায় ত্রৈলঙ্গস্বামী এমন অনেক আচরণ করতেন, যা সাধারণের চোখে অশাস্ত্রীয়। কিন্তু যে আচরণ ত্রৈলঙ্গস্বামীর মতো মহাপুরুষের পক্ষে সম্ভব তা  সর্বজনীন হ'তে পারেনা। 

কেমন হবে ঠাকুরের পূজা? —এর উত্তর স্বয়ং শ্রীশ্রীমা বিভিন্ন সময়ে দিয়েছেন। সেখানে দেখেছি খুব আপৎকালীন অবস্থা ছাড়া তিনি ঠাকুরের পূজায় যথেষ্ট সাবধানতা ও শুদ্ধাচার অবলম্বন করেছেন। 

ঠাকুরের পুজোয় সাদা ফুল দিতে হয়। ধূপ,  বেশী গন্ধযুক্ত ফুল এসব ঠাকুরের বিগ্রহ থেকে একটু দূরে রাখতে হয়। চন্দনে খিঁচ থাকা চলবেনা। ঠাকুরের জন্য নিবেদনযোগ্য আহার্যে যেন কোনওভাবেই নিঃশ্বাস না পড়ে এটা দেখতে হয়। ঠাকুরের জন্য নিবেদনযোগ্য আহার্যের অগ্রভাগ কাউকে না দেওয়া, স্পর্শদোষ যথাসম্ভব বাঁচিয়ে চলা — এরকম বিভিন্ন বিধি-নিষেধ স্বয়ং মা শিখিয়েছেন বিভিন্ন সময়ে। 

সুতরাং সাধারণ মানুষের মধ্যে অধিকারী নির্বিশেষে 'ভাবের পুজোর' নাম করে স্বেচ্ছাচার প্রবর্তন অনুচিত বলেই মনে হয়।

পূজা হ'ল ভক্তিযোগের একটি সাধন-পদ্ধতি।

স্বামী বিবেকানন্দের মতে ভক্তিযোগে ভক্তিই একাধারে উদ্দেশ্য এবং উপায় দুইই। অপরপক্ষে অন্যান্য যোগের পদ্ধতিগুলি শুধু উপায়মাত্র, উদ্দেশ্য নয়।

অর্থাৎ ভক্তিযোগে সাধক চান ইষ্টের প্রতি নিবিড় ভক্তি। আবার এই ভক্তিলাভের উপায়ও ভক্তি।

ভগবান শ্রীরামকৃষ্ণ শেখান, 'ভক্তিকামনা কামনার মধ্যে নয়।'

 অর্থাৎ অন্য কামনায় মানুষের বদ্ধতা বাড়ে, মানুষ জাগতিক মোহের জালে ছটফট করে; কিন্তু 'ভক্তি-কামনা কামনার মধ্যে নয়', কারণ এই কামনার তীব্রতায় মানুষের স্বরূপের জাগতিক আচ্ছাদন ক্ষীয়মাণ হয়।

ভক্তি খুব মন্থর পদ্ধতি কিন্তু ভক্তি থেকে উৎপন্ন আনন্দ সাধককে সাধনার মধ্যে ডুবিয়ে রাখে, তাই এক্ষেত্রে সাধককে নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করে বা কষ্ট করে সাধনা করতে হয়না।

 সাধনার আনন্দই নেশার মত সাধককে সাধনায় ডুবিয়ে রাখে।

 ভক্তিপথে জোর করে ইন্দ্রিয়দমন করতে হয়না। কারণ ভক্তের জাগতিক উদ্দীপনাগুলির অভিমুখ ঈশ্বরের দিকে ফিরিয়ে দেওয়া হয় ভক্তিযোগে। 

ভগবান শ্রীরামকৃষ্ণ শিক্ষা দেন কামকে ঈশ্বরীয় প্রেমে পরিণত করতে, ক্রোধকে আধ্যাত্মিক তেজে পরিণত করতে।

ভক্তরাজ প্রহ্লাদ প্রার্থনা করছেন, 'হে প্রভু বিষয়ী লোকের যেমন জাগতিক ভোগ্যবিষয়ে তীব্র আসক্তি, তোমার প্রতি আমার সেইরূপ আসক্তি দাও।'

- এই হল ভক্তের প্রার্থনা। 

মহর্ষি নারদ বলছেন : 

'সা তস্মিন পরম প্রেমরূপা।' --- ঈশ্বরের প্রতি পরম প্রেম বা অনুরক্তিই হল ভক্তি। 

ঈশ্বর-বিরহে ক্রন্দন, তাঁর সান্নিধ্য লাভের জন্য জপ-ধ্যান, সেবা , পূজা প্রভৃতি হল ভক্তির সাধন।

 আমাদের মধ্যে যে শারীরিক ভোগবাসনা, বিষয় বাসনা, ক্ষুদ্র আসক্তি এইসব রয়েছে; এগুলো আমাদের স্বরূপের ওপর আচ্ছাদন ফেলে দেয়। নিজেকে চিনতে দেয়না। এগুলোই আমাদের বহির্মুখী করে রেখে দেয়।

 কিন্তু আমাদের স্বরূপ রয়েছে অন্তরে। ভক্তিযোগে ঈশ্বরের প্রতি প্রবল ভালোবাসার শক্তিতে আমরা এই জাগতিক আসক্তি জনিত বন্ধন অতিক্রম করতে পারি।

ভক্তের কান্না ঈশ্বরের অদর্শন জনিত ব্যাথা থেকে আসে। ভক্তের ঈশ্বর সেবা ও পূজা শুধু মাত্র ঈশ্বরের স্মরণ-মনন জনিত আনন্দের জন্যে। ভক্তের সমস্ত দেহ মন প্রাণ ঈশ্বরের জন্যে নিবেদিত।

ভক্ত আসক্তি ত্যাগ করেননা, শুধু সেই আসক্তিকে ঈশ্বরের অভিমুখী করে দেন।

ভগবান শ্রীরামকৃষ্ণ বলছেন : 'এমনি মিষ্টি খেলে অসুখ হয়, কিন্তু মিছরির মিষ্টি মিষ্টির মধ্যে নয়।'

 ঠিক তেমনি কামনা-বাসনা ঈশ্বরীয় পথের প্রতিবন্ধক, কিন্তু 'ভক্তি-কামনা' কামনার মধ্যে নয়।

ভক্তিপথে জাগতিক আসক্তিকে ঈশ্বরীয় প্রেমে রূপান্তরিত করতে হয়। ঈশ্বরে আত্মসমর্পণের মাধ্যমে ভয়মুক্ত হতে হয়।  

শ্রীম (মহেন্দ্র নাথ গুপ্ত) বলতেন, 'সর্বদা বাপ-মা ওয়ালা ছেলের মতো নির্ভয়ে থাকো।'

 এভাবেই ভক্ত ঈশ্বরে শরণাগতির মাধ্যমে জাগতিক ভয় ও দুশ্চিন্তার ঊর্ধ্বে এক আনন্দঘন জগতে বিরাজ করেন।

অর্থাৎ সর্বদা সর্বভাবে ঈশ্বরের সাথে যুক্ত থাকাই ভক্তিপথের সাধনা।

ভগবান শ্রীরামকৃষ্ণ শেখাচ্ছেন একটি পাত্র থেকে আরেকটি পাত্রে তেল ঢাললে যেমন নিরবচ্ছিন্নভাবে তেলের ধারা পতিত হয় , তেমনি নিরবচ্ছিন্নভাবে ঈশ্বরের স্মরণ-মনন করতে হয়। খুব সহজ উপমা দিয়ে তিনি বোঝাচ্ছেন : যেমন যার দাঁতে ব্যাথা হয়েছে সে সব কাজ করে, সবার সাথে কথা বলে; কিন্তু মনটি সর্বক্ষণ ওই ব্যাথার দিকে পড়ে থাকে। ঠিক তেমনি সব অবস্থায় ভক্ত নিজেকে ঈশ্বরের সাথে যুক্ত রাখেন। 

সর্বদা ইষ্টের স্মরণ ভক্তের স্বাভাবিক অবস্থা। কোনও প্রিয় মানুষের বিচ্ছেদে যেমন সর্বদাই সেই মানুষটিকে মনে পড়ে, ঠিক তেমনই ভক্ত সর্বদা ইষ্টস্মরণে নিয়োজিত না থেকে পারেন না। তিনি সংসারে থাকেন, সব কাজ করেন কিন্তু অন্তঃসলিলা ফল্গুর মতো প্রিয়তমের রূপ ও তাঁর নাম সর্বদাই স্মরণপথে উদিত হয়। 

স্বাভাবিক নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসের মতো ইষ্টমন্ত্র তাঁর মনে উচ্চারিত হয়ে চলে। ডুবন্ত ব্যক্তি যেমন প্রাণপণে কোনও অবলম্বনকে আঁকড়ে ধরে ভেসে থাকার চেষ্টা করে, ভক্তও তেমনি ইষ্টের নাম ও রূপকে আঁকড়ে ধরে জীবনযাপন করেন।

ক্রমে তাঁর নিজের সকল জাগতিক সত্তা ঝাপসা হয়ে আসতে থাকে, মুছে যায় সকল পার্থিব কামনা বাসনা দুঃখ সুখ। তখন কেবল ঈশ্বর বিরহে তাঁর কষ্ট, ঈশ্বরীয় আবেশে তাঁর সুখানুভব। তখন তাঁর জগৎ কেবলই ইষ্টময়, ঈশ্বরময়।তখন তাঁর থাকেনা কোনও জাগতিক পরিচয়। কেবল 'আমি ঈশ্বরের অংশ', 'আমি তাঁর চরণাশ্রিত দাস' -- এই পরিচয়টুকুই অবশিষ্ট থাকে।

এই অবস্থাই হ'ল

'পাকা আমি'। 

আর পরাভক্তির নামে  'আমিত্বরহিত' এই উচ্চস্তরের মিথ্যা অনুকরণ হ'ল 'পাকামি'।

❉✤❉✤❉§§§§§¥¥¥¥¥¢¢¢¢¢$$$$$

SELF EMPOWERMENT

 



Self-empowerment means making a conscious decision to take charge of your destiny. It involves making positive choices, taking action to advance, and being confident in your ability to make and execute decisions. Self-empowered people understand their strengths and weaknesses and are motivated to learn and achieve.


While perfect control over your life isn’t possible, you can control a lot of things that determine the quality of your life. The aim of self-empowerment isn’t to have perfect control but to have the ability to use it for crucial areas of your life.

Self-empowerment may also be considered a combination of skill, action, and belief. Collectively, these things come together to help you create the life you want.

Usually, self-awareness is the precursor to self-empowerment because it gives you a realistic assessment of yourself.

Self-awareness enables you to know your strengths and weaknesses. Knowing which parts of yourself you need to improve and which strengths to maximize can help you live the most fulfilling life possible.

Being self-aware isn’t just limited to your abilities and skills. It also includes knowing what the most important things in your life are and what you want to accomplish.

Knowing these things allows you to focus your time, energy, and resources towards those things, maximizing your chances of success.

Self-confidence is another important aspect of self-empowerment. You won’t be able to accomplish your goals if you don’t develop the belief you’re capable of accomplishing them.

The final component of self-empowerment is action. Even the smallest actions can take you closer to your goal — wishful thinking and mere knowledge can’t.

Personal empowerment is about taking control  of your own life and making positive decisions based on what you want. Bear in mind that " empowerment " is not the same as " entitlement " . People who feel entitled tend to  believe that benefits and privileges should come to them automatically, while empowered people achieve success through hard work , reflection and co-operation. It is closely linked to attributes like SELF ESTEEM and SELF CONFIDENCE but true empowerment comes when you convert intention into action.

An affirmation is a positive  statement that helps to overcome your negative thoughts and feelings.  They helps to  reinforce positive thoughts and feelings.  Reciting an affirmation at the beginning of the your day can lead to more productive thoughts , positive attitude  and can ultimately changes the way you approach daily. An affirmation of for self-love is meant to boost your love for yourself. 

What happens when we intentionally and consistently use affirmations? Big things start to shift. Affirmation help to deprogram harmful thoughts patterns.  It shifts our emotions,  habits and thought patterns, leading us to live in closer alignment to our true situation.  You deserve to feel empowered,  worthy and authentic and you don't have to wait around for someone to give it to you.  Empower yourself today by using these affirmation.  As always, take what you need, leave the rest.  

Types of empowerment ranges from  self-strength to efficiency-building of yourself.  However,  empowerment can be categorized into main five parts ________ SOCIAL, EDUCATIONAL,  ECONOMICAL, POLITICAL AND PSYCHOLOGICAL. 

8 Ways to Feel More Empowered in Your Life 

Positive Affirmations

When you are struggling with negative self-talk, you can immediately flip the script by changing your thoughts and words. By choosing words that are positive and encouraging, you will bring more of that to your life. Words are powerful and can change your mindset in an instant. 

Take Action and Finish Something 

Do something- anything! Even if it’s a small action, the impact will be the same. Accomplish something today that makes you feel like you’ve made progress in the right direction. It can be as simple as sending an email, finishing a book, or doing your laundry. 

Challenge the Negative Thoughts 

If you find yourself in comparison mode, decide to challenge the negative thoughts that are arising. Ask yourself if what you’re thinking is really true. Search for actual evidence that your thoughts are legitimate. Most likely you will find that they are not. 

Take Care of Yourself 

Taking care of yourself almost guarantees that you can show up more fully in your life and for other people. Self-care can take on many different forms, so choose something that resonates with you. Try meditation, reading, or yoga. Or spoil yourself with a massage or other body treatment 

Connect with Others 

If you are feeling isolated in your negativity, make a point to connect with others. Connection naturally increases feelings of belonging. Call a friend, go to a workout class, or set up a dinner with people who are positive and uplifting.  

Get Clear on What You Want 

Sometimes self-doubt can creep in because we don’t know exactly what we want for ourselves. Take time to think about where you want to be and what you want to accomplish. Journaling and vision boards are two popular techniques for gaining clarity on our goals. 

Practice Gratitude 

Being thankful for what we have and the innate gifts that we have been given is a surefire way to increase feelings of empowerment. Establish a daily gratitude practice by choosing three things you are thankful for each day. 

Do Something You Love 

When you are in your element, your positive energy rises. Do something you love to do, no matter if you’re good at it or not. Exercise, art, reading, or cooking – the options are endless. 



It is a long process by which you becoming empowered. It has to be developed gradually.  For this practice is required.  Naturally we have to make efforts to achieve it. This can be  easily done following certain steps in our daily life. 

A. BE TRUTHFUL :: When you lie, you feel guilty. Guilt leads to shame. Shame leads to feelings of worthlessness. Honesty is the really the best policy when it comes to self-empowerment.

B. SELF CONFIDENCE :: Be confident. No one knows what is good for you more than you. 

C. BE AWARE ::  Awareness involves recognising your environment, yourself and your power. To fully be aware, you must acknowledge that you can discharge from stressful things. Be aware of the power, you possess inside to take back your life as your own. 

D. BE UNIQUE :: First thing what needs to be understood is that we are unique. Every person is different. We should not compare ourselves with others. We should give the world the best.

E. RELAX :: Take time out from your daily life to relax. Meditation is an excellent way to free your body of stress.  Because meditation boosts seotonin ( the brain chemical associated with mood) , your attitude improves and your attitude improves and your rights are more respectful.

F. BE ASSERTIVE :: We need to be assertive in life. Nobody would come to stand. An individual has to take stand for himself  and be assertive. 

G. BE RESPONSIBLE :: To be more empowered,  you must know exactly what you are responsible.   Knowing this allows you to be guilt-free from life circumstances.  Take responsibility for you and your life to be empowered and independent. 

H. PLAN :: A person needs to be have dream. Planning is very necessary to make the dream a reality.  Planning can be termed as a strategy to achieve goals.

I. GOAL SETTING :: Goals are very important in life.  Goals give direction and purpose of our life.  Self employment is about knowing what we want to achieve and making the right move.  Both short term and long terms firm an integral part of life.

J. DON'T WORRY ABOUT THE FUTURE  :: There is a fine line between the future and self-empowerment.  Accept the truth regarding what the future holds for you.   Accept each challenge what you have infront  of you  and also regarding tomorrow asan empowering event.

K. SHARE YOUR GREATNESS :: Now that you know you are on your way to self-empowerment or empowered,  share what you know,  with others. Allow people to see how great you have because of your new found independence and peace. 

L. TRUST OTHERS AND YOURSELF:: Trust is the quality that propels ( পরিচালনা ) you forward being a better decision maker. Make your choices and stick with them. Trust your own judgment and ability to decide. Having trust involves having faith in the self-empowerment process, as well as in the process of life. Trusting others allows you to go out of worry, doubts and dreads ( ভয় ).

M. RECOGNIZE WHAT YOU GOT :: To see what you are, you must see what you got.  Recognition is about what, who, when and where you, give your power. Identify and embrace the gifts and talents you possess. Don't wait on the world to acknowledge these attributes. 

We need to first Empower ourselves.  Becoming empowered is a process. It has to be developed gradually.  It has to be practiced. We have to make efforts to achieve it. There are several formulas for self- empowerment.  In them there are four (4) easy steps through which we can self empowered. These are ......KNOW YOURSELF ....... LOVE YOURSELF....BE YOURSELF......SHARE YOURSELF.

"Self Empowerment" will make us empowered and we would be able to help in empowering others and making a better life for us as well as those associated with us. In our real life , we need to realize that only when we empower ourselves, we can empower our family, our children and the society where we live. The need of the hour is that we take charge of our lives and guide the youths to empower themselves so that we can have a better future for upcoming generations.


Friday, 18 August 2023

জয় বাংলা

 


১৯৭১ সালের ঐতিহাসিক মুক্তিযুদ্ধে জয়ী হয়ে জন্ম নিয়েছিল স্বাধীন সার্বভৌম  বাংলাদেশ।  লোকের কাছে আদরের নাম  " জয় বাংলা "। এ ছিল ১৯৫২ র  ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে গড়ে উঠা স্বাধীনতার স্বপ্ন বাস্তবে পরিণত  হয়ারই ঘটনা। তখন থেকেই শুরু হয়েছিল এক নবীন জাতিরাষ্ট্রের আত্ম প্রতিষ্ঠার এক কঠিন সংগ্রাম।  আর  উপলবন্ধুর পথে দীর্ঘকাল  সংগ্রামের পর জন্ম হ'ল আকাঙ্খিত নিজস্ব রাষ্ট্র  বাংলাদেশ। 


সে এক গভীর  আবেগ, যার সঙ্গে জড়িয়ে ছিল  রাগ, ক্ষোভ, উত্তেজনা, আশা, স্বপ্ন  আর এক অদ্ভুত বুকফাটা গর্ব। তাইতো নিজের কাছে প্রশ্ন জাগে আর কোনও দিন  বাঙালি জাতি ঠিক ওই ভাবে উল্লাস করতে পারবে কে ?? এখানে একটা কথা মনে রাখতে হবে যে যাঁরা ১৯৭১ সালের ঐতিহাসিক ঘটনাগুলির ক্রমবিকাশ, বিবর্তন  ও বাংলাদেশের জন্মের অধ্যায় নিজের চোখে দেখেছেন , তাদের অনুভূতি , আর যারা পরবর্তী কালে ওই সব গল্পের কথা পড়েছেন বা শুনেছেন,  তাঁদের অনুভূতি কখনোই এক হতে পারে না।





আমরা যারা প্রত্যক্ষদর্শী, তারা দেখেছি ওপারের বঙ্গভাষীরা কিন্ত প্রথম থেকেই তাদের মতামত আর আপত্তি একেবারে পষ্ট ভাবে তুলে ধরেছিলেন। পাকিস্তানের উদ্ধত প্রেসিডেন্ট জিন্না ২১শে মার্চ ১৯৪৮ এ ঢাকায় এসে পূর্ব পাকিস্তানের সঙখ্যাগরিষ্ট বাঙালিদের যথেষ্ট হুমকির সুরে শাসিয়ে গেলেন যে উর্দুকে তাদের জাতীয় ভাষা হিসেবে মানতেই হবে। কিন্তু এমন গর্জন সত্ত্বেও তিনি তাদের ঘাবরাতে পারেননি। তার হুমকির উপযুক্ত জবাব দিলেন ভাষা আন্দোলনের চার শহীদ ----- আব্দুস সালাম, রফিকুন্দিন আহমেদ, আবুল বরকত আর আব্দুল জব্বার। রক্তে রাঙা একুশে ফেব্রুয়ারি ইতিহাসে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বলে স্বীকৃতি পেল ও অমরত্ব লাভ

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার



 করল।এর জের টেনে প্রায় দুই শতক লড়াই চালালেন ও-পার বাঙলার মানুষ। অবশেষে তাদের অপরিসীম ত্যাগ ও বীরত্বেরই জিতে হল। কয়েক লাখ শহীদের প্রানের বিনিময়ে বাঙালি জাতি পেল এক স্বাধীন দেশ। 

আত্মসমর্পণের দলিলে স্বাক্ষর করছেন দুই সেনা প্রধান




দলিলের বয়ান


সব থেকে বড় কথা, মাতৃভাষা নিয়ে এমন সঙগ্রামের ইতিহাস বিশ্বের ক'টা দেশেরই বা আছে। সারা বিশ্ব দেখলো ভাষার অপরিসীম শক্তি, যা ধর্ম, শ্রেণী ও জাতির ভেদাভেদ কে তুচ্ছ বলে প্রমাণ করল না, কয়েক লাখ মানুষকে অনুপ্রাণিত করল তাদের জীবন বলিদান দিতে। শেখ মুজিবর রহমানের মহান ব্যক্তিত্ব তখন কেবল আকাশছোঁয়াই নয়, তাঁকে একটি বিশাল জাতির মুক্তিদাতা হিসেবে গন্য করা হল।



দখীণ এশিয়া উপমহাদেশে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের জন্মের আখ্যান মোটামুটি সর্বজনস্বীকৃত। মুজিবুরের আওয়ামী লীগ ১৯৭০ এর নির্বাচনে পাকিস্তানের সংসদে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করা সত্ত্বেও তাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করতে অনিচ্ছুক ছিলেন পশ্চিম পাকিস্তানের সামরিক ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ।১৯৭১ সালের মার্চ মাসে শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে মোটামুটি অহিংস আন্দোলন গড়ে উঠেছিল পাকিস্তানি সামরিক আইন কতৃপক্ষের বিরুদ্ধে। এই দেখে পাকিস্তানের সামরিক প্রশাসন ২৬শে মার্চ থেকে শুরু করে দেয় " অপারেশন সার্চ লাইট"। আওয়ামী সমর্থক নির্বিশেষে সন্দেহভাজনদের বাড়ি বাড়ি চর্চাও হয়ে পুরুষদের গণহত্যা এবং নারীদের ধর্ষণ ও হত্যা। মুজিবকে গ্রেপ্তার করে সেনারা নিয়ে যায় পাকিস্তানে। ও দিকে পূর্ব পাকিস্তানে এই হত্যা লীলা চলতে থাকে নয় মাস। সেই সঙ্গে শুরু হয় এক ঐতিহাসিক সশস্ত্র প্রতিরোধ, যা মুক্তিযুদ্ধ নামে পরিচিত। 

মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গবদ্ধ প্রতিরোধ :: সন ১৯৭১ 

ও দিকে কোটিরও অধিক নিরাশ্রয় ও বিপন্ন মানুষ তখন ভারত পেড়িয়ে ভারতে শরণার্থী। তাই পাকিস্তানের এই অভ্যন্তরীন গন্ডগোলে ভারতের জড়িয়ে পড়া ছাড়া গত্যন্তর ছিল না। ৩রা ডিসেম্বর ১৯৭১ থেকে ১৪ দিনের ভারত পাকিস্তানের যুদ্ধ আরম্ভ হল, যার পরিণতি ৯৩০০০ সেনা সমেত ১৬ ডিসেম্বর পূর্ব পাকিস্তানে সেনা প্রধান এ এ কে নিয়াজীর আত্মসমর্পণ। এর পর মুজিবের মুক্তি, এবং ১৯৭২ সালে তাঁর প্রধানমন্ত্রীত্বে বাংলাদেশ সরকার গঠন।


 

শরনার্থী ব্যায়ভার সামলাতে তখন ডাকটিকিট , সিনেমার টিকিট, রেভিনিউ স্ট্যাম্পে সারচার্জ বসালেন ইন্দিরা গান্ধীর সরকার। আজকের অরবিন্দ ভবন অর্থাৎ ৮ নং থিয়েটার রোডের বাড়িটি উঠলো যুদ্ধধ্বস্ত প্রবাসী সরকারের ( মুজিবনগর ) অস্থায়ী শিবির। শেখ মুজিবর রহমান তখন করাচির জেলে বন্দী। কিন্তু মুজিবনগর সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমেদ থাকেন, অফিস করেন থিয়েটার রোডের বাড়িতে। থিয়েটার রোডের বাড়ি থেকেই অস্থায়ী সরকারের সেনাপতি কর্নেল ওসমানী, চিফ অব স্টাফ আব্দুর রব, বিমানবাহিনীর প্রধান গ্রুপ ক্যাপ্টেন খন্দকাররা রণাঙ্গনের ১১টি সেক্টরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন। লুঙ্গি গেঞ্জি পরা ডাল ভাতে






 


বাঙালি থেকে ভারতীয় সেনার নিয়ে রাতারাতি মুক্তযোদ্ধাদেরও বেতারবার্তায় প্রতিনিয়ত প্ররণা জোগাতো মুজিবনগর সরকারই। যুদ্ধক্ষেত্রে মুক্তিবাহিনীর পাশে থাকা ভারতীয় সেনার মতো কলকাতা বা বাংলার আমজনতাও তখন পূর্ব বাংলার পাশে। পাকিস্তান বেতারের অপপ্রচারের মোকাবিলায় আকাশবাণী কলকাতার অধিকর্তা দিলীপ সেনগুপ্তের পরিকল্পনায় হাতিয়ার হল শ্লেষাত্মক রেডিও কার্টুন " কুঠিস্তানের ফেউ "। উপেন তরফদার,  প্রণবেশ সেন, দেবদুলাল বন্দ্যোপাধ্যায়দের সংবাদ অনুষ্ঠান তো ইতিহাসের সাক্ষীই।  স্বাধীনতার লড়াই ঘোষনা করে বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক বক্তৃতার আঁচে গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার,অংশুমান রায়ের রবিবাসরীয় আড্ডাও পাল্টে গেল। বেতার অনুষ্ঠানের জন্য  গৌরিপ্রসন্ন সিগারেটের প্যাকেটের কাগজে খুঁটিয়ে লিখে ফেললেন " শোন এক মুজিবরের থেকে লক্ষ মুজিবরের কন্ঠস্বরের ধ্বনি "। তাতে সুর বসিয়ে গাইলেন অংশুমান।  এপ্রিলে কলকাতায় বাংলাদেশি পতাকা ওড়ানোর দিনটিতে উপস্থিত ছিলেন সুচিত্রা মিত্র,  হেমন্ত মুখোপাধ্যায়। চিন ভক্ত নকশাল ও অবাংলাভাষী মুসলমানদের একাংশের নতুন দেশটি নিয়ে কিছু দ্বিধা ছিল।  তা বলে "জয় বাংলা" বলে হাক দিয়ে সীমান্ত পারের সশস্ত্র বীর যোদ্ধাদের বাংলা জুড়ে অবাধ যাতায়াতের সমস্যা হয়নি। বম্বের ওয়াহিদা রহমান থেকে সপরিবার কৈফি আজমি,  সুনীল দত্ত,  নাস্তিকরা নবজাতক রাষ্ট্রের পাশে দাড়ালো।


১৯৭১ এর ২২শে মে রাত দশটায় ৫৭/৮ বালিগঞ্জ সার্কুলার রোডে আকাশবাণীর দু জন আধিকারিক, ইন্জিনিয়ারের সঙ্গে মুজিবনগরের তথ্য, বেতার, প্রচার আধিকারিক আব্দুল মান্নানের গোপন মিটিং বসেছিল। আকাশবাণীর ক্রেতারা নিজের পরিচয় পুরোটা খোলোসা করেননি। শুধু জানিয়েছিল, ভারত সরকার সীমান্তে ৫০ কিলোওয়াট মিডিয়াম ওয়েভ ট্রান্সমিটার বসিয়েছেন। সেটা কোথায় বসানো, তাও ভারতীয় আধিকারিকরাই জানতেন। মুজিবনগরের প্রতিনিধি সংস্কৃতি কর্মীদের কাজ বেতার অনুষ্ঠান করা। বি এস এফ -এর লোকজনই সেই রেকর্ডিং নিয়ে গিয়ে সম্প্রচারের বন্দোবস্ত করবেন। কবি নজরুলের জন্মদিনেই (২৫শে মে) স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অনুষ্ঠান শুরু। দরজা, জানলার ফাঁকফোকরে কাপড় গোজা অস্থায়ী স্টুডিয়োর রেকর্ডিং। এ শহরেই তখন  জয় বাংলা পত্রিকা বেড়োতে আরম্ভ করলো।





১৯৭২ সালের ১৭ই ডিসেম্বরের আনন্দবাজার  পত্রিকার  প্রথম পাতা। ইন্দিরা-মুজিবের সূত্রে যে অচ্ছেদ্য সম্পর্ক শুরু , বহু ওঠানামা পেরিয়ে আজও তা চলিষ্ঞু।






মুক্তিযুদ্ধ  বনাম  স্বাধীনতা  যুদ্ধ  ::

মুক্তিযুদ্ধ  ** যখন কোন দেশ স্বাধীনতার ঘোষনা দিয়ে সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে শত্রু পক্ষের আত্মসমর্পণের মাধ্যমে স্বাধীনতা লাভ করে তখন সেটা মুক্তিযুদ্ধ। যেমন : বাংলাদেশ। 

স্বাধীনতা যুদ্ধ  ** যখন কোন দেশ স্বাধীনতার ঘোষনা দিয়ে চুক্তির মাধ্যমে স্বাধীনতা লাভ করে সেটা স্বাধীনতার যুদ্ধ।  যেমন : যুক্তরাষ্ট্র। 

পৃথিবীতে ঘোষনা দিয়ে স্বাধীন হওয়ার দেশ মাত্র দুটি। একটি বাংলাদেশ অপরিসীম যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশের বিজয় অর্জন করতে ৯ মাস সময় লেগেছিল।  আমেরিকার লেগেছিল  ৭ বছর। বাংলাদেশ যুদ্ধে পাকিস্তানীদের আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য করা হয়েছিল।  কিন্ত আমেরিকা যুদ্ধ  করলেও ব্রিটিশদের  পরাজিত করে স্বাধীনতা লাভ করতে পারে নাই,  "প্যারিস  চুক্তি" করে তারা বৃটেন থেকে স্বাধীনতা লাভ করে।





বঙ্গবন্ধুর রাজনীতির মূল ভিত্তি ছিল ধর্মনিরপেক্ষতা। বিশ্বে মাথা উচু করে দাঁড়াতে হলে সেই আদর্শের অনুসরন ছাড়া পথ নেই।  বাঙালি জাতির প্রায় পাঁচ হাজার বছরের ইতিহাসে মুক্তিযুদ্ধ সবচেয়ে গৌরবের অধ্যায়। ভাষা আন্দোলনের জমিতে বেড়ে উঠেছে বাঙালি জাতীয়তাবাদ। বাঙালিত্বের চেতনা মূর্ত হয়েছে রবীন্দ্রনাথের গানের ........আমার সোনার বাংলা , আমি তোমায় ভালবাসি......অথবা ...... বাংলার মাটি, বাঙলার জল......অথবা.....সার্থক জনম আমার , জন্মেছি এই দেশে .... ইত্যাদি। বাঙালি জাতীয়তাবাদ জাতিবিদ্বেশ নয়, সম্প্রীতির কথা বলেছে। ছিলো বছর আগে বাংলার কবি চন্ডীদাস লিখেছেন " শুনহ মানুষ ভাই, সবার উপরে মানুষ সত্য  তাহার উপরে নাই। " প্রায় একশো বছর আগে বাংলার বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম লিখেছেন " হিন্দু না ওরা মুসলিম ওই জিঞ্জাসে  কোনজন // কান্ডারী বলো ডুবিছে মানুষ সন্তান মোর মার।" বঙ্গবন্ধুর রাজনীতির মূল ভিত্তি ছিল এই অসাম্প্রদায়িক মানবতাবাদী বাঙালি জাতীয়তাবাদ। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক সংগ্রাম ছিল মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে। ১৯৭১ এর ২৬শে মার্চ আনুষ্ঠানিক ভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই পাকিস্তান সামরিক  জুন্টা বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করেছিল। 



১৯৭২ এর ১০ই জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তিলাভ করে স্বদেশের ফিরে আসেন।  ফেরার পথে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর অনুরোধে কয়েক ঘন্টার জন্য দিল্লিতে যাত্রাবিরতি করেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী তাঁর জন্য বিশাল গনসংবর্ধনার আয়োজন করেন।  এই সভায় বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধে ভারত সরকার,  সশস্ত্র বাহিনী এবং সর্বস্তরের জনগনের অতুলনীয় সহযোগিতার জন্য  গভীর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে বলেছিলেন  " আমাকে বলা হয়েছে ভারতের সঙ্গে আপনার কিসের এত মিল ? আমি বলেছি ভারতের সঙ্গে আমার মিল হচ্ছে নীতির  মিল। আমি বিশ্বাস করি গণতন্ত্র,  সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতায়।  শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীও তাই বিশ্বাস করেন। আমাদের এই মিল হচ্ছে আদর্শের মিল, বিশ্ব শান্তির জন্য। "সদ্য সদ্যস্বাধীন  বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় নীতি সম্পর্কে বঙ্গবন্ধু একই দিনে দেশে ফিরে রমনার বিশাল জনসমক্ষে আবারো  বলেছিলেন " বাংলাদেশ একটি আদর্শ রাষ্ট্র হবে আর তার  ভিত্তি বিশেষ কোনো ধর্মভিত্তিক হবে না। রাষ্ট্রের ভিত্তি হবে গণতন্ত্র,  সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা।





শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে লতা মঙ্গেশকর : ঢাকা : ১৯৭২







৪ই নভেম্বর ১৯৭২ গণপরিষধের অধিবেশনে বাংলাদেশের সংবিধান গৃহীত হয়। ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষনের পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভাষন ৪ই নভেম্বরের।  এই ভাষনে বঙ্গবন্ধুর জীবনের জীবনদর্শন প্রতিফলিত হয়েছে। এই ভাষনেই বঙ্গবন্ধু ' গণতন্ত্র' , 'সমাজতন্ত্র ' ও 'ধর্মনিরপেক্ষতা'র নতুন ব্যাখ্যা দিয়েছেন।  বলছেন...... " ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা নয়। মুসলমানরা তাদের ধর্ম পালন করবে, তাদের বাধা দেওয়ার ক্ষমতা এই রাষ্ট্রে কারো নাই। হিন্দুরা তাদের ধর্ম পালন করবে, কারও বাধা দেবার ক্ষমতা নেই। বৌদ্ধরা তাদের ধর্ম পালন করবে, খ্রিস্টানরা তাদের ধর্ম পালন করবে, তাদের কেউ বাধা দিতে পারবে না। আমাদের শুধু আপত্তি হল এই যে, ধর্মকে কেউ রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে পারবে না। ধর্ম অতি পবিত্র জিনিস।  পবিত্র ধর্মকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা চলবে না। আমি বলবো  সাড়ে সাত কোটি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে যদি গুটিকয়েক লোকের অধিকার হরণ করতে হয়, তা করতেই হবে।"

ধর্মনিরপেক্ষতা'র ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বঙ্গবন্ধু বহুবার বলেছেন....... প্রত্যেক মানুষ নিজ নিজ ধর্ম পালন ও প্রচারের পূর্ণ স্বাধীনতা থাকবে। শুধু রাষ্ট্র ও রাজনীতি ধর্মের ব্যাপারে নিরপেক্ষ থাকবে, কোনও বিশেষ ধর্মকে প্রায় দেবে না।



আমেরিকার তখনকার ঘৃণ্য ভূমিকা আলোচনা না করলেই ভালো। ওঁদের বিদেশমন্ত্রী হেনরি কি কিসিঙ্গার হেয় করে বলেছিলেন.........বাংলাদেশ এক দানপত্র যার চাহিদার কোনও শেষ নেই।  দেশটিকে পাকিস্তান শুধু লুটপাট আর ধ্বংসই করেনি , তার অর্থনীতির মেরুদণ্ড সম্পূর্ণ চার্জ করে গিয়েছিল। বিশাল প্রতিবেশী ভারতের পাশে দেশটিকে কতই না ছোট্ট মনে হত। আজ সেই বাংলাদেশ কত বিষয়ে ভারতের চেয়ে এগিয়ে গিয়েছে। ২০০৭ এ ভারতের তুলনায় বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ছিল  অর্ধেক,  আর ২০২০-২১ এ সেই আয় আমাদের চেয়ে ২৮০ ডলার বেশি। টানা সাত বছর ধরে দক্ষিণ এশিয়ার অন্য সব দেশের চেয়ে বাংলাদেশ বিশ্ব লিঙ্গগত ব্যবধানের সূচকে  (গ্লোবাল জেন্ডার গ্যাপ ইনডেক্স) অনেক এগিয়ে। শেষ হিসেব অনুযায়ী ১৫৬ টি দেশের মধ্যে ভারতের স্থান  লজ্জাদায়ক ১৪০ নম্বরে আর বাংলাদেশ ৬৫তে। এই  নিরীক্ষার বিচার হয় অর্থনীতিতে নারীদের অংশগ্রহণ ও তাদের রাজনৈতিক ক্ষমতা অর্জনের ভিত্তিতে। এর সঙ্গে হিসাব নেওয়া হয় তাঁদের স্বাস্থ্য ও শিক্ষার,  যা নারীর ক্ষমতা অর্জন ও উন্নতির মান চিহ্নিত করে। দেখা যাচ্ছে এর সব কটিতেই ভারত ভয়াবহ ভাবে পিছিয়ে যাচ্ছে।

এত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও বাঙালি কী ভাবে অনেক ক্ষেত্রে উন্নতি করছে ও করে চলেছে, এই পরিসংখ্যানগুলি তার উৎকৃষ্ট প্রমাণ।  ১৯৭১ এর আসল তাৎপর্য শুধু বাঙালির সত্তার জয়ী নয়,  বাঙালির কর্মক্ষমতা ও তাঁরা কি অর্জন করতে পারেন তার এক দৃষ্টান্ত। 

আবেগী বাংলাদেশকে ভরসা দেয় ক্রিকেট। মাঠে সমর্থকদের মুখগুলোই যেন স্বাধীনতার অনুভূতি জাগিয়ে তোলে।







স্বাধীনতার সুবর্ণ পালন করছে বাংলাদেশ। দু'দেশের সম্পর্ক স্থাপনেরও ৫০ বছর এই ২০২২ সাল। ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায় যে '৭১ এর পর থেকে আওয়ামীলীগ যখনই বাংলাদেশে ক্ষমতায় এসেছে, বন্ধুত্ব  বেড়েছে ভারতের সাথে। মধুরতর হয়েছে রসায়ন , কংগ্রেস সরকার ক্ষমতায় থাকার জন্য। এর কূটনৈতিক ব্যাখ্যা..... বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের বন্ধন,  ইন্দিরা গান্ধী ও মুজিবর রহমান যা অচ্ছেদ্য করে গিয়েছেন।  কূটনীতিতে ' স্থায়ী বন্ধু' হয় না, দুটি দেশকে  'স্থায়ী শত্রু দেশে হিসেবে চিহ্নিত করাও মূর্খামী। দু'দেশের মধ্যে " দেনা পাওনা" র  বোঝাপড়া যত ক্ষণ ঠিক থাকবে, এগিয়ে চলবে এই সম্পর্ক।